গর্ভধারণের ৩৫তম সপ্তাহ

৩৫তম সপ্তাহ নিয়ে আপনার যা জানা প্রয়োজন

এসময়ে গর্ভে শিশুটি ‘মাথা নিচে ও পা উপরের দিকে’ দিয়ে থাকে ও ক্রমাগত পা ছোড়াছুড়ি করে, ফলে আপনার বুকে বা পাঁজরে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। তবে যদি ব্যথার তীব্রতা অনেক বেশি হয় বা পাঁজরের নিচেও ব্যথা অনুভূত হয়, তবে আপনার ডাক্তারকে জানান। কারণ এমন ব্যথা কখনো কখনো প্রি-এক্লাম্পসিয়া নামক জটিলতার ও লক্ষণ হতে পারে। 

এছাড়া এসময় পূর্বের সপ্তাহ গুলোর ন্যায় আরো কিছু লক্ষণ থাকতে পারে –

  • গর্ভাশয়ের পেশীগুলোর সংকোচনের ফলে হঠাৎ হঠাৎ পেটে টান পড়ার মত অনুভূতি হওয়া (ব্রাক্সটন-হিক্স কন্ট্রাকশন),
  • ঘুমের সমস্যা হওয়া,
  • স্ট্রেচ মার্কস (পেটের আকার বাড়াতে থাকায় চামড়ায় যে টান পড়ে তার কারণে ফাটা দাগের মত চিহ্ন দেখা দেওয়া),
  • দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া বা রক্ত পড়া,
  • পেটে ব্যথা,
  • পাইলসের সমস্যা দেখা দেওয়া বা হঠাৎ এই সমস্যা বেড়ে যাওয়া,
  • কিছু ক্ষেত্রে নাক থেকে হালকা রক্ত পড়া, 
  • পেট ফাঁপা ও কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া,
  • বদহজম,
  • চাপ দিলে স্তনে ব্যথা অনুভব করা,
  • পায়ে ব্যথা,
  • অল্পতেই গরম লাগা কিংবা সামান্য গরম আবহাওয়াতেই অস্বস্তি বোধ করা বা হাঁসফাঁস করা,
  • মাথা ঘুরানো বা মাথা ব্যথা,
  • হাত-পায়ে পানি আসা বা ফুলে যাওয়া,
  • প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া বা ইনফেকশন,
  • যোনিপথে অর্থাৎ মাসিকের রাস্তায় ইনফেকশন, এবং
  • মুখের বা শরীরের অন্যান্য অংশের চামড়ায় ছোপ ছোপ দাগ পড়া।

কোন লক্ষণগুলো দেখা দেওয়ার পর প্রসববেদনা শুরু হয় জেনে নিন
প্রসববেদনা ও প্রসবের প্রস্তুতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আপনার ডাক্তার বা নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের স্বাস্থ্যকর্মীর সাথে বিস্তারিত আলোচনা করে নিন। কোথায় কিভাবে ডেলিভারী হবে এ ব্যপারে পরিবারের সদস্যদের জানিয়ে রাখুন। প্রসবকালীন প্রয়োজনীয় সব কিছু যেমন পাতলা সুতী কাপড়ে তৈরী ঢিলেঢালা পোষাক, স্বাস্থ্যকর শুকনা খাবার, শিশুকে পরানোর জামা, তার ডায়পার, ইত্যাদি গুছিয়ে রাখুন।

গর্ভের শিশু কীভাবে বড় হচ্ছে

৩৫ তম সপ্তাহে আপনার শিশু লম্বায় প্রায় ৪৬.২ সেন্টিমিটার দীর্ঘ হয় এবং এসময় তার ওজন হয় প্রায় ২.৪ কেজি। 

ইতিমধ্যে শিশুটি আকারে বেশ বড় হয়ে যায়। চামড়ার নিচে মেদ জমে তার শারীরিক কাঠামো ভরাট হয়ে আসে এবং এতে তার শরীরের তাপমাত্রাও বজায় থাকে। আকারে বেশ বড় হয়ে গেলেও সে গর্ভের ভেতরে নিয়মিত এদিক সেদিক নড়াচড়া করতে থাকে। যদি কোন কারণে তার এই নড়াচড়া বন্ধ হয়ে যায়, কমে যায় বা কোন অস্বাভাবিকতা চোখে পড়ে তবে অতি দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হন।