গর্ভকালীন সময়ে আপনার প্রতিদিনের খাবার তালিকায় সুষম, স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার রাখা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এটি গর্ভকালের বাড়তি পুষ্টির চাহিদা নিশ্চিত করে আপনার ও গর্ভের শিশুর সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করবে। গর্ভের শিশুর উপযুক্ত গঠন ও বিকাশ নিশ্চিত করার পাশাপাশি বিভিন্ন স্বাস্থ্য জটিলতা প্রতিরোধে একটি সুষম খাবার তালিকা মেনে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
গর্ভাবস্থায় খাবার তালিকা কেমন হওয়া দরকার?
গর্ভকালীন সময়ে খাবার তালিকায় একই ধরনের খাবার বেশি রাখা ঠিক নয়। প্রতিদিনই বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণে রাখার চেষ্টা করতে হবে। এতে করে সব ধরনের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করা সহজ হবে। পাশাপাশি কোনো খাবারের প্রতি একঘেয়েমিও আসবে না।
গর্ভাবস্থায় আপনার কোনো কোনো খাবারে অনেক বেশি রুচি আসতে পারে। এমন খাবারের ক্ষেত্রেও এক সাথে বেশি করে খেয়ে ফেলবেন না। চেষ্টা করবেন পরিমিত পরিমাণে খেতে।
কারও কারও ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় খাবারে অরুচি হয়। আবার কখনো বমি বমি লাগে কিংবা বুক জ্বালাপোড়া করে। খেতে তেমন ইচ্ছা করে না। এমন ক্ষেত্রে তিনবেলা অনেকখানি করে খাবার না খেয়ে দিনে ছয়বার অল্প অল্প করে খেতে পারেন।
গর্ভকালীন সময়ে শুধুমাত্র পুষ্টিকর খাবার দিয়েই আপনার পুষ্টির সুবটুকু চাহিদা পূরণ করা সম্ভব না-ও হতে পারে। আপনার ও গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সুষম ও পুষ্টিকর খাবারের পাশাপাশি কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন ও মিনারেল সেবন করা প্রয়োজন।
গর্ভাবস্থায় কোন মাসে কতটুকু বেশি খাবার খেতে হবে?
গর্ভধারণ করেছেন বলেই যে খাওয়াদাওয়া অনেক বাড়িয়ে দিতে হবে—বিষয়টি এমন নয়। গর্ভকালীন প্রথম তিন মাসে সাধারণত বাড়তি খাবারের প্রয়োজন হয় না। তবে এর পরের মাসগুলোতে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কিছুটা বেশি খাবার খেতে হবে। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর ওজন বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া যতটা সম্ভব বাদ দেওয়া উচিত।
গর্ভাবস্থায় কতটুকু অতিরিক্ত খাবার খেতে হবে সেটি খাবারে থাকা ক্যালরির সাহায্যে হিসাব করা যায়। তবে গর্ভাবস্থায় বাড়তি খাবারের বা ক্যালরির এই চাহিদা একই ধরনের খাবার বেশি পরিমাণে খেয়ে পূরণ না করে বিভিন্ন ধরনের খাবার থেকে মেটানো উচিত। প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় বৈচিত্র্য থাকলে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদানের চাহিদা পূরণ হবে।
১ মাস থেকে ৩ মাসের গর্ভবতীর খাবার তালিকা
