গর্ভধারণের ৩৬তম সপ্তাহ নিয়ে যা জানা প্রয়োজন
প্রসবের সময় ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে এর প্রস্তুতি হিসেবে পেলভিক ফ্লোরের পেশীগুলোগুলো ধীরে ধীরে শিথিল হতে থাকে। ফলে, এসময় কাশি দিলে অথবা জোরে হাসলে হঠাৎ প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে কিছুটা প্রস্রাব বেরিয়ে আসতে পারে৷। এসময় তাই পেলভিক ফ্লোর এক্সারসাইজ গুলো করার পরামর্শ দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, দুই পায়ের মাঝখানে যে পেশীবহুল পর্দার মত অংশটি মূত্রথলী, জরায়ু (পুরুষের প্রোস্টেট) ও বৃহদান্ত্রকে (Large Intestine) সঠিক স্থানে ধরে রাখতে সাহায্য করে, তাকে পেলভিক ফ্লোর বলা হয়।
এছাড়া এসময়ের অন্যান্য লক্ষণগুলো হল –
- গর্ভাশয়ের পেশীগুলোর সংকোচনের ফলে হঠাৎ হঠাৎ পেটে টান পড়ার মত অনুভূতি হওয়া (ব্রাক্সটন-হিক্স কন্ট্রাকসন),
- ঘুমের সমস্যা হওয়া,
- স্ট্রেচ মার্কস (পেটের আকার বাড়াতে থাকায় চামড়ায় যে টান পড়ে তার কারণে ফাটা দাগের মত চিহ্ন দেখা দেওয়া),
- দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া বা রক্ত পড়া,
- পেটে ব্যথা,
- পাইলসের সমস্যা দেখা দেওয়া বা হঠাৎ এই সমস্যা বেড়ে যাওয়া,
- কিছু ক্ষেত্রে নাক থেকে হালকা রক্ত পড়া,
- পেট ফাঁপা ও কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া,
- বদহজম,
- চাপ দিলে স্তনে ব্যথা অনুভব করা,
- পায়ে ব্যথা,
- অল্পতেই গরম লাগা কিংবা সামান্য গরম আবহাওয়াতেই অস্বস্তি বোধ করা বা হাঁসফাঁস করা,
- মাথা ঘুরানো বা মাথা ব্যথা,
- হাত-পায়ে পানি আসা বা ফুলে যাওয়া,
- প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া বা ইনফেকশন,
- যোনিপথে অর্থাৎ মাসিকের রাস্তায় ইনফেকশন, এবং
- মুখের বা শরীরের অন্যান্য অংশের চামড়ায় ছোপ ছোপ দাগ পড়া।
যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে
হিসাব অনুযায়ী এ সপ্তাহে আপনার একটি এন্টিনেটাল চেকআপ বা গর্ভাকালীন সেবা গ্রহণের তারিখ নির্ধারিত হতে পারে। নির্ধারিত দিনে চেকআপ এর জন্য উপস্থিত থাকুন৷
কোন লক্ষণগুলো দেখা দেওয়ার পর প্রসববেদনা শুরু হয় জেনে নিন
প্রসববেদনা ও প্রসবের প্রস্তুতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আপনার ডাক্তার বা নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের স্বাস্থ্যকর্মীর সাথে বিস্তারিত আলোচনা করে নিন। কোথায় কিভাবে ডেলিভারী হবে এ ব্যপারে পরিবারের সদস্যদের জানিয়ে রাখুন। প্রসবকালীন প্রয়োজনীয় সব কিছু যেমন, পাতলা সুতী কাপড়ে তৈরী ঢিলেঢালা পোষাক, স্বাস্থ্যকর শুকনা খাবার, শিশুকে পরানোর জামা, তার ডায়পার ইত্যাদি গুছিয়ে রাখুন।
গর্ভের শিশু কীভাবে বড় হচ্ছে
৩৬ তম সপ্তাহে আপনার শিশু লম্বায় প্রায় ৪৭.৪ সেন্টিমিটার দীর্ঘ হয় এবং এসময় তার ওজন হয় প্রায় ২.৬ কেজি।
ইতিমধ্যেই শিশুটির ফুসফুস পুরোপুরি তৈরি হয়ে যায়৷ শিশুটি এখন পরিবেশের বাতাসে স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে সক্ষম। এছাড়া এসময় তার পরিপাকতন্ত্রও পুরোপুরিভাবে তৈরি হয়ে যায়। ৩৬ সপ্তাহ বা এরপরে জন্মগ্রহণ করলে, সে স্বাভাবিকভাবে খাবার হজম করতে সক্ষম হবে।