বেশিরভাগ নারীর ক্ষেত্রেই গর্ভাবস্থায় বুক জ্বালাপোড়া ও বদহজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।[১] এটি সাধারণত দুশ্চিন্তার বিষয় নয়। গর্ভাবস্থায় সুস্থ জীবনধারা এবং কিছু ঘরোয়া সমাধান অনুসরণ করলে এসব সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
গর্ভাবস্থায় বুক জ্বালাপোড়ার লক্ষণ
গর্ভাবস্থায় বুক জ্বালাপোড়ার মতো হজমের সমস্যা হলে সাধারণত নিচের লক্ষণগুলো দেখা যায়—
- বুকের মাঝখানে জ্বালাপোড়া অথবা ব্যথা হওয়া
- মুখে টক স্বাদ আসা
- পেট ফাঁপা অথবা ভরা ভরা লাগা
- বমি বমি লাগা ও বমি
- গলা জ্বলা ও গলায় খাবার উঠে আসা
সাধারণত খাবার খাওয়া অথবা পানীয় পান করার পর পরই কিংবা খাওয়ার অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে শুয়ে পড়লে অ্যাসিডিটির লক্ষণগুলো দেখা যায়। তবে কখনো কখনো খাবার খাওয়ার বেশ কিছুক্ষণ পরেও বুক জ্বালাপোড়া শুরু হতে পারে। বুক জ্বালাপোড়ার অনুভূতি কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘন্টা পর্যন্ত থাকতে পারে।
গর্ভাবস্থায় কখন থেকে বুক জ্বালাপোড়া শুরু হয়?
বুক জ্বালাপোড়া অথবা বদহজমের সমস্যা গর্ভাবস্থার যেকোনো সময়েই শুরু হতে পারে। তবে সাধারণত গর্ভকাল বাড়ার সাথে সাথে অ্যাসিডিটির সমস্যা বাড়তে থাকে। বিশেষ করে গর্ভধারণের ২৭তম সপ্তাহের পর থেকে গর্ভবতী নারীদের এই সমস্যায় বেশি ভুগতে দেখা যায়।
গর্ভাবস্থায় কেন বুক জ্বালাপোড়া হয়?
গর্ভাবস্থায় শরীরে বিশেষ কিছু হরমোন (যেমন: প্রোজেস্টেরন) তুলনামূলক বেশি পরিমাণে তৈরি হয়। এ হরমোনগুলোর প্রভাবে পাকস্থলী থেকে এসিড গলায় উঠে আসতে পারে। এমন হলে বুক জ্বালাপোড়ার অনুভূতি হয়। হরমোনগুলোর প্রভাবে খাবার হজম হতেও বেশি সময় লাগে। এ কারণে হজমের সমস্যাও হতে পারে।
আপনি জানেন কি?
