গর্ভধারণের ৩৭তম সপ্তাহ নিয়ে যা জানা প্রয়োজন
প্রসবের সময় যত ঘনিয়ে আসে আপনার গর্ভের ভেতরে শিশুটি তত নিচের দিকে নেমে আসে৷ ফলে এর আগের সপ্তাহ গুলোতে আপনি যে বুক জ্বালাপোড়া, বদহজম বা ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যায় ভুগছিলেন সেগুলো এখন কমে আসতে থাকবে।
এছাড়া এ সপ্তাহের বাকি লক্ষণ গুলো অনেকটা আগের মতই থাকবে –
- গর্ভাশয়ের পেশীগুলোর সংকোচনের ফলে হঠাৎ হঠাৎ পেটে টান পড়ার মত অনুভূতি হওয়া (ব্রাক্সটন-হিক্স কন্ট্রাকসন),
- ঘুমের সমস্যা হওয়া,
- স্ট্রেচ মার্কস (পেটের আকার বাড়াতে থাকায় চামড়ায় যে টান পড়ে তার কারণে ফাটা দাগের মত চিহ্ন দেখা দেওয়া),
- দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া বা রক্ত পড়া,
- পেটে ব্যথা,
- পাইলসের সমস্যা দেখা দেওয়া বা হঠাৎ এই সমস্যা বেড়ে যাওয়া,
- কিছু ক্ষেত্রে নাক থেকে হালকা রক্ত পড়া,
- পেট ফাঁপা ও কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া,
- চাপ দিলে স্তনে ব্যথা অনুভব করা,
- পায়ে ব্যথা,
- অল্পতেই গরম লাগা কিংবা সামান্য গরম আবহাওয়াতেই অস্বস্তি বোধ করা বা হাঁসফাঁস করা,
- মাথা ঘুরানো বা মাথা ব্যথা,
- হাত-পায়ে পানি আসা বা ফুলে যাওয়া,
- প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া বা ইনফেকশন,
- যোনিপথে অর্থাৎ মাসিকের রাস্তায় ইনফেকশন, এবং
- মুখের বা শরীরের অন্যান্য অংশের চামড়ায় ছোপ ছোপ দাগ পড়া।
কোন লক্ষণগুলো দেখা দেওয়ার পর প্রসববেদনা শুরু হয় জেনে নিন
প্রসববেদনা ও প্রসবের প্রস্তুতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আপনার ডাক্তার বা নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের স্বাস্থ্যকর্মীর সাথে বিস্তারিত আলোচনা করে নিন। কোথায় কিভাবে ডেলিভারী হবে এ ব্যপারে পরিবারের সদস্যদের জানিয়ে রাখুন। প্রসবকালীন প্রয়োজনীয় সব কিছু যেমন, পাতলা সুতী কাপড়ে তৈরী ঢিলেঢালা পোষাক, স্বাস্থ্যকর শুকনা খাবার, শিশুকে পরানোর জামা, তার ডায়পার ইত্যাদি গুছিয়ে রাখুন।
গর্ভের শিশু কীভাবে বড় হচ্ছে
৩৭ তম সপ্তাহে শিশুটি লম্বায় প্রায় ৪৮.৬ সেন্টিমিটার দীর্ঘ হয় এবং এসময় তার ওজন হয় প্রায় ২.৯ কেজি।
এখন থেকে আপনার গর্ভাবস্থা ‘ফুল-টার্ম’ (পূর্ণ মেয়াদ) হিসেবে বিবেচিত হবে। তার মানে গর্ভের শিশুটি জন্মানোর জন্য এখন পুরোপুরি প্রস্তুত। যেকোন সময় সে জন্মগ্রহণ করতে পারে। তাই প্রসবের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকুন।
শিশুটি এসময় গর্ভের ভেতরে নানারকম মুখভঙ্গি করার চেষ্টা করতে থাকে – যেমন হাসি,কান্না বা ভ্রু কুঁচকানো ইত্যাদি। তবে এর মানে এই নয় যে সে আসলেই কাঁদছে বা হাসছে, বরং এগুলো জন্মের পরে নানান অভিব্যক্তি প্রকাশের জন্য অনুশীলন মাত্র। ইতোমধ্যে সে একটি নির্দিষ্ট সময়ে জেগে থাকা ও ঘুমানোতে অভ্যস্ত হয়ে যায়। জন্মের পরেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই রুটিন মেনে চলার প্রবণতা দেখা যায়।