গর্ভাবস্থায় স্তনের পরিবর্তন

গর্ভাবস্থায় স্তনে অনেকগুলো পরিবর্তন দেখা যেতে পারে। এসব পরিবর্তন স্বাভাবিক। তাই এসব পরিবর্তন নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তা করবেন না।

গর্ভাবস্থার প্রথমদিকের লক্ষণগুলোর মধ্যে একটি হলো স্তনের পরিবর্তন। শিশু জন্মের পর প্রথম ৬ মাস পর্যন্ত তার যাবতীয় পুষ্টি মায়ের বুকের দুধ থেকে পায়। এজন্য গর্ভাবস্থার শুরু থেকেই আপনার দেহ স্তনকে প্রস্তুত করতে থাকে। ফলে পুরো গর্ভাবস্থা জুড়ে আপনার স্তনে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন হতে থাকে।

গর্ভাবস্থায় স্তনে অনেকগুলো পরিবর্তন দেখা যেতে পারে। তবে সবার ক্ষেত্রেই একই সময়ে এসব পরিবর্তন হবে—বিষয়টি এমন নয়। তাই এসব পরিবর্তন নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তা করবেন না। স্তনে সচরাচর যেসব পরিবর্তন দেখা যায় সেগুলো নিচে তুলে ধরা হয়েছে।

স্তনে ব্যথা বা চাপ চাপ লাগা

গর্ভাবস্থার শুরুর দিকের অন্যতম লক্ষণ হলো স্তনে ব্যথা বা চাপ চাপ লাগা।[১] গর্ভকালীন হরমোনের ওঠানামা আর স্তনের ভেতরের বাড়ন্ত নালীর কারণে এমন হয়। গর্ভাবস্থার চতুর্থ সপ্তাহ থেকেই এমন লক্ষণ দেখা দিতে পারে। তবে অনেকের ক্ষেত্রে মাসিক শুরু হওয়ার কয়েকদিন আগেও স্তনে ব্যথা হতে পারে।[২] একারণে স্তনে ব্যথা বা চাপ চাপ লাগলেও সেটা অনেকে গর্ভধারণের লক্ষণ হিসেবে খেয়াল না-ও করতে পারে।

গর্ভাবস্থায় স্তনের ব্যথা একেকজনের কাছে একেকরকম মনে হতে পারে। যেমন—

  • স্তন ভারী অথবা চাপ চাপ লাগা
  • স্তনে টনটনে ব্যথা বা শিরশির করার মতো অনুভূতি হওয়া[৩]
  • পুরো স্তন জুড়ে ভোঁতা এক ধরনের ব্যথা হতে থাকা
  • তীক্ষ্ণ ব্যথা হওয়া

ব্যথার তীব্রতাও মানুষভেদে কমবেশি হতে পারে। এসময়ে আপনার স্তন হাত দিয়ে স্পর্শ করলে হালকা ব্যথা লাগতে পারে। আবার অনেকের ক্ষেত্রে ব্রা পরলেই তীব্র ব্যথা শুরু হতে পারে। প্রথম ত্রৈমাসিকে স্তনে হালকা অথবা তীব্র ব্যথা হওয়া—দুটোই স্বাভাবিক।

গর্ভাবস্থায় স্তনের এই স্পর্শকাতরতা বা ব্যথার কারণে অনেক দম্পতি এসময়ে সহবাস এড়িয়ে চলেন। তবে স্তনে ব্যথার ধরন ও তীব্রতা যদি আপনার জন্য অস্বস্তির কারণ না হয়, তাহলে গর্ভাবস্থায় সহবাস চালিয়ে যেতে কোনো বাধা নেই।

স্তনের ব্যথা ও চাপ চাপ লাগার অনুভূতি আপনার স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত না করলে এই ব্যথা নিয়ে তেমন দুশ্চিন্তার প্রয়োজন নেই। ব্যথা কমাতে স্তনকে ভালো সাপোর্ট দেয় এমন সঠিক মাপের ব্রা পড়ুন।

