গর্ভাবস্থায় পেট ফাঁপা লাগা, পেট ভরা ভরা লাগা কিংবা পেটে গ্যাস জমেছে বলে মনে হওয়া একটি পরিচিত সমস্যা। সাধারণত গর্ভধারণের শুরুর দিকের সময়টায় এই সমস্যা দেখা দেয়। এমনকি সন্তান প্রসবের কয়েক সপ্তাহ পর পর্যন্তও পেট ফাঁপার সমস্যা থাকতে পারে।
পেট ফাঁপা কেন হয় এবং এটি ঘরে বসেই কীভাবে নিরাময় করবেন—এ নিয়ে এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে।
গর্ভাবস্থায় পেট ফাঁপা কেন হয়?
গর্ভধারণের ফলে আপনার দেহে কিছু বিশেষ হরমোনের পরিমাণ অনেকখানি বেড়ে যায়। এমন একটি হরমোন হলো প্রোজেস্টেরন। এই হরমোনের প্রভাবে খাবার হজমের সাথে জড়িত পেশিগুলো কিছুটা শিথিল হয়ে আসে এবং হজমের গতি কমে যায়।[১] এতে করে আপনার পেটে গ্যাস তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে এবং পেট ফাঁপা লাগে। অনেকের ক্ষেত্রে এই হরমোনের প্রভাবে বুক জ্বালাপোড়া ও কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয় এবং সেখান থেকে পেট ফাঁপা লাগে।
এ ছাড়াও গর্ভের সন্তান বড় হতে থাকলে পরিপাক নালীর ওপর চাপ বাড়তে থাকে। চাপ বাড়ার কারণে হজমের গতি কমে আসতে পারে এবং পেট ফাঁপার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।[২]
উল্লেখ্য, স্বাভাবিক অবস্থায় পেট ফাঁপার কারণগুলোও এসময় আপনার পেট ফাঁপা লাগার পেছনে দায়ী থাকতে পারে। যেমন: ঠিকমতো চিবিয়ে চিবিয়ে খাবার না খাওয়া, খাওয়ার সময়ে কথা বলার কারণে পেটে বাতাস ঢোকা এবং যেসব খাবারে গ্যাস হয় সেগুলো খাওয়া।
তা ছাড়া আগে থেকেই ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম কিংবা সিলিয়াক ডিজিজের মতো হজম-সংক্রান্ত রোগ থাকলে গর্ভাবস্থায় পেট ফাঁপা লাগতে পারে।
গ্যাস নাকি প্রসববেদনা?
গর্ভকালের শেষের দিকে পেটের ব্যথা গ্যাস থেকে হচ্ছে না কি প্রসববেদনা শুরু হয়েছে—এ নিয়ে অনেক সময় দ্বিধা তৈরি হতে পারে। দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য করার সহজ উপায় হলো ব্যথার সময়কাল লক্ষ করা।
যদি ব্যথা অনিয়মিতভাবে যেকোনো সময় হয় এবং একটানা অনেকক্ষণ থাকে তাহলে সেটা পেট ফাঁপার ব্যথা। অপরদিকে প্রসববেদনা কিছু সময়ের জন্য হয়ে চলে যাবে এবং নিয়মিত সময় পর পর ব্যথা হবে।
ব্যথার ধরন লক্ষ্য করলেও একটা ধারণা পাওয়া যায়। পেট ফাঁপার ব্যথা হবে বদহজমের অনুভূতির মতো আর প্রসববেদনা মাসিকের ব্যথার মতো।
গর্ভাবস্থায় পেট ফাঁপা কমানোর উপায়
গর্ভকালীন সময়ে অল্প মাত্রায় পেট ফেঁপে যাওয়া সাধারণত বড় রকমের কোনো সমস্যা সৃষ্টি করে না। তবে এটা কমানোর জন্য বেশ কিছু উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে—
১. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে পানি ও আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া