গর্ভকালীন সময়ের প্রথম তিন মাসে তেমন একটা অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রয়োজন হয় না।
এসময়ে আপনার খাবার তালিকা তথা ক্যালরির চাহিদা আপনার উচ্চতা, ওজন ও দৈনন্দিন শারীরিক পরিশ্রমের পরিমাণসহ বেশ কিছু জিনিসের ওপরে নির্ভর করবে। ওজন বাড়তে থাকলে সেই অনুযায়ী খাবারের পরিমাণ কমিয়ে এবং ব্যায়ামের পরিমাণ বাড়িয়ে স্বাভাবিক ওজনে আসার চেষ্টা করতে পারেন।
আবার ওজন কমতে থাকলে ব্যায়াম স্বাভাবিক রেখে খাবারের পরিমাণ কিছুটা বাড়িয়ে দিতে পারেন। এসব বিষয়ে একজন রেজিস্টার্ড ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ নিন। তিনি আপনার জন্য বিশেষভাবে খাবার তালিকা প্রস্তুত করতে সাহায্য করতে পারবেন।
গর্ভবতী নারীর সারাদিনের খাবার তালিকার একটি নমুনা নিচে তুলে ধরা হয়েছে। এই তালিকাটি ১৮০০ ক্যালরির। উচ্চতা ৫ ফুট ২ ইঞ্চি, গর্ভধারণের আগের ওজন ৫৫ কেজি ও সপ্তাহে ২–৩ দিন হালকা ব্যায়াম করেন এমন নারীর জন্য এই তালিকাটি প্রযোজ্য।
খাবারের ধরন | পরিমাণ |
---|---|
ভাত (লাল চালের হলে ভালো হয়) | ২.৫–৩ কাপ (৫০০–৬০০ গ্রাম) |
গাঢ় সবুজ ও রঙিন শাক | ১–১.৫ বাটি (২৫০–৩৭৫ গ্রাম) |
হলুদ অথবা কমলা ফল ও সবজি | ১ বাটি (২৫০ গ্রাম) |
ডিম | ১টি |
দুধ | ১ গ্লাস (২৫০ গ্রাম) |
মাছ অথবা মাংস | ১ টুকরা (৫০ গ্রাম) |
ঘন ডাল | ২ বাটি (৫০০ গ্রাম) |
উল্লেখ্য, এই তালিকার খাবারগুলো রান্না করার সময়ে প্রয়োজনে সীমিত পরিমাণে তেল ব্যবহার করা হয়েছে। অতিরিক্ত রান্নার তেল ব্যবহার খাবারের পুষ্টিগুণ তেমন না বাড়ালেও ক্যালরির পরিমাণ বেশ খানিকটা বাড়িয়ে দিতে পারে।
৪ মাস থেকে ৯ মাসের গর্ভবতীর খাবার তালিকা
গর্ভের শিশুর বেড়ে ওঠার সাথে সাথে গর্ভবতী নারীর খাবারের চাহিদাও ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। তাই গর্ভধারণের প্রথম তিন মাসের পর থেকে খাওয়াদাওয়ার পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বাড়াতে হয়। একজন স্বাভাবিক ওজনের ৪ মাস থেকে ৬ মাসের গর্ভবতীর প্রথম তিন মাসের চেয়ে প্রতিদিন প্রায় ৩৪০ ক্যালরি পরিমাণ অতিরিক্ত খাবার খাওয়া প্রয়োজন।[১]
অন্যদিকে একজন স্বাভাবিক ওজনের ৭ মাস থেকে ৯ মাসের গর্ভবতীকে অন্যান্য সময়ের তুলনায় অতিরিক্ত প্রায় ৪৫০ ক্যালরির খাবার খেতে হবে।[২] তবে আপনার ওজন বেশি হলে আরেকটু কম পরিমাণে অতিরিক্ত খাবার খেতে হবে। এই বিষয়ে আপনার ডাক্তারের কাছ থেকে বিস্তারিত পরামর্শ নিন।[৩]
অতিরিক্ত খাবারের চাহিদা পূরণে প্রতিদিন তিন বেলার খাবার খাওয়ার পাশাপাশি দিনে আরও দুই বার হালকা খাবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন। খাবারটি হতে পারে একটি ফল, ৫–৬টি বাদাম অথবা আধা কাপ টক দই। এ ছাড়াও ক্ষুধা লাগলে আপনি যেকোনো সময়েই পরিমিত পরিমাণে স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে নিতে পারেন।
খাবারে ক্যালরির হিসেব কীভাবে আন্দাজ করবেন?