প্রয়োজনে প্যারাসিটামল সেবন করতে পারেন। এটি একটি ‘ওভার দা কাউন্টার’ ঔষধ, ফার্মেসি থেকে কিনে সাথে থাকা নির্দেশিকা অনুযায়ী সেবন করা নিরাপদ। এই বিষয়ে আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিন। এ ছাড়া কোনো কারণে ব্যথার ধরন আপনার কাছে অস্বাভাবিক মনে হলে অথবা এই বিষয়ে দুশ্চিন্তা হলে ডাক্তার দেখিয়ে নিন।

স্তনের বোঁটায় পরিবর্তন

গর্ভাবস্থায় সময়ের সাথে সাথে স্তনের বোঁটা আকারে বড় হতে থাকে। পাশাপাশি রঙও গাঢ় হয়। এ ছাড়া স্তনের ব্যথাও বিশেষত স্তনের বোঁটাতেই অনুভূত হয়। গর্ভকালীন হরমোনের প্রভাবে শরীরের অন্যান্য স্থানের মতো স্তনের বোঁটাতেও রক্ত চলাচল বেড়ে যায়। একারণে স্তনের বোঁটায় খোঁচা খোঁচা কিংবা শিরশিরে অনুভূতি হতে পারে।

স্তনের বোঁটার আশেপাশের গাঢ় রঙের জায়গাকে অ্যারিওলা বলে। গর্ভাবস্থায় অ্যারিওলাতে আপনি ছোটো ছোটো দানা বা বিচির মতো লক্ষ করতে পারেন।[৪] এমন দানা বা বিচি দেখা দিলে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। এগুলো মূলত স্তনের বোঁটার চারপাশের এক ধরনের গ্রন্থির ফুলে ওঠা অংশ।

এই গ্রন্থি তেল জাতীয় পদার্থ নিঃসরণ করে স্তনের বোঁটাকে শুষ্কতা থেকে বাঁচায় এবং সুস্থ রাখে৷ তাই এই ধরনের দানা বা বিচি দেখা দিলে তা গলিয়ে ফেলা বা চাপাচাপি করা থেকে বিরত থাকুন।

স্তনের আকার বড় হওয়া

গর্ভাবস্থার প্রথম ত্রৈমাসিকের শেষে অথবা দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের শুরুতে আপনি আপনার স্তনের আকারে পরিবর্তন লক্ষ করবেন। শিশুর জন্মের পরে তার পুষ্টির চাহিদা পূরণের প্রস্তুতি হিসেবে আপনার স্তনে এসময়ে ফ্যাট বা চর্বি জমা হতে থাকে। পাশাপাশি স্তনের ভেতরে থাকা দুধ তৈরির নালিকাগুলো প্রশস্ত হতে থাকে। সব মিলিয়ে গর্ভাবস্থায় স্তনের আকার স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায়।[৫][৬]

স্তনের আকার বাড়ার সাথে সাথে ব্রা এর কাপ সাইজও সাধারণত বেড়ে যায়। গর্ভাবস্থার তৃতীয় মাসে আপনার ব্রা এর মাপ পুরো এক কাপ সাইজ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে।[৭]

ব্রা এর কাপ সাইজ কীভাবে মাপবেন?

ব্রা এর যেই অংশ স্তনকে ঢেকে রাখে সেটি হলো ব্রা এর কাপ। আপনার জন্য সঠিক কাপ সাইজ হিসাব করতে প্রথমে স্তনের নিচের অংশ ইঞ্চি ফিতা দিয়ে মেপে নিন। এটিকে আন্ডার বাস্ট বলে। এরপর স্তনের সবচেয়ে বড় বা স্ফীত অংশ বরাবর ফিতা বসিয়ে আবার মাপুন। এটিকে বাস্ট বলে।

