গর্ভাবস্থায় মাথা ব্যথা

গর্ভাবস্থার প্রথম কয়েক সপ্তাহে মাথা ব্যথা আপনাকে বেশ ভোগাতে পারে। তবে সময়ের সাথে এই সমস্যা কমতে থাকে।

গর্ভবতী মায়েদের গর্ভাবস্থায় প্রায়ই মাথা ব্যথা হতে পারে। সাধারণ মাথা ব্যথা গর্ভের শিশুর জন্য ক্ষতিকর না হলেও আপনার জন্য অস্বস্তিকর হতে পারে। মাথা ব্যথা সেরে উঠতে সাধারণত বেশ কিছুটা সময় লাগে। তবে কিছু সহজ পরামর্শ মেনে চলার মাধ্যমে আপনি অনেকাংশেই মাথা ব্যথা এড়িয়ে চলতে পারবেন।

কখন মাথা ব্যথা হয়

গর্ভাবস্থার প্রথম কয়েক সপ্তাহে মাথা ব্যথা আপনাকে বেশ ভোগাতে পারে। তবে সময়ের সাথে এই সমস্যা কমতে থাকে। সাধারণত গর্ভধারণের শেষের ছয় মাসে মাথা ব্যথার সমস্যা অনেকটাই কমে যায়। কারও কারও ক্ষেত্রে মাথা ব্যথা পুরোপুরি সেরেও যায়।

গর্ভাবস্থায় মাথা ব্যথার কারণ

গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন কারণে আপনার মাথা ব্যথা হতে পারে। যেমন—

  • হরমোনের পরিবর্তন
  • ক্ষুধা লাগা অথবা অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকা। এতে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কমে গিয়ে মাথা ব্যথা হতে পারে
  • পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন
  • মানসিক চাপ
  • ক্লান্তি ও পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব
  • দৃষ্টিশক্তির সমস্যা
  • অস্বাস্থ্যকর দেহভঙ্গিতে শোয়া, বসা অথবা দাঁড়িয়ে থাকা
  • বেশি স্ক্রিনটাইমের কারণে, অর্থাৎ বেশিক্ষণ ধরে মোবাইল, ল্যাপটপ অথবা টিভির দিকে তাকিয়ে থাকার কারণে চোখের ওপর চাপ পড়া
  • ক্যাফেইনযুক্ত খাবার ও পানীয় বেশি বেশি পান করা

এ ছাড়াও কিছু মারাত্মক জটিলতার কারণে মাথা ব্যথা হতে পারে। যেমন: প্রিএকলাম্পসিয়া, ব্রেইনে রক্তক্ষরণ ও ব্রেইন অথবা ব্রেইন এর পর্দার ইনফেকশন। এসব কারণ নিয়ে আর্টিকেলের পরবর্তী অংশে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।

গর্ভাবস্থায় মাথা ব্যথার চিকিৎসা

গর্ভাবস্থায় সাধারণ মাথা ব্যথার চিকিৎসায় প্রথমে কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করুন। এগুলো সঠিকভাবে মেনে চললে আপনি হয়তো ঔষধ ছাড়াই মাথা ব্যথা সারিয়ে তুলতে পারবেন।

এরপরেও মাথা ব্যথা না সারলে ঔষধ খেতে পারেন। তবে তীব্র মাথা ব্যথার ক্ষেত্রে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নিন। এ ছাড়াও গর্ভাবস্থায় মাথা ব্যথা কখন বিপদজনক হতে পারে সেটি নিচে তুলে ধরা হয়েছে। সেসব ক্ষেত্রেও দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

ঘরোয়া সমাধান

গর্ভাবস্থায় মাথা ব্যথা মোকাবেলার প্রধান উপায় হলো মাথা ব্যথার কারণগুলো যথাসম্ভব এড়িয়ে চলা। গর্ভাবস্থায় ঘরোয়াভাবে মাথা ব্যথা কমাতে যা করবেন—