শুনতে অদ্ভুত লাগলেও একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, গর্ভাবস্থায় যেসব নারীরা বেশি বুক জ্বালাপোড়া অনুভব করেছেন, তাদের গর্ভের শিশুর তুলনামূলকভাবে বেশি চুল নিয়ে জন্মেছে। এখান থেকে ধারণা করা হয়, গর্ভাবস্থায় যেসব হরমোনের জন্য বুক জ্বালাপোড়া বেড়ে যায়, সেসব হরমোন গর্ভের শিশুর চুল বড় হওয়ার পেছনে ভূমিকা রাখতে পারে। তবে এই বিষয়ে এখনো কোনো নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়া যায়নি।[২]
এ ছাড়া গর্ভে বাড়ন্ত শিশুর জন্য পাকস্থলীতে চাপ লাগার কারণে এসিড ওপরে উঠে আসে বলে ধারণা করা হয়।[৩] এটি বুক জ্বালাপোড়া বাড়িয়ে দিতে পারে সেই সাথে বাড়ন্ত শিশু পরিপাক নালীর ওপরে চাপ বাড়িয়ে হজমের গতি কমিয়ে দিতে পারে।[৪][৫]
এসব কারণের পাশাপাশি সাধারণ অবস্থায় যেসব কারণে বুক জ্বালাপোড়া হয়ে থাকে, সেসব কারণেও গর্ভবতী নারীদের বুক জ্বালাপোড়া হতে পারে। যেমন—
- প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত খাবার খেলে
- ঝাল অথবা তৈলাক্ত খাবার খেলে
- টকজাতীয় খাবার খেলে। যেমন: টমেটো
- চকলেট খেলে এবং কফি পান করলে
- অতিরিক্ত ওজন হলে[৬]
- মানসিক চাপ বা স্ট্রেসে থাকলে
- গর্ভাবস্থার আগে থেকেই বদহজমের সমস্যা থাকলে
- কোনো ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলে
- পূর্বের কোনো গর্ভকালীন সময়ে বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা থাকলে
বিশেষ দ্রষ্টব্য
আপনার যদি মনে হয় যে ডাক্তারের পরামর্শ মেনে নিয়মিত কোনো ঔষধ খাওয়ার কারণে আপনার বুক জ্বালাপোড়া হচ্ছে, তাহলে দ্রুত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন। ডাক্তার সেটির বিকল্প হিসেবে অন্য কোনো ঔষধ সেবনের পরামর্শ দিতে পারেন।
তবে কখনোই নিজে নিজে কোনো ঔষধ পরিবর্তন করার অথবা বাদ দেওয়ার চেষ্টা করবেন না।
গর্ভাবস্থায় বুক জ্বালাপোড়ার ঘরোয়া সমাধান
জীবনধারা ও খাবার-দাবারে কিছু পরিবর্তন আনলে বুক জ্বালাপোড়ার উপসর্গ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা যেতে পারে। এজন্য—
১. অল্প অল্প করে বারবার খাওয়ার চেষ্টা করুন
গর্ভাবস্থায় কখনো কখনো কোনো খাবার একবারে অনেক বেশি পরিমাণে খেতে ইচ্ছা করতে পারে। কিন্তু ভরপেট খেলে বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা বেশি হতে পারে। এজন্য দৈনিক তিনবেলা খাওয়ার পরিবর্তে সারাদিনের খাবারগুলোকে ভাগ করে অল্প অল্প করে ছয় বেলা খেতে পারেন।
এতে করে কিছুক্ষণ পর পর খাওয়ার ইচ্ছাও পূরণ হয়, পাশাপাশি অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতাও রোধ করা যায়।
খাবারের পাশাপাশি পানি খাওয়ার ক্ষেত্রেও এই নিয়ম মনে রাখার চেষ্টা করবেন। খাবার খাওয়ার সময়ে পানি বেশি খেলে পেট বেশি ভরে উঠতে পারে। তাই খাওয়ার মাঝে পানি খাওয়ার পরিবর্তে খাবার খাওয়ার কিছুক্ষণ আগে অথবা পরে পানি খাবেন।
