গর্ভধারণের ৩৪তম সপ্তাহ

৩৪তম সপ্তাহ নিয়ে আপনার যা জানা প্রয়োজন

৩৪তম বা এর পরের সপ্তাহ গুলোতে গর্ভবতী মায়েদের স্তন থেকে ধীরে ধীরে কোলোস্ট্রাম নামক হলুদাভ দুধের মত তরল বের হতে পারে। এই তরলকে কোলোস্ট্রাম বা শালদুধ বলা হয়। এতে শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন অ্যান্টিবডি উপস্থিত থাকে, তাই জন্মের পরপরই শিশুকে মায়ের বুকের দুধ পান করানোর পরামর্শ দেয়া হয়। 

এ সপ্তাহে গর্ভবতী মায়েদের অন্যান্য যে লক্ষণ গুলো থাকতে পারে সেগুলো হল – 

  • গর্ভাশয়ের পেশীগুলোর সংকোচনের ফলে হঠাৎ হঠাৎ পেটে টান পড়ার মত অনুভূতি হওয়া (ব্রাক্সটন-হিক্স কন্ট্রাকশন),
  • ঘুমের সমস্যা হওয়া,
  • স্ট্রেচ মার্কস (পেটের আকার বাড়াতে থাকায় চামড়ায় যে টান পড়ে তার কারণে ফাটা দাগের মত চিহ্ন দেখা দেওয়া),
  • দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া বা রক্ত পড়া,
  • পেটে ব্যথা,
  • পাইলসের সমস্যা দেখা দেওয়া বা হঠাৎ এই সমস্যা বেড়ে যাওয়া,
  • কিছু ক্ষেত্রে নাক থেকে হালকা রক্ত পড়া, 
  • পেট ফাঁপা ও কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া,
  • বদহজম,
  • চাপ দিলে স্তনে ব্যথা অনুভব করা,
  • পায়ে ব্যথা,
  • অল্পতেই গরম লাগা কিংবা সামান্য গরম আবহাওয়াতেই অস্বস্তি বোধ করা বা হাঁসফাঁস করা,
  • মাথা ঘুরানো বা মাথা ব্যথা,
  • হাত-পায়ে পানি আসা বা ফুলে যাওয়া,
  • প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া বা ইনফেকশন,
  • যোনিপথে অর্থাৎ মাসিকের রাস্তায় ইনফেকশন, এবং
  • মুখের বা শরীরের অন্যান্য অংশের চামড়ায় ছোপ ছোপ দাগ পড়া।

যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে:

  • কর্মজীবী মায়েদের জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটি নেয়ার এখনই উপযুক্ত সময়। এ বিষয়ে আপনার কর্মক্ষেত্রে যোগাযোগ করে তাদের নিয়মানুযায়ী সিদ্ধান্ত নিন। 
  • গর্ভাবস্থার এ সময়টাতে প্রি-এক্লাম্পসিয়া একটি গুরুতর সমস্যা।  এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে আমাদের এ সংক্রান্ত আর্টিকেলটি পড়তে পারেন।  

গর্ভের শিশু কীভাবে বড় হচ্ছে

৩৪ তম সপ্তাহে শিশুটি লম্বায় প্রায় ৪৫ সেন্টিমিটার দীর্ঘ হয় এবং এসময় তার ওজন হয় প্রায় ২.১ কেজি, যা ওজনে প্রায় একটি তরমুজের সমান। 

শিশুটি গর্ভের ভেতরে তার ছোটছোট পা দুটো কে বুকের কাছাকাছি এনে দলা পাকিয়ে থাকে। এই ভঙ্গিকে ‘ফিটাল পজিশন’ বলা হয়। গর্ভের অল্প জায়গার ভেতরেই সে চারদিকে নড়াচড়া করার চেষ্টা করতে থাকে, আপনি বাইরে থেকে দেখে অনেক সময় এই নড়াচড়া বুঝতে পারবেন।

গর্ভের শিশুটি যদি ছেলে হয়, তাহলে ইতিমধ্যে তার শুক্রাশয় দুটি তলপেট থেকে নেমে এসে অন্ডকোষের ভেতরে যথাস্থানে স্থাপিত হবে। শিশুটি জন্মানোর পর, প্রথম কিছুদিন তার অন্ডকোষ কিছুটা ফোলা বা আকারে বড় মনে হতে পারে। তবে পরবর্তী কিছুদিনের মধ্যেই এটি সাধারণত স্বাভাবিক হয়ে আসে।