১. মাথায় ঠাণ্ডা সেঁক দিন

হালকা মাথা ব্যথায় ঠাণ্ডা সেঁক দিলে সেটি ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।[১] এজন্য কিছু বরফের টুকরা একটি তোয়ালে কিংবা গামছায় পেঁচিয়ে নিন। এরপর বিছানায় শুয়ে সেটি কপালের ওপরে দিয়ে রাখুন। এ ছাড়া ফার্মেসি থেকে ‘কোল্ড প্যাক’ কিনে সেটিও কপালে দিয়ে রাখতে পারেন।

২. পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন

পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও তরল খাবার না খেলে আপনি পানিশূন্যতায় ভুগতে পারেন। এ ছাড়াও অতিরিক্ত গরমের জন্য কিংবা শারীরিক পরিশ্রমের কারণে শরীর থেকে পানি বের হয়ে গিয়ে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতার সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। যা থেকে আপনার মাথা ব্যথা শুরু হতে পারে। তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও তরল খাবার খাবেন।

একজন সুস্থ-স্বাভাবিক গর্ভবতী নারীর প্রতিদিন গড়ে ২–৩ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন। কাপ কিংবা গ্লাসের হিসাবে আপনাকে সারাদিনে মোট ৮–১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে।[২] তবে এই বিষয়ে কখনো যদি ডাক্তার কোনো বিশেষ পরামর্শ দিয়ে থাকেন তাহলে সেটিই অনুসরণ করবেন।

৩. একটানা অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকবেন না

একটানা অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে গিয়ে মাথা ব্যথা হতে পারে। তাই রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ঠিক রাখতে নিয়মিত বিরতিতে সুষম ও পুষ্টিকর খাবার খাবেন। প্রয়োজনে দৈনিক তিনবেলা বেশি করে খাবার না খেয়ে অল্প অল্প করে ছয় বার খান। অথবা দৈনিক তিনবার খাওয়ার পাশাপাশি ক্ষুধা লাগলে পরিমিত পরিমাণে স্বাস্থ্যকর ও হালকা নাস্তা খেতে পারেন।

এ ছাড়া অবশ্যই সকালে ঠিকমতো নাস্তা খাওয়ার চেষ্টা করবেন। রাতে ঘুমানোর আগে কোনো হালকা খাবার খেয়ে নিবেন। এক গ্লাস কুসুম গরম দুধ খেয়ে ঘুমাতে যেতে পারেন। দুধ লম্বা ও ভালো ঘুমে সাহায্য করে।

পড়ুন: গর্ভবতীর খাবার তালিকা

৪. প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিন

গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নেওয়া খুবই জরুরি। রাতে অন্তত ৭–৯ ঘণ্টা ভালোমতো ঘুমানোর চেষ্টা করুন।[৩][৪] প্রয়োজনে দিনের বেলাও কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে পারেন।

এ ছাড়া মাথা ব্যথা হলে অন্ধকার ও শান্ত জায়গায় শুয়ে থাকতে পারেন। কিংবা কাজ করতে থাকলে কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করুন। এটি মাথা ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।

ঘুমের একটি রুটিন মেনে চলুন। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার এবং একই সময়ে ঘুম থেকে ওঠার চেষ্টা করবেন। খুব বেশি অথবা খুব কম না ঘুমিয়ে নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানোর চেষ্টা করুন।

৫. ক্যাফেইনযুক্ত খাবার ও পানীয় এড়িয়ে চলুন

অতিরিক্ত চা-কফি ও কোকের মতো ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় ও খাবার খেলে মাথা ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।[৫] তাই এগুলো যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন। তবে হুট করে ক্যাফেইন জাতীয় খাবার খাওয়া বন্ধ না করে ধীরে ধীরে কমিয়ে আনুন। চা-কফির বিকল্প হিসেবে চা পাতা ছাড়া বানানো আদা চা বা মসলা চা, দুধ অথবা চিনিমুক্ত ফলের রস বেছে নিতে পারেন।