একজন সুস্থ-স্বাভাবিক গর্ভবতী নারীর প্রতিদিন গড়ে ২–৩ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন। কাপ কিংবা গ্লাসের হিসাবে আপনাকে সারাদিনে মোট ৮–১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে।[৭] তবে এই বিষয়ে কখনো যদি ডাক্তার কোনো বিশেষ পরামর্শ দিয়ে থাকেন তাহলে সেটিই অনুসরণ করবেন।
২. সবসময় সোজা হয়ে বসে ধীরে ধীরে খাবার খাবেন
খাবার ভালো করে চিবিয়ে খাওয়া হলে পাকস্থলীতে খাবার হজম প্রক্রিয়া কিছুটা সহজ হতে পারে। এ ছাড়াও দ্রুত খাবার খেলে কিংবা খাওয়ার সময়ে কথা বললে খাবারের সাথে বাতাস মুখে ঢুকে যায়। এতে পেটে বেশি গ্যাস তৈরি হয়ে পেট ফাঁপা লাগতে পারে। এজন্য সময় নিয়ে মনোযোগ সহকারে খাবার ধীরে চিবিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে করে বদহজম ও অ্যাসিডিটির সমস্যা কিছুটা কমতে পারে।
পাশাপাশি খাওয়ার সময়ে সোজা হয়ে বসে খাবেন। এতে পাকস্থলীর ওপর থেকে চাপ কমবে। এটি বদহজম প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে।
৩. ঘুমানোর ঠিক আগে খাবার খাবেন না
রাতে ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত তিন ঘন্টা আগে রাতের খাবার খেয়ে ফেলার চেষ্টা করুন।[৮] এ ছাড়াও দিনের বেলা খাওয়ার পরও তিন ঘন্টার মধ্যে শুয়ে পড়বেন না। খাওয়ার পর পরই শুয়ে পড়লে বুক জ্বালাপোড়া বেড়ে যেতে পারে।
৪. নির্দিষ্ট কিছু খাবার এড়িয়ে চলুন
যে ধরনের খাবার খেলে অথবা পানীয় পান করলে আপনার বুক জ্বালাপোড়া বেশি হয়, সেগুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। এমন খাবার হতে পারে কফি, চকলেট, লেবুজাতীয় ফল, টমেটো, কোমল পানীয়, তৈলাক্ত, ঝাল অথবা ঝাঁঝালো খাবার।
৫. ঘুমানোর সময়ে মাথার অবস্থান ঠিক রাখুন
ঘুমানোর সময় মাথা ও ঘাড় শরীর থেকে ছয়–আট ইঞ্চি উঁচুতে রেখে ঘুমানোর চেষ্টা করুন। এজন্য তোষক অথবা খাটের নিচে শক্ত কোনো কাঠের ব্লক অথবা অন্য কিছু দিয়ে উঁচু করে নিয়ে সেদিকটাতে মাথা ও ঘাড় রেখে ঘুমাতে পারেন। এতে পাকস্থলীর এসিড ওপরে ওঠার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়।[৯]
তবে মাথার নিচে বেশি বালিশ দিয়ে ঘুমাবেন না। এটি বুক জ্বালাপোড়া কমাতে তেমন সাহায্য করে না।[১০]
৬. ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন
স্বাভাবিক ওজনের একজন নারীর ওজন গর্ভাবস্থায় ১১.৫ কেজি–১৬ কেজি পর্যন্ত বাড়লে সেটিকে স্বাভাবিক ধরা হয়। তাই গর্ভকালীন সময়ে আপনার ওজন যাতে এর চেয়ে বেশি না বাড়ে, সেদিকে লক্ষ রাখুন। অতিরিক্ত ওজনের কারণে বুক জ্বালাপোড়া হতে পারে।[১১]
৭. ঢিলেঢালা জামাকাপড় বাছাই করুন
গর্ভকালীন সময়ে পরার জন্য ঢিলেঢালা কাপড় বেছে নিন। আঁটসাঁট জামা পরলে পেটে চাপ পড়ে বুক জ্বালাপোড়া বেশি অনুভূত হতে পারে।
৮. চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করুন