বামে ‘আন্ডারবাস্ট’ ও ডানে ‘বাস্ট’ সাইজ মাপার পদ্ধতি।
ছবি: বামে ‘আন্ডারবাস্ট’ ও ডানে ‘বাস্ট’ সাইজ মাপার পদ্ধতি। 

এবার বাস্ট এর মাপ থেকে আন্ডার বাস্ট এর মাপ বিয়োগ করে এদের মধ্যে পার্থক্য বের করুন।

পার্থক্যকাপ সাইজ
১ ইঞ্চি
২ ইঞ্চিবি
৩ ইঞ্চিসি
৪ ইঞ্চিডি

সম্ভব হলে অবশ্যই কেনার আগে দোকানে ট্রায়াল দিয়ে ব্রা ঠিকমতো ফিট হয় কি না সেটি দেখে নিতে পারেন।

গর্ভাবস্থায় পরার উপযোগী নার্সিং ব্রা অথবা হুক ছাড়া আরামদায়ক সুতির ব্রা এসময়ে বেশি আরামদায়ক হতে পারে। সম্ভব হলে ঘুমানোর সময়ে বিশেষ ‘স্লিপিং ব্রা’ ব্যবহার করুন। এ ছাড়া ব্যায়াম করার সময়ে ভালো সাপোর্টযুক্ত স্পোর্টস ব্রা ব্যবহার করবেন। এগুলো বাড়ন্ত স্তনকে সাপোর্ট দেওয়ার পাশাপাশি ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।

গর্ভাবস্থায় সঠিক সাইজের ব্রা ব্যবহার না করলে অস্বস্তি হতে পারে। তাই এসময়ে আপনার স্তনের আকার অনুযায়ী সঠিক সাইজের পোশাক ও ব্রা বেছে নিন।

স্তনের বোঁটা ও এর আশেপাশে চুলকানি হওয়া

গর্ভাবস্থায় হরমোনের তারতম্যের কারণে স্তন ও স্তনের বোঁটাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চুলকানি হতে পারে৷ তা ছাড়া গর্ভকাল বাড়ার সাথে সাধারণত স্তনের আকার বাড়তে থাকায় স্তনের ত্বক কিছুটা টানটান হয়। এতে ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়তে পারে এবং স্তন ও স্তনের বোঁটায় চুলকানি হতে পারে।

ত্বক টানটান হওয়ার কারণে স্তনের বোঁটা ও এর আশেপাশের চামড়ায় স্ট্রেচ মার্ক বা ফাটা দাগও দেখা দিতে পারে। আবার কারও কারও একজিমার মতো চর্মরোগের কারণে স্তনের বোঁটা ও এর চারিদিকে চুলকানি হতে পারে।

স্তনের বোঁটা কিংবা তার চারিদিকে চুলকানি সাধারণত দুশ্চিন্তার বিষয় নয়। কিছু ঘরোয়া পরামর্শ মেনে আপনি এই চুলকানি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন—

  • আপনার স্তনে অথবা স্তনের বোঁটায় চুলকানি হলেও চেষ্টা করবেন সেই জায়গা না চুলকাতে৷ নখের আঁচড় থেকে ত্বকে আঘাত লাগার কারণে সেখানে ইনফেকশন হতে পারে। পাশাপাশি ত্বকের আঘাত থেকে জ্বালাপোড়া হয়ে চুলকানি আরও বেড়ে যেতে পারে।
  • এসময়ে ঢিলেঢালা পোশাক ও সঠিক মাপের সুতির ব্রা ব্যবহার করলে আরাম পেতে পারেন।
  • চুলকানি বেশি হলে কয়েক টুকরো বরফ একটু মোটা সুতি কাপড়ে জড়িয়ে স্তনে ও বোঁটায় লাগাতে পারেন।
  • উষ্ণ বা কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করলেও চুলকানি ভাব কমে আসতে পারে। তবে বেশি গরম পানি দিয়ে গোসল করা থেকে বিরত থাকবেন, কেননা সেটি ত্বকের আর্দ্রতা কমিয়ে ত্বককে শুষ্ক করে ফেলতে পারে।
  • স্তনের চামড়া শুষ্ক হয়ে যাওয়া প্রতিরোধে ভালো কোনো লোশন, ময়েশ্চারাইজার, গ্লিসারিন অথবা অলিভ অয়েল লাগাতে পারেন।