গর্ভকালীন সময়ে দৈনিক ২০০ মিলিগ্রামের বেশি ক্যাফেইন জাতীয় খাবার অথবা পানীয় খাওয়া এড়িয়ে চলবেন।[৬] সাধারণত ২ কাপ কফি কিংবা ২–৩ কাপ চায়েই এই পরিমাণ ক্যাফেইন থাকতে পারে।

৬. দুশ্চিন্তামুক্ত থাকার চেষ্টা করুন

গর্ভাবস্থায় যেকোনো ধরনের দুশ্চিন্তা যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন। দুশ্চিন্তা এড়িয়ে চলতে পারলে টেনশন টাইপ মাথা ব্যথা প্রতিরোধ করা যায়। এজন্য চেষ্টা করবেন হাসিখুশি থাকতে, মন ভালো রাখতে।

মাথায় কোনো চিন্তা ঘুরপাক খেতে থাকলে আপনার পছন্দের কোনো কাজে মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। পরিবারের কারও সাথে দুশ্চিন্তার বিষয়টি ভাগাভাগি করে নিতে পারেন। গর্ভাবস্থায় করা যায় এমন কিছু যোগব্যায়াম ও মেডিটেশনের মাধ্যমে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করতে পারেন। এ ছাড়া আপনি নিয়মিত শরীরচর্চা করলে সেটি মানসিক চাপ কমিয়ে আনতে সাহায্য করবে।

নিঃশ্বাসের ব্যায়াম

উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা দূর করার জন্য আপনি একটি সহজ ব্যায়াম করতে পারেন। এই ব্যায়ামটি শুয়ে, চেয়ারে বসে হেলান দিয়ে অথবা দাঁড়িয়ে করা যেতে পারে। আপনি যদি আঁটসাঁট কাপড় পরে থাকেন, তা বদলে ঢিলেঢালা কাপড় পরে নিতে পারেন।

  • ব্যায়ামের শুরুতেই রিল্যাক্সড হয়ে একটি আরামদায়ক অবস্থান গ্রহণ করুন—
    • শুয়ে থাকলে: পা সোজা করে রাখুন অথবা এমনভাবে হাঁটু ভাঁজ করে নিন যাতে পায়ের পাতা বিছানার সাথে লেগে থাকে। দুই হাত দুই পাশে লম্বা করে রাখুন। হাতের তালু ওপরের দিকে, অর্থাৎ ঘরের ছাদের দিকে মুখ করে রাখুন।
    • চেয়ারে বসে থাকলে: দুই হাত দুই পাশের হাতলে রাখুন। পা দুটো মেঝেতে সমান ভাবে ফেলুন। দুই পায়ের মাঝে এক কোমর সমান ফাঁকা জায়গা রাখুন।
    • দাঁড়িয়ে থাকলে: পা দুটো সমান ভাবে মেঝেতে ফেলুন এবং দুই পায়ের মাঝে এক কোমর সমান ফাঁকা জায়গা রাখুন।
  • এবার লম্বা করে শ্বাস নিন। খুব বেশি জোর দিয়ে চেষ্টা না করে আরামদায়কভাবে পেট পর্যন্ত গভীর শ্বাস নিন। প্রতিবার শ্বাস নেওয়ার সময়ে মনে মনে এক থেকে পাঁচ পর্যন্ত ধীরে ধীরে গুনবেন। তবে শুরুতেই পাঁচ পর্যন্ত গুনে লম্বা শ্বাস নিতে কষ্ট হতে পারে, সেক্ষেত্রে যতটুকু সম্ভব হয় ততটুকু নিন।
  • তারপর শ্বাস ধরে না রেখে আলতো করে ছেড়ে দিন। আবারও মনে মনে এক থেকে পাঁচ পর্যন্ত গুনতে চেষ্টা করতে পারেন। চেষ্টা করবেন শ্বাস নেওয়ার সময়ে নাক দিয়ে শ্বাস নিতে এবং মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়তে।
  • নিয়মিত ব্যবধানে এভাবে শ্বাস নিতে থাকুন।

