২৩তম সপ্তাহ নিয়ে আপনার যা জানা প্রয়োজন
এই সময়ে আপনার বুকের পাঁজরে হালকা চাপ বা ব্যথা লাগতে পারে। বাড়ন্ত গর্ভকে জায়গা করে দেয়ার জন্য পাঁজরের হাড়গুলোকে কিছুটা প্রসারিত হতে হয়, যা এই ব্যথার জন্য দায়ী। এছাড়াও এসময় ফুসফুসের ওপর হালকা চাপ পড়তে পারে, ফলে আপনি কিছুটা শ্বাসকষ্ট বা হাঁফ ধরা অনুভব করতে পারেন।
এ সপ্তাহে আপনার স্তন থেকে মাঝেমাঝে সামান্য পরিমাণে তরলজাতীয় কিছু নিঃসৃত হতে পারে। এটি খুবই স্বাভাবিক, এভাবে আপনার শরীর ভবিষ্যতে সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানোর জন্য প্রস্তুতি নেয়৷
এছাড়া এসময় অন্যান্য যেসব লক্ষণ থাকতে পারে সেগুলো হল:
- বেশি ক্লান্ত লাগা,
- ঘুমের সমস্যা হওয়া,
- স্ট্রেচ মার্কস (পেটের আকার বাড়াতে থাকায় চামড়ায় যে টান পড়ে তার কারণে ফাটা দাগের মত চিহ্ন দেখা দেওয়া),
- দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া বা রক্ত পড়া,
- পেটে ব্যথা,
- কিছু ক্ষেত্রে নাক থেকে হালকা রক্ত পড়া,
- পেট ফাঁপা ও কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া,
- বদহজম ও বুক জ্বালাপোড়া করা,
- চাপ দিলে স্তনে ব্যথা অনুভব করা,
- পায়ে ব্যথা,
- অল্পতেই গরম লাগা কিংবা সামান্য গরম আবহাওয়াতেই অস্বস্তি বোধ করা বা হাঁসফাঁস করা,
- মাথা ঘুরানো,
- হাত-পায়ে পানি আসা বা ফুলে যাওয়া,
- প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া বা ইনফেকশন,
- যোনিপথে অর্থাৎ মাসিকের রাস্তায় ইনফেকশন,
- মুখের বা শরীরের অন্যান্য অংশের চামড়ায় ছোপ ছোপ দাগ পড়া,
- অনেকের ক্ষেত্রে মাথার চুল আগের চেয়ে ঘন, কালো হয়ে ওঠা,
- রক্ত চলাচল বেড়ে গিয়ে ত্বক আগের চেয়ে উজ্জ্বল বা লাবণ্যময় মনে হওয়া (একে অনেকে ‘প্রেগন্যান্সি গ্লো’ বলে থাকেন)।
যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে
- ইতিমধ্যে শিশুটি একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে এবং নির্দিষ্ট সময় ধরে জেগে থাকতে শুরু করে।শিশুর ঘুমানো ও জেগে থাকার রুটিন আপনার ব্যক্তিগত ঘুমের রুটিনের সাথে নাও মিলতে পারে। রাতে আপনার ঘুমানোর সময়ে সে অনেক নড়াচড়া করে আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। তাই শিশুটি দিনের যে সময়ে কিছুটা চুপচাপ থাকবে আপনিও তখন বিশ্রাম নেয়ার চেষ্টা করুন।
- চাকরিজীবী মায়েরা সন্তান প্রসবের মাস তিনেক আগে মাতৃত্বকালীন ছুটি’র জন্য আবেদন করে রাখতে পারেন। আপনার অফিস বা কর্মক্ষেত্রে এ বিষয়ে কী ধরনের নিয়মকানুন রয়েছে তা আগে থেকেই জেনে রাখার চেষ্টা করুন।
গর্ভের শিশু কীভাবে বড় হচ্ছে
এ সপ্তাহে আপনার শিশু লম্বায় প্রায় ২৮.৯ বা ১১.৪ ইঞ্চি সেন্টিমিটার হয়। এসময় শিশুটির ওজন হয় প্রায় ৫০০ গ্রাম বা আধা কেজি।
শিশুর ফুসফুস এ সপ্তাহে আরও সুগঠিত হয়, সে শ্বাসপ্রশ্বাসের ছন্দ আয়ত্ত করতে থাকে, যাতে জন্মের পর মুক্ত বাতাসে সে সঠিকভাবে শ্বাস নিতে পারে৷ এসময় নিজে থেকে শ্বাস নেয়ার চেষ্টা করলেও সত্যিকার অর্থে জন্মের আগ পর্যন্ত সে তার প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের পুরোটাই অমরা/গর্ভফুল বা প্লাসেন্টার মাধ্যমে মায়ের কাছ থেকেই পেয়ে থাকে।
তার কানে শোনার ক্ষমতাও আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে। এখন সে কাছের শব্দগুলো আরও স্পষ্টভাবে শুনতে পায়, এমনকি কিছুটা দূরে দরজা বন্ধ করার মত শব্দও শুনতে পায়। শিশু এখন মায়ের গলার স্বর চিনতে শুরু করে, এছাড়া মাঝে মাঝে কোন শব্দ শুনে হাত-পা ছুঁড়ে প্রতিক্রিয়াও দিতে পারে।