উল্লেখ্য, যদি কোনো কারণে চুলকানির ধরন আপনার কাছে অস্বাভাবিক মনে হয়, কিংবা চুলকানির কারণে স্বাভাবিক কাজকর্ম ও ঘুম ব্যাহত হয় তাহলে একজন ডাক্তার দেখিয়ে নিবেন। তিনি আপনার সমস্যা অনুযায়ী ক্রিম, মলম অথবা গর্ভাবস্থায় নিরাপদ এমন মুখে খাওয়ার ঔষধ সেবনের পরামর্শ দিতে পারেন।

স্তনের বোঁটা থেকে দুধ জাতীয় তরল বের হওয়া

সাধারণত গর্ভাবস্থার শেষের দিকে স্তনের বোঁটা থেকে দুধের মতো হলুদাভ-সাদা বা সোনালী রঙের আঠালো তরল নিঃসৃত হতে পারে। এই তরল হলো কোলোস্ট্রাম বা শালদুধ। শিশু জন্মের পর প্রথম দুধ হিসেবে এই শালদুধ পান করে। এটি শিশুকে তার প্রয়োজনীয় নানান গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে। শালদুধে অনেক অ্যান্টিবডি থাকে, যা নবজাতক শিশুকে নানান রোগজীবাণু থেকে রক্ষা করে।[৮]

গর্ভাবস্থায় শালদুধ নিঃসৃত হওয়া একটি স্বাভাবিক ঘটনা। এ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। এটি শিশুর জন্মের জন্য আপনার শরীরের প্রস্তুতির একটি সংকেত মাত্র। তবে শালদুধ নিঃসরণে যদি আপনার অস্বস্তি হয়, কিংবা গায়ের কাপড় ভিজে যায়, তাহলে টিস্যু পেপার অথবা ব্রেস্ট প্যাড (এই নামেই দোকানে কিনতে পাওয়া যায়) ব্যবহার করতে পারেন।

এসময়ে স্তন শুষ্ক ও পরিচ্ছন্ন রাখা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ স্তন যদি সবসময় ভেজা থাকে তবে সেখানে ছত্রাক জনিত ক্ষত বা ফাঙ্গাল ইনফেকশন দেখা দিতে পারে৷

শালদুধ কোনো কারণে রক্তমিশ্রিত থাকলে সেটির রঙ গোলাপি বা লালচে দেখাতে পারে। এমন কিছু লক্ষ করলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন। এটি গুরুতর কোনো রোগের লক্ষণ হতে পারে। 

স্তনের শিরা দৃশ্যমান হওয়া

গর্ভাবস্থায় আপনার স্তনসহ সারা দেহে রক্ত সরবরাহ বাড়ে।[৯] এসময়ে শরীরে নানান হরমোনের মাত্রাও বাড়ে। এসবের প্রভাবে স্তনের শিরাগুলো আকারে বড় হয় ও দৃশ্যমান হয়ে ওঠে।[১০] এগুলো তখন স্তনের গায়ে বেগুনী বা নীলচে রেখার মতো দেখা দেয়। শিশুর জন্মের পর এই রেখাগুলো নিজে থেকেই মিলিয়ে যায়। তাই এর জন্য সাধারণত কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে না।

পড়ুন: গর্ভাবস্থায় স্তনের দৃশ্যমান শিরা

স্তনে চাকা বা দলার মতো অনুভব করা

গর্ভাবস্থায় কারও কারও স্তনে চাকা বা পিণ্ডের মত দেখা দিতে পারে।[১১] এ নিয়ে ঘাবড়ানোর তেমন কিছু নেই। গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক থেকে সাধারণত স্তনে দুধ উৎপাদন শুরু হয়। অনেকসময় দুধ জমে গিয়ে স্তনের গায়ে এমন ফুলে ওঠা অংশ বা পিণ্ড দেখা দেয়। তবে এমন কোনো পিণ্ড যদি আপনার কাছে অস্বাভাবিক মনে হয় সেক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে গিয়ে স্তন পরীক্ষা করিয়ে নিবেন।

কখন ডাক্তারের কাছে যাবেন? 