তিন থেকে পাঁচ মিনিট পর্যন্ত এই ব্যায়ামটি করতে পারেন।

৭. আলো-বাতাসপূর্ণ ও খোলামেলা ঘরে থাকুন

জানালাবিহীন বদ্ধ ঘরে থাকলে এবং অতিরিক্ত গরম আবহাওয়ার কারণেও মাথা ব্যথা হতে পারে। তাই ভ্যাপসা ও গুমোট ঘরে না থাকার চেষ্টা করবেন। পর্যাপ্ত আলো-বাতাসপূর্ণ ও খোলামেলা বাসায় থাকলে ভালো হয়। সেটি সম্ভব না হলে প্রতিদিন আশেপাশের খোলামেলা জায়গায় কিছুক্ষণ হালকা হাঁটাহাঁটি করতে পারেন।

৮. মাথা ব্যথা উদ্রেক করে এমন জিনিস এড়িয়ে চলুন

আপনি যদি লক্ষ করে থাকেন যে কিছু নির্দিষ্ট জিনিস আপনার মাথা ব্যথা (বিশেষ করে মাইগ্রেন) উদ্রেক করে তাহলে সেগুলো যথাসম্ভব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন। এভাবে আপনি অনেক ক্ষেত্রেই মাথা ব্যথা প্রতিরোধ করতে পারবেন। মাথা ব্যথার উদ্রেক ঘটাতে পারে এমন কিছু জিনিস হলো—

  • তীব্র শব্দ
  • তীব্র কিংবা উজ্জ্বল সাদা আলো
  • নির্দিষ্ট খাবার। যেমন: চা, কফি, কমলা, চকলেট ও পনির
  • তীব্র গন্ধ

উল্লেখ্য, একেকজনের ক্ষেত্রে একেকরকম জিনিসের কারণে মাথা ব্যথা শুরু হতে পারে। তাই আপনার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো জিনিসে মাথা ব্যথা হয় কি না সেটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন।

ঔষধ

গর্ভাবস্থায় মাথা ব্যথার চিকিৎসায় পেইনকিলার বা ব্যথার ঔষধ হিসেবে সাধারণত প্রথম পছন্দ হলো প্যারাসিটামল। এটি একটি ‘ওভার দা কাউন্টার’ ঔষধ। ওভার দা কাউন্টার ঔষধগুলো ফার্মেসি থেকে কিনে সাথে থাকা নির্দেশিকা অনুযায়ী সেবন করা নিরাপদ। তবে আপনার জন্য উপযুক্ত ডোজ সম্পর্কে নিশ্চিত না হলে কিংবা ঔষধের বিষয়ে আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিন।

এ ছাড়া প্যারাসিটামলে কাজ না হলে অথবা অন্য কোনো ঔষধ সেবনের প্রয়োজন হলেও ডাক্তারের পরামর্শ নিন। গর্ভাবস্থায় যেকোনো ধরনের ঔষধ সেবনের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উত্তম।

কিছু ঔষধ সাধারণ সময়ে মাথা ব্যথার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হলেও গর্ভাবস্থায় সেগুলো এড়িয়ে চলবেন। যেমন—

গর্ভকালীন সময়ে নন-স্টেরয়ডাল ব্যথার ঔষধ চিকিৎসকের নির্দেশ ছাড়া সেবন করবেন না। গর্ভাবস্থার শুরুর দিকে এ ধরনের ঔষধ সেবনের ফলে গর্ভের শিশুর জন্মগত ত্রুটি হতে পারে। এমনকি গর্ভপাত হয়ে যেতে পারে।[৭] অন্যদিকে গর্ভধারণের ২০তম সপ্তাহ বা তারপরে এই ঔষধ সেবন করলে আপনার অনাগত শিশুর কিডনিতে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।[৮] এ ছাড়া গর্ভের শিশুর হার্টের সমস্যা হতে পারে।[৯]

কখন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে?