স্ট্রেস বা মানসিক চাপের কারণেও বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যাও তৈরি হতে পারে।[১২] এজন্য চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করুন। গর্ভাবস্থায় করা যায় এমন কিছু যোগব্যায়াম ও মেডিটেশনের মাধ্যমে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করতে পারেন।
নিঃশ্বাসের ব্যায়াম
উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা দূর করার জন্য আপনি একটি সহজ ব্যায়াম করতে পারেন। এই ব্যায়ামটি শুয়ে, চেয়ারে বসে হেলান দিয়ে অথবা দাঁড়িয়ে করা যেতে পারে। আপনি যদি আঁটসাঁট কাপড় পরে থাকেন, তা বদলে ঢিলেঢালা কাপড় পরে নিতে পারেন।
- ব্যায়ামের শুরুতেই রিল্যাক্সড হয়ে একটি আরামদায়ক অবস্থান গ্রহণ করুন—
- শুয়ে থাকলে: পা সোজা করে রাখুন অথবা এমনভাবে হাঁটু ভাঁজ করে নিন যাতে পায়ের পাতা বিছানার সাথে লেগে থাকে। দুই হাত দুই পাশে লম্বা করে রাখুন। হাতের তালু ওপরের দিকে, অর্থাৎ ঘরের ছাদের দিকে মুখ করে রাখুন।
- চেয়ারে বসে থাকলে: দুই হাত দুই পাশের হাতলে রাখুন। পা দুটো মেঝেতে সমান ভাবে ফেলুন। দুই পায়ের মাঝে এক কোমর সমান ফাঁকা জায়গা রাখুন।
- দাঁড়িয়ে থাকলে: পা দুটো সমান ভাবে মেঝেতে ফেলুন এবং দুই পায়ের মাঝে এক কোমর সমান ফাঁকা জায়গা রাখুন।
- এবার লম্বা করে শ্বাস নিন। খুব বেশি জোর দিয়ে চেষ্টা না করে আরামদায়কভাবে পেট পর্যন্ত গভীর শ্বাস নিন। প্রতিবার শ্বাস নেওয়ার সময়ে মনে মনে এক থেকে পাঁচ পর্যন্ত ধীরে ধীরে গুনবেন। তবে শুরুতেই পাঁচ পর্যন্ত গুনে লম্বা শ্বাস নিতে কষ্ট হতে পারে, সেক্ষেত্রে যতটুকু সম্ভব হয় ততটুকু নিন।
- তারপর শ্বাস ধরে না রেখে আলতো করে ছেড়ে দিন। আবারও মনে মনে এক থেকে পাঁচ পর্যন্ত গুনতে চেষ্টা করতে পারেন। চেষ্টা করবেন শ্বাস নেওয়ার সময়ে নাক দিয়ে শ্বাস নিতে এবং মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়তে।
- নিয়মিত ব্যবধানে এভাবে শ্বাস নিতে থাকুন।
তিন থেকে পাঁচ মিনিট পর্যন্ত এই ব্যায়ামটি করতে পারেন।
৯. সিগারেট ও মদ বর্জন করুন
যদি আপনি মদ অথবা সিগারেটে আসক্ত থাকেন, তাহলে এসবের অভ্যাস যত দ্রুত সম্ভব ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করুন। এগুলোর বহু ক্ষতিকর প্রভাবের একটি হচ্ছে বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা সৃষ্টি করা। তাছাড়া মদ ও সিগারেট গর্ভের শিশুর মারাত্মক ক্ষতি করে। তাই যত দ্রুত সম্ভব এগুলো ছেড়ে দিন।
১০. চুইং গাম চিবানো এড়িয়ে চলুন
চুইং গাম চিবালে পেটে বাতাস ঢোকার সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে, যা থেকে পেট ফাঁপা ও হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।[১৩] তাই চুইং গাম খাওয়া এড়িয়ে চলবেন।
গর্ভাবস্থায় বুক জ্বালাপোড়ার ঔষধ
সাধারণত ঘরোয়া সমাধানগুলো সঠিকভাবে মেনে চললে বুক জ্বালাপোড়া ও বদহজমের সমস্যা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। তবে এরপরও লক্ষণগুলো না কমলে ঔষধ খেতে পারেন।