স্তনে অস্বাভাবিক কোনো পরিবর্তন লক্ষ করলে দ্রুত ডাক্তার দেখাতে হবে। যেমন—

  • স্তনে অথবা বগলে শক্ত চাকা বা দলার ন্যায় অনুভব করা
  • স্তনের কোনো অংশ ফুলে যাওয়া
  • স্তনে অস্বাভাবিক ব্যথা কিংবা জ্বালাপোড়া হওয়া
  • স্তনের বোঁটা থেকে রক্ত, পুঁজ কিংবা কোনো অস্বাভাবিক তরল নিঃসৃত হওয়া
  • স্তনের বোঁটা ভেতরের দিকে ঢুকে যাওয়া
  • স্তনের চামড়ায় চুলকানি হওয়া অথবা তা লালচে হয়ে যাওয়া
  • স্তনের চামড়ায় টোল বা গর্তের মতো হওয়া
  • স্তনের আকার-আকৃতিতে অস্বাভাবিক পরিবর্তন লক্ষ করা

এসব লক্ষণের মধ্যে কিছু পরিবর্তন হয়তো স্বাভাবিক। তবে এগুলো স্তনের বিশেষ কোনো রোগ, এমনকি স্তন ক্যান্সারের লক্ষণও হতে পারে।[১২] তাই সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় করে সঠিক চিকিৎসা শুরু করতে ডাক্তার দেখিয়ে নেওয়াই শ্রেয়।[১৩]

সাধারণ জিজ্ঞাসা

গর্ভাবস্থায় স্তন থেকে ঘন আঠালো সাদা তরল বের হওয়া কি স্বাভাবিক?

গর্ভবতী নারীর স্তন থেকে যেই ঘন আঠালো সাদা বা হলুদাভ তরল বের হয় তা হলো কোলোস্ট্রাম বা শালদুধ। শিশু জন্মের পর প্রথম দুধ হিসেবে শালদুধ পান করে। গর্ভাবস্থায়, বিশেষ করে গর্ভাবস্থার শেষের দিকে স্তন হতে এ ধরনের তরল বের হওয়া পুরোপুরি স্বাভাবিক।

গর্ভাবস্থায় স্তনে কোনো প্রকার পরিবর্তন না হওয়া কি স্বাভাবিক?

গর্ভাবস্থায় একেকজনের শরীরে একেকরকম পরিবর্তন আসে। কতটুকু পরিবর্তন আসবে সেটিও মানুষভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে। কারও ক্ষেত্রে অনেক বেশি পরিবর্তন আসতে পারে, আবার কারও ক্ষেত্রে তেমন কোনো লক্ষণীয় পরিবর্তন না-ও আসতে পারে। এর কোনোটাই সাধারণত অস্বাভাবিক না। তবে স্তনে কোনো পরিবর্তন দেখা না যাওয়া নিয়ে চিন্তিত হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

গর্ভাবস্থায় স্তনে চাকা চাকা অনুভব হওয়া কিসের লক্ষণ?

