গর্ভধারণের ৩৮তম সপ্তাহ নিয়ে যা জানা প্রয়োজন
গর্ভাবস্থার শেষের দিকের এই সপ্তাহ গুলোতে আপনি কিছুটা অস্বস্তি ও দুশ্চিন্তা বোধ করতে পারেন। তবে যতটা সম্ভব শান্ত থাকার চেষ্টা করুন, পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিন৷
এছাড়া এ সপ্তাহের বাকি লক্ষণ গুলো অনেকটা আগের মতই থাকবে –
- গর্ভাশয়ের পেশীগুলোর সংকোচনের ফলে হঠাৎ হঠাৎ পেটে টান পড়ার মত অনুভূতি হওয়া (ব্রাক্সটন-হিক্স কন্ট্রাকসন),
- ঘুমের সমস্যা হওয়া,
- স্ট্রেচ মার্কস (পেটের আকার বাড়াতে থাকায় চামড়ায় যে টান পড়ে তার কারণে ফাটা দাগের মত চিহ্ন দেখা দেওয়া),
- দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া বা রক্ত পড়া,
- পেটে ব্যথা,
- পাইলসের সমস্যা দেখা দেওয়া বা হঠাৎ এই সমস্যা বেড়ে যাওয়া,
- কিছু ক্ষেত্রে নাক থেকে হালকা রক্ত পড়া,
- পেট ফাঁপা ও কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া,
- বদহজম,
- চাপ দিলে স্তনে ব্যথা অনুভব করা,
- পায়ে ব্যথা,
- অল্পতেই গরম লাগা কিংবা সামান্য গরম আবহাওয়াতেই অস্বস্তি বোধ করা বা হাঁসফাঁস করা,
- মাথা ঘুরানো বা মাথা ব্যথা,
- হাত-পায়ে পানি আসা বা ফুলে যাওয়া,
- প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া বা ইনফেকশন,
- যোনিপথে অর্থাৎ মাসিকের রাস্তায় ইনফেকশন, এবং
- মুখের বা শরীরের অন্যান্য অংশের চামড়ায় ছোপ ছোপ দাগ পড়া।
যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে
গর্ভাবস্থার শেষের দিকে ‘প্রি-এক্লাম্পসিয়া’ নামক জটিলতা দেখা দিতে পারে। গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ থাকে, তাদের এই জটিলতার ঝুঁকি বেশি থাকে। এই অবস্থা সম্পর্কে জানতে আমাদের এ সংক্রান্ত আর্টিকেলটি পড়ে দেখতে পারেন।
কোন লক্ষণগুলো দেখা দেওয়ার পর প্রসববেদনা শুরু হয় জেনে নিন
প্রসববেদনা ও প্রসবের প্রস্তুতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আপনার ডাক্তার বা নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের স্বাস্থ্যকর্মীর সাথে বিস্তারিত আলোচনা করে নিন। কোথায় কিভাবে ডেলিভারী হবে এ ব্যপারে পরিবারের সদস্যদের জানিয়ে রাখুন। প্রসবকালীন প্রয়োজনীয় সব কিছু যেমন, পাতলা সুতী কাপড়ে তৈরী ঢিলেঢালা পোষাক, স্বাস্থ্যকর শুকনা খাবার, শিশুকে পরানোর জামা, তার ডায়পার ইত্যাদি গুছিয়ে রাখুন।
গর্ভের শিশু কীভাবে বড় হচ্ছে
৩৮ তম সপ্তাহে শিশুটি লম্বায় প্রায় ৪৯.৮ সেন্টিমিটার দীর্ঘ হয় এবং এসময় তার ওজন হয় প্রায় ৩ কেজি।
গর্ভাবস্থার মাঝামাঝি সময়ে শিশুটির ত্বক ‘লানুগো’ নামক যেই পশম দ্বারা আবৃত ছিল, ইতিমধ্যে সেগুলো পুরোপুরি চলে যায়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে জন্মের পরেও শিশুর গায়ে ছড়ানো ছিটানো ভাবে কিছু পশম দেখা যেতে পারে৷
এসময় শিশুটির পরিপাক তন্ত্রের ভেতরে সবুজাভ আঠালো কিছু পদার্থ জমতে থাকে, একে বলা হয় ‘মেকোনিয়াম’। মূলত, গর্ভের ভেতরে থাকা অবস্থায় সে যা কিছু গলাধঃকরণ করে, যেমন – এমনিওটিক তরল বা পশম, ইত্যাদি সবকিছু জমে এই মেকনিয়াম তৈরি হয়। এটি পরবর্তীতে শিশুর জন্মের পর তার প্রথম মল হিসেবে শরীর থেকে বেরিয়ে আসে৷ তবে প্রসবের সময়ই শিশুটি প্রথম মলত্যাগ করলে এটি কিছুটা দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে এবং তখন আপনার সদ্যজাত সন্তানকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হতে পারে৷