গর্ভকালীন সময়ে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে হওয়া মাথা ব্যথা সাধারণত প্রসবের পরপরই ভালো হয়ে যায়। তবে প্রসবের পরেও যদি আপনার মাথা ব্যথার সমস্যা থাকে, তাহলে এর পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

এ ছাড়া ঘরোয়া সমাধান সঠিকভাবে মেনে চলার এবং ঔষধ (যেমন: প্যারাসিটামল) খাওয়ার পরেও আপনার মাথা ব্যথা ভালো না হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। উল্লেখ্য, গুরুতর সমস্যার কারণে মাথা ব্যথা হলে সেটি সাধারণত বিশ্রাম নিলেও ভালো হয়ে যায় না। বরং ধীরে ধীরে ব্যথার আরও অবনতি হতে পারে এবং মাথা ব্যথা বারবার ফিরে আসতে পারে। এ ধরনের মাথা ব্যথা হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

গর্ভাবস্থায় মাথা ব্যথা কখন বিপদজনক?

নিচের লক্ষণগুলোর যেকোনোটি দেখা দিলে দেরি না করে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে—

  • তীব্র মাথা ব্যথা
  • চোখে দেখতে সমস্যা হওয়া। যেমন: চোখে ঝাপসা দেখা অথবা চোখে আলোর ঝলসানি দেখা
  • পাঁজর বরাবর ঠিক নিচে ব্যথা হওয়া
  • হঠাৎ করে মুখ, হাত, পায়ের পাতা ও গোড়ালি ফুলে যাওয়া
  • ওপরের যেকোনো লক্ষণের পাশাপাশি বমি হওয়া

এসব প্রি-এক্লাম্পসিয়া এর লক্ষণ। প্রি-এক্লাম্পসিয়া উচ্চ রক্তচাপ জনিত একটি মারাত্মক জটিলতা। এটি হলে আপনার জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা নিতে হবে। সময়মতো চিকিৎসা শুরু না করলে এটি আপনার ও সন্তানের জন্য বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

এ ছাড়াও মাথা ব্যথা কখনো কখনো ব্রেইনে রক্তক্ষরণ অথবা ব্রেইন বা এর পর্দায় ইনফেকশনসহ মারাত্মক কোনো রোগের লক্ষণ হতে পারে। তাই নিচের কোনো লক্ষণ দেখা দিলেও রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাবেন—

  • হঠাৎ করেই অত্যন্ত তীব্র মাথা শুরু হলে
  • তীব্র মাথা ব্যথার ফলে ঘুম ভেঙে গেলে
  • মাথা ব্যথার পাশাপাশি ঘাড় শক্ত হয়ে আসলে
  • মাথায় আঘাত পাওয়ার পর থেকে মাথা ব্যথা দেখা দিলে
  • অত্যন্ত তীব্র মাথা ব্যথার পাশাপাশি নিচের কোনো লক্ষণ থাকলে—
    • হঠাৎ করেই কথা বলতে কিংবা কিছু মনে করতে অসুবিধা হলে
    • দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেললে
    • ঝিমিয়ে পরলে অথবা অসংলগ্ন আচরণ করলে
    • অনেক জ্বর আসলে, ঘাড় শক্ত হয়ে গেলে, বমি হলে, আলোর দিকে তাকাতে কষ্ট হলে অথবা চামড়ায় ছোপ ছোপ র‍্যাশ বা ফুসকুড়ি দেখা দিলে
    • চোখের সাদা অংশ লাল হয়ে গেলে
    • খিঁচুনি হলে
    • জ্ঞান হারিয়ে ফেললে