- প্রথমে অ্যান্টাসিড অথবা অ্যালজিনেট জাতীয় ঔষধ সেবন করতে পারেন। এই ধরনের ঔষধ সাধারণত বুক জ্বালাপোড়ার লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার পরে সেবনের পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে কখনো কখনো ডাক্তার আপনাকে খাওয়ার আগে অথবা ঘুমাতে যাওয়ার আগে এসব ঔষধ সেবনের পরামর্শ দিতে পারেন।
- যদি অ্যান্টাসিড অথবা অ্যালজিনেট সেবনের পরেও লক্ষণের কোনো উন্নতি না হয়, তাহলে এগুলোর পরিবর্তে ওমিপ্রাজল খেয়ে দেখতে পারেন।[১৪]
আপনার যদি আয়রন ট্যাবলেট ও অ্যান্টাসিড—দুটো ঔষধই সেবনের প্রয়োজন হয়, তাহলে ঔষধ দুটো আলাদা সময়ে সেবন করবেন। একই সময়ে সেবন করলে অ্যান্টাসিড শরীরে আয়রন শোষণ কমিয়ে ফেলতে পারে।[১৫] তাই অ্যান্টাসিড খাওয়ার অন্তত ১ ঘণ্টা আগে অথবা ২ ঘণ্টা পরে আয়রন ট্যাবলেট খাবেন।
উল্লেখ্য, অ্যান্টাসিড, অ্যালজিনেট ও ওমিপ্রাজল—এগুলো সবই ‘ওভার দা কাউন্টার’ ঔষধ। ওভার দা কাউন্টার ঔষধগুলো ফার্মেসি থেকে কিনে সাথে থাকা নির্দেশিকা অনুযায়ী সেবন করা নিরাপদ। এই বিষয়ে আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিন।
গর্ভাবস্থায় সাধারণত অ্যান্টাসিড জাতীয় ঔষধ সেবন করা নিরাপদ৷ তবে কিছু অ্যান্টাসিড জাতীয় ঔষধ গর্ভের শিশুর ক্ষতি সাধন করতে পারে। গর্ভকালীন সময়ে এইসব নির্দিষ্ট কিছু অ্যান্টাসিড জাতীয় ঔষধ সেবন করা থেকে বিরত থাকবেন। যেমন—
- বাইকার্বনেটযুক্ত অ্যান্টাসিড: গর্ভকালীন সময়ে বাইকার্বনেটযুক্ত অ্যান্টাসিড (যেমন: সোডিয়াম বাইকার্বনেট) সেবন করলে কিছু ক্ষেত্রে মা ও শিশুর শরীরে অতিরিক্ত পানি জমতে পারে। তাই এগুলো এড়িয়ে চলাই শ্রেয়।[১৬]
- ম্যাগনেশিয়াম ট্রাইসিলিকেটযুক্ত অ্যান্টাসিড: গর্ভাবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে এবং উচ্চ মাত্রায় ম্যাগনেশিয়াম ট্রাইসিলিকেটযুক্ত অ্যান্টাসিড সেবন করলে গর্ভের শিশুর শ্বাসকষ্ট ও কিডনিতে সমস্যা হতে পারে।[১৭]
কখন ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন?
নিচের কোনো লক্ষণ থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে—
- খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারা পরিবর্তনের পরেও উপকার না হলে
- খাবার খেতে সমস্যা হলে অথবা খাওয়ার পরে বমি হয়ে গেলে
- পেট ব্যথা হলে
- বারবার বমি হলে
- বমিতে টকটকে লাল রক্ত অথবা কফির দানার মতো কিছু দেখা গেলে
- পায়খানা কালো হলে
- খাবার গিলতে সমস্যা অথবা গলায় আটকে যাচ্ছে মনে হলে
- কোনো চেষ্টা ছাড়াই ওজন কমে গেলে
- তীব্র বুক জ্বালাপোড়া অথবা বুক ব্যথা হলে
- বারবার বদহজম হলে
- বুক জ্বালাপোড়ার সাথে জ্বর অথবা মাথাব্যথা থাকলে
পড়ুন: গর্ভাবস্থায় পেট ব্যথা
সাধারণ জিজ্ঞাসা
গর্ভাবস্থার কারণে তৈরি হওয়া বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা সাধারণত শিশুর জন্মের পরেই চলে যায়। তবে অন্যান্য কারণে এই সমস্যা হলে নির্দিষ্ট কারণটি খুঁজে বের করে সঠিক চিকিৎসা করাতে হবে।