গর্ভাবস্থায় অনেকেই কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগে। কোষ্ঠকাঠিন্য গর্ভাবস্থায় পেটে গ্যাস জমার অন্যতম কারণ।[৩] কোষ্ঠকাঠিন্য হলে পরিপাক নালীতে গ্যাস জমে পেট ফেঁপে যেতে পারে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে প্রচুর পানি পান করা এবং আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ।
একজন সুস্থ নারীর গর্ভাবস্থায় দৈনিক গড়ে ২–৩ লিটার বা ৮–১২ গ্লাস পানি পান করা উচিত। বোতল অথবা স্ট্র দিয়ে পানি না খেয়ে কাপ অথবা গ্লাস দিয়ে পানি পান করবেন। কারণ বোতল অথবা স্ট্র দিয়ে পেটে বেশি বাতাস ঢোকার সম্ভাবনা রয়েছে। পেটে বেশি বেশি বাতাস ঢোকার ফলেও পেট ফাঁপা হয়ে থাকে।
আঁশযুক্ত খাবার খেলে আপনি কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে আনতে পারবেন। এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে সবুজ শাক-সবজি, মিষ্টিকুমড়া, গাজর, কলা ও আঙুর।
খাবারের তালিকায় ফাইবারের পরিমাণ আস্তে আস্তে বাড়াবেন। একেবারে অনেক বেশি আঁশযুক্ত খাবার খাবেন না। কারণ আঁশযুক্ত খাবার হজম হতে একটু বেশি সময় লাগে। খাবার বেশি সময় ধরে পরিপাক নালীতে থাকলে পেট ফাঁপার সমস্যা হতে পারে।
আঁশযুক্ত খাবার খাওয়ার পাশাপাশি দিনে অন্তত ২ লিটার পানি পান করা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
বিশেষ তথ্য
গর্ভকালীন সময়ে কিছু বাড়তি ভিটামিন ও মিনারেল (যেমন: আয়রন) খাওয়ার কারণেও কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। তবে এজন্য আয়রন ট্যাবলেট সেবন বাদ দেওয়া যাবে না। বরং আয়রন ট্যাবলেট সেবনের পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্য সমাধানে প্রচুর পরিমাণে পানি ও শাকসবজি খাওয়ার চেষ্টা করবেন৷ প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন।
২. যেসব খাবারে গ্যাস হয় সেগুলো এড়িয়ে চলা
যেসব খাবারে আপনার গ্যাস হওয়ার প্রবণতা রয়েছে সেগুলো এই সময়ে না খাওয়াই উত্তম। একেকজনের ক্ষেত্রে একেক ধরনের খাবার খাওয়ার পরে পেটে গ্যাস হতে পারে। তাই আপনার কোন খাবারে পেট ফেঁপে যাচ্ছে সেটি নিবিড়ভাবে লক্ষ করে সেগুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।
কিছু খাবার তুলনামূলকভাবে বেশি গ্যাস তৈরি করে। এই তালিকায় রয়েছে—
- আপেল
- নাশপাতি
- আম
- পেঁয়াজ
- ফুলকপি, বাঁধাকপি ও ব্রকলি
- বিভিন্ন ধরনের ডাল
- শিম, মটরশুঁটি
- চা-কফি
- ঝাল-মসলাযুক্ত খাবার
- গোটা শস্যজাত ও গমজাত খাবার
- তেল-চর্বিযুক্ত খাবার যা হজম হতে বেশি সময় লাগে
- সরবিটল অথবা ম্যানিটল (চিনির বিকল্পে ব্যবহৃত কৃত্রিম মিষ্টি, অর্থাৎ আর্টিফিশিয়াল সুইটেনার)