গর্ভাবস্থায় স্তনে দুধ জমে গিয়ে অনেকসময় চামড়ার নিচে পিণ্ড বা চাকার মতো অনুভব হতে পারে। এ ছাড়া আগে থেকে কারও স্তনে চাকার মতো থাকলে সেগুলোও গর্ভাবস্থায় আকারে বড় হয়ে উঠতে পারে। যেমন: ফাইব্রোঅ্যাডেনোমা নামক অক্ষতিকর টিউমার।
এগুলো সাধারণত খুব বেশি দুশ্চিন্তার কারণ নয়। তবে স্তনে যেকোনো ধরনের চাকা বা দলা দেখা দিলে ডাক্তারি পরীক্ষা করিয়ে নেওয়াই শ্রেয়। এতে করে স্তন ক্যান্সারের মতো গুরুতর রোগের সম্ভাবনা থাকলেও সেটি আগেভাগে নির্ণয় ও নিরাময় করা সম্ভব হতে পারে।[১৪]

গর্ভাবস্থায় স্তনে যেসব পরিবর্তন ঘটে সেগুলো কতদিন পর্যন্ত থাকবে?

গর্ভাবস্থায় স্তনে হওয়া পরিবর্তনগুলো সাধারণত সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানোর পুরো সময়টা জুড়ে থাকতে পারে। বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করার পর  ধীরে ধীরে স্তন আগের অবস্থায় ফেরত আসতে থাকে।

(১৪)

  1. Bastian, Lori A., and Haywood L. Brown. “Clinical Manifestations and Diagnosis of Early Pregnancy.” UpToDate, https://www.uptodate.com/contents/clinical-manifestations-and-diagnosis-of-early-pregnancy. Accessed 26 Aug. 2022.
  2. Kwan, Irene, and Joseph Loze Onwude. “Premenstrual Syndrome.” BMJ Clinical Evidence, vol. 2015, Jan. 2015.
  3. Graham, Helen. “Breast Health and Pregnancy.” British Journal of Midwifery, vol. 15, no. 3, Mar. 2007, pp. 137–40.
  4. Alex, Ashley, et al. “Anatomy and Physiology of the Breast during Pregnancy and Lactation.” Advances in Experimental Medicine and Biology, vol. 1252, Jan. 2020.
  5. American College of Obstetricians and Gynecologists. Your Pregnancy and Childbirth: Month to Month. American College of Obstetricians and Gynecologists Women’s Health Care Physicians, 2021, p. 72.
  6. Alex, Ashley, et al. “Anatomy and Physiology of the Breast during Pregnancy and Lactation.” Advances in Experimental Medicine and Biology, vol. 1252, Jan. 2020.
  7. American College of Obstetricians and Gynecologists. Your Pregnancy and Childbirth: Month to Month. American College of Obstetricians and Gynecologists Women’s Health Care Physicians, 2021, p. 72.
  8. Bryant, Joy, and Jennifer Thistle. “Anatomy, Colostrum.” NCBI Bookshelf, 30 Oct. 2021, https://www.ncbi.nlm.nih.gov/books/NBK513256/.
  9. Ouzounian, Joseph G., and Uri Elkayam. “Physiologic Changes During Normal Pregnancy and Delivery.” Cardiology Clinics, vol. 30, no. 3, Aug. 2012, pp. 317–29.
  10. Wong, Reynold C., and Charles N. Ellis. “Physiologic Skin Changes in Pregnancy.” Journal of the American Academy of Dermatology, vol. 10, no. 6, Jan. 1984, pp. 929–40.
  11. Langer, A., et al. “Breast Lumps in Pregnant Women.” Diagnostic and Interventional Imaging, vol. 96, no. 10, Oct. 2015, pp. 1077–87.
  12. CDC. “What Are the Symptoms of Breast Cancer?” Centers for Disease Control and Prevention, 9 Mar. 2022, https://www.cdc.gov/cancer/breast/basic_info/symptoms.htm. Accessed 26 Aug. 2022.
  13. Amant, Frédéric, et al. “Breast Cancer in Pregnancy.” The Lancet, vol. 379, no. 9815, Feb. 2012, pp. 570–79.
  14. CDC. “What Are the Symptoms of Breast Cancer?” Centers for Disease Control and Prevention, 9 Mar. 2022, https://www.cdc.gov/cancer/breast/basic_info/symptoms.htm. Accessed 26 Aug. 2022.