- সফট ড্রিংক। যেমন: পেপসি, ফানটা ও কোকাকোলা
আপনার যদি গর্ভধারণের আগে থেকেই দুধ পান করার কারণে পেট ফাঁপাসহ হজম সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে গর্ভাবস্থায় দুধ পানের পরিমাণ বাড়িয়ে দিলে সমস্যাগুলোও বেড়ে যেতে পারে।[৪]
৩. পেটে বাতাস ঢোকা কমাতে ধীরে-সুস্থে খাওয়া
খুব দ্রুত খাবার খেলে খাবারের সাথে বেশি পরিমাণে বাতাস পেটে চলে যায়। সেই সাথে খাবার ঠিকমতো না চিবিয়ে গিলে ফেললে তা হজম হতে বেশি সময় নেয় এবং গ্যাসও বেশি তৈরি করে। এজন্য—
ধীরে-সুস্থে খান: এতে খাবারের সাথে বাতাস গিলে ফেলার পরিমাণ কমে আসে এবং পেটে বাতাস জমে পেট ফাঁপা হওয়ার সম্ভাবনাও কিছুটা কমে যায়। পানি পান করার সময়েও অল্প করে পানি মুখে নিয়ে ঢোক গিলবেন। একনাগাড়ে ঢকঢক করে পানি খাবেন না।
মুখ বন্ধ করে খান: খাবার খাওয়ার সময়ে মুখ বন্ধ করে ভালো মতো চিবিয়ে খাবেন। এতে করে বাতাস গিলে ফেলার সম্ভাবনাও কমবে এবং হজমেও উপকার হতে পারে। এ ছাড়া খাবার খাওয়ার সময়ে কথা বলা থেকে বিরত থাকলেও খাবারের সাথে বাতাস গিলে ফেলার পরিমাণ কমাতে পারবেন।
ধূমপান এড়িয়ে চলুন: ধূমপান করা এবং চুইংগাম চিবানোর সময়েও পেটে বেশি বাতাস ঢোকার সম্ভাবনা থাকে। তাই এগুলো থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করুন। এ ছাড়া ধূমপান করলে গর্ভাবস্থায় নানান জটিলতার সম্ভাবনাও বাড়ে।
৪. শরীর সচল রেখে হজমে সহায়তা করা
ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরকে সচল রাখা হলে হজম প্রক্রিয়া সহজ হয়। এতে পেট ফাঁপা কমে আসে এবং যতটুকু বায়ু স্বাভাবিকভাবে তৈরি হয় তা জমে না থেকে বের হয়ে যায়।[৫] গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন অল্প সময়ের জন্য হাঁটা একটি মানানসই হালকা ব্যায়াম হতে পারে।
পাশাপাশি খাওয়া শেষ হওয়ার সাথে সাথে বিছানায় শুয়ে না পড়ে অল্প কিছুক্ষণ হাঁটার অভ্যাস করার চেষ্টা করতে পারেন।
৫. একেবারে বেশি না খেয়ে অল্প অল্প করে খাওয়া
আমরা সাধারণত সারাদিনে তিন বেলা খাবার খেয়ে থাকি। তাই অনেকসময় একবারে বেশি খেয়ে ফেলার প্রবণতা দেখা যায়। এটি এড়াতে সারাদিনের খাবারকে অল্প অল্প করে ছয়টি ভাগে ভাগ করে নিতে পারেন।
উল্লেখ্য, এক বার খাওয়ার পর থেকে পরবর্তী খাবার খাওয়ার সময়ের ব্যবধান যেন খুব বেশি না হয়—সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। চাইলে তিন বেলা পরিমিত পরিমাণে খাওয়ার পাশাপাশি কয়েকবার হালকা নাস্তা খাওয়া যেতে পারে। নাস্তা হিসেবে শসা, টমেটো অথবা একটি ফল বেছে নিতে পারেন।
এ ছাড়া রাতের খাবার একটু আগে আগেই খেয়ে নিবেন। রাতে খাওয়ার কমপক্ষে তিন ঘন্টা পরে ঘুমাতে যাওয়ার চেষ্টা করবেন। এটি পেট ফাঁপাসহ হজমের সমস্যাগুলো কমাতে সাহায্য করতে পারে।
৬. দুশ্চিন্তামুক্ত থাকা
বিভিন্ন দুশ্চিন্তা নিয়ে খাবার খাওয়ার সময়ে অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে। যার ফলে দ্রুত খাবার খেতে যেয়ে অতিরিক্ত বাতাস খাবারের সাথে পেটে চলে গিয়ে পেট ফাঁপার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা দূর করার জন্য আপনি একটি সহজ ব্যায়াম করতে পারেন। এই ব্যায়ামটি শুয়ে, চেয়ারে বসে হেলান দিয়ে অথবা দাঁড়িয়ে করা যেতে পারে। আপনি যদি আঁটসাঁট কাপড় পরে থাকেন, তা বদলে ঢিলেঢালা কাপড় পরে নিতে পারেন।
- ব্যায়ামের শুরুতেই রিল্যাক্সড হয়ে একটি আরামদায়ক অবস্থান গ্রহণ করুন—
- শুয়ে থাকলে: পা সোজা করে রাখুন অথবা এমনভাবে হাঁটু ভাঁজ করে নিন যাতে পায়ের পাতা বিছানার সাথে লেগে থাকে। দুই হাত দুই পাশে লম্বা করে রাখুন। হাতের তালু ওপরের দিকে, অর্থাৎ ঘরের ছাদের দিকে মুখ করে রাখুন।
- চেয়ারে বসে থাকলে: দুই হাত দুই পাশের হাতলে রাখুন। পা দুটো মেঝেতে সমান ভাবে ফেলুন। দুই পায়ের মাঝে এক কোমর সমান ফাঁকা জায়গা রাখুন।
- দাঁড়িয়ে থাকলে: পা দুটো সমান ভাবে মেঝেতে ফেলুন এবং দুই পায়ের মাঝে এক কোমর সমান ফাঁকা জায়গা রাখুন।
- এবার লম্বা করে শ্বাস নিন। খুব বেশি জোর দিয়ে চেষ্টা না করে আরামদায়কভাবে পেট পর্যন্ত গভীর শ্বাস নিন। প্রতিবার শ্বাস নেওয়ার সময়ে মনে মনে এক থেকে পাঁচ পর্যন্ত ধীরে ধীরে গুনবেন। তবে শুরুতেই পাঁচ পর্যন্ত গুনে লম্বা শ্বাস নিতে কষ্ট হতে পারে, সেক্ষেত্রে যতটুকু সম্ভব হয় ততটুকু নিন।
- তারপর শ্বাস ধরে না রেখে আলতো করে ছেড়ে দিন। আবারও মনে মনে এক থেকে পাঁচ পর্যন্ত গুনতে চেষ্টা করতে পারেন। চেষ্টা করবেন শ্বাস নেওয়ার সময়ে নাক দিয়ে শ্বাস নিতে এবং মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়তে।
- নিয়মিত ব্যবধানে এভাবে শ্বাস নিতে থাকুন।
- তিন থেকে পাঁচ মিনিট পর্যন্ত এই ব্যায়ামটি করতে পারেন।
৭. হজম প্রক্রিয়া সহজ করতে প্রোবায়োটিক খাবার খাওয়া
অনেক সময় হজমের সমস্যা হলে পেটে অধিক পরিমাণে গ্যাস জমা হয়। প্রোবায়োটিক খাবার (যেমন: দই) খেলে সেটি হজমে সাহায্য করতে পারে। এতে পেট ফাঁপার সমস্যা থেকে কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যেতে পারে।[৬]
৮. আদা, পুদিনা অথবা লেবুযুক্ত পানীয় পান করা
পেট ফাঁপার সমস্যা হলে অল্প পরিমাণে পুদিনা চা, লেবুর রস মেশানো কুসুম গরম পানি অথবা আদা চা পান করতে পারেন। এসব পান করলেও অনেক সময় উপকার পাওয়া যেতে পারে।[৭][৮]
তবে যেকোনো পানীয় পান করার সময় তাতে ক্যাফেইন আছে কি না সেটি খেয়াল রাখবেন। সাধারণত চা-কফি ও কোকের মতো কোমল পানীয়তে ক্যাফেইন থাকে। গর্ভকালীন সময়ে দৈনিক ২০০ মিলিগ্রামের বেশি ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় অথবা খাবার খেলে গর্ভের শিশুর ওজন কম হওয়া এবং সময়ের আগে জন্মানোসহ নানান ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।[৯][১০]
গর্ভাবস্থায় পেট ফাঁপার ঔষধ
সাধারণত ঘরোয়া উপদেশগুলো সঠিকভাবে মেনে চললে পেট ফাঁপার সমস্যা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। তবে এর পরেও পেট ফাঁপা না কমলে এই লক্ষণ উপশমের ঔষধ খেতে পারেন।
- গর্ভাবস্থায় প্রোজেস্টেরন হরমোনের প্রভাবে হজম প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আসে। মূলত একারণেই পেট ফাঁপা হয়। তাই হজমের সমস্যা হলে অ্যান্টাসিড অথবা অ্যালজিনেট জাতীয় ঔষধ খেতে পারেন।
- যদি অ্যান্টাসিড অথবা অ্যালজিনেট সেবনের পরেও লক্ষণের কোনো উন্নতি না হয়, তাহলে এগুলোর পরিবর্তে ওমিপ্রাজল খেয়ে দেখতে পারেন।[১১]
- যদি মনে হয় পেট ফাঁপার সমস্যা হয়তো হজম-সংক্রান্ত নয়, তাহলে সিমেথিকোন নামের একটি ঔষধ খেতে পারেন। এটি পেট ফাঁপা উপশমে সাহায্য করতে পারে।
আয়রন ট্যাবলেট ও অ্যান্টাসিড একই সময়ে খাবেন না। এতে আয়রনের কার্যকারিতা কমে যায়। অ্যান্টাসিড খাওয়ার অন্তত ১ ঘণ্টা আগে অথবা ২ ঘণ্টা পরে আয়রন ট্যাবলেট খাবেন।
উল্লেখ্য, অ্যান্টাসিড, অ্যালজিনেট, ওমিপ্রাজল ও সিমেথিকোন—এগুলো সবই ‘ওভার দা কাউন্টার’ ঔষধ। ওভার দা কাউন্টার ঔষধগুলো ফার্মেসি থেকে কিনে সাথে থাকা নির্দেশিকা অনুযায়ী সেবন করা নিরাপদ। এই বিষয়ে আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিন।
গর্ভাবস্থায় পেট ফাঁপার যেসব ঔষধ এড়িয়ে চলতে হবে: বিসমাথ সাবস্যালিসাইলেট, বাইকার্বনেট অফ সোডা, অ্যাসপিরিন, অ্যাক্টিভেটেড চারকোল, এনেমা ও ক্যাস্টর তেল। এই ঔষধগুলো গর্ভের শিশুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তাই এগুলো গর্ভাবস্থায় এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়।[১২]
কখন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে
যদি পেট ফাঁপার সমস্যা ধীরে ধীরে পেট ব্যথা, পেটে টান ধরা বা খিল ধরার রূপ নেয় তখন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ এরকম ব্যথা গর্ভকালের শুরুতে বদহজম, ইনফেকশন অথবা খাদ্যে বিষক্রিয়া থেকে হতে পারে। এমনকি গর্ভকালের শেষের দিকে প্রি-এক্লাম্পশিয়া নামক মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতা থেকেও হতে পারে।
আবার আপনার পেটে অস্বস্তি ভাবের কারণ আদৌ পেট ফাঁপা না কি অন্য কিছু—এই নিয়ে মনে সন্দেহ থাকলে নিজে নিজে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার চেয়ে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়।
পড়ুন: গর্ভাবস্থায় পেট ব্যথা