আমরা সচরাচর খাই এমন কিছু খাবারের ক্যালরির পরিমাণ নিচের তালিকায় তুলে ধরা হয়েছে। আপনার গর্ভকালীন মাস অনুযায়ী অতিরিক্ত ক্যালরির চাহিদা পূরণে এই তালিকা থেকে বিভিন্ন খাবার বেছে নিতে পারেন—
খাবার | ক্যালরির পরিমাণ (প্রায়) |
---|---|
১টি মাঝারি কলা | ৮০ ক্যালরি |
১টি সেদ্ধ ডিম | ৮০ ক্যালরি |
১টি বড় খেজুর | ৭০ ক্যালরি |
আধা কাপ দুধ | ৮০ ক্যালরি |
তেল ছাড়া আটার বা লাল আটার রুটি (৬ ইঞ্চি আকারের) | ৯০ ক্যালরি |
১টি মাল্টা | ৮০ ক্যালরি |
১টি মাঝারি আপেল | ১০০ ক্যালরি |
১ স্লাইস আটার (লাল আটা হলে ভাল) তৈরি বা হোলগ্রেইন পাউরুটি (৫০ গ্রাম) | ১০০ ক্যালরি |
আধা কাপ শুকনো ওটস | ১৫০ ক্যালরি |
এক চা চামচ তেল দিয়ে রান্না করা আধা কাপ সবজি | ৯০ ক্যালরি |
সাধারণ টক দই (১০০ গ্রাম) | ৮০ ক্যালরি |
সতর্কতা
গর্ভাবস্থায় বিভিন্নভাবে ডিম খেতে পারেন। তবে মনে রাখতে হবে যেন সেটি পুরোপুরি সিদ্ধ বা রান্না হয়। দুধের ক্ষেত্রে পাস্তুরিত দুধ বেছে নিতে হবে। এই বিষয়ে আর্টিকেলের পরবর্তী অংশে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।
উল্লেখ্য, আপনার গর্ভে যমজ অথবা একসাথে দুইয়ের বেশি বাচ্চা থাকলেই যে আপনাকে সে অনুযায়ী বেশি করে অতিরিক্ত খাবার খেতে হবে, এমনটা নয়। সাধারণত গর্ভে যমজ শিশু থাকলে দৈনিক প্রায় ৬০০ ক্যালরি সমমানের বাড়তি খাবার খেতে হয়। আর একত্রে তিনটি সন্তান গর্ভধারণ করলে দৈনিক প্রায় ৯০০ ক্যালরি অতিরিক্ত খাবার খেতে হয়।[৪]
গর্ভাবস্থায় কী কী খাওয়া যাবে না?
গর্ভকালীন সময়ে অতিরিক্ত তেল-চর্বি ও চিনিযুক্ত খাবার খাওয়া ঠিক নয়। যেমন: ভাজাপোড়া, পরোটা, মিষ্টি ও কেক-পেস্ট্রি। এগুলোতে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানের অভাব থাকে। অন্যদিকে এতে স্যাচুরেটেড বা ক্ষতিকর ফ্যাট থাকতে পারে।
এসব খাবার বেশি খেলে ওজন বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি হার্টের নানান ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। এ ছাড়াও অতিরিক্ত চিনিজাতীয় খাবার খেলে দাঁত ক্ষয় হয়।
সবমিলিয়ে মা ও গর্ভের শিশুর নানান জটিলতা দেখা দিতে পারে। এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে—
- মাখন
- ঘি-ডালডা
- ক্রিম
- চকলেট
- ভাজাপোড়া
- চিপস
- বিস্কুট
- কেক
- পেস্ট্রি
- আইসক্রিম
- পুডিং
- কোমল পানীয়। যেমন: কোলা
এ ছাড়া এগুলো সাধারণত ক্যালরিবহুল হয়। ফলে একদিকে যেমন প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাব দেখা দিতে পারে, তেমনি অন্যদিকে ওজন বেড়ে গিয়ে গর্ভকালীন ডায়াবেটিসসহ আপনার ও গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্যের নানান মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।
গর্ভকালীন সময়ে এই ধরনের খাবার যতটুকু না খেলেই নয়, ঠিক ততটুকুই খাবেন। এগুলোর পরিবর্তে পর্যাপ্ত ফাইবার সমৃদ্ধ শর্করা বেছে নিন। যেমন: লাল আটার রুটি ও লাল চালের ভাত। সেই সাথে খাবারের তালিকায় কিছু পরিমাণে স্বাস্থ্যকর তেলযুক্ত খাবার রাখবেন। যেমন: অলিভ অয়েল, বিভিন্ন ধরনের বাদাম ও ইলিশ, পুঁটি ও চাপিলার মতো তৈলাক্ত মাছ।
এসময়ে কিছু কিছু খাবার খাওয়া পুরোপুরিভাবে বাদ দিতে হবে। কেননা এসব খাবার আপনার গর্ভের শিশুর ক্ষতি করতে পারে।[৫] যেমন—
- গরু, ছাগল ও ভেড়ার অপাস্তুরিত দুধ
- অপাস্তুরিত দুধ দিয়ে তৈরি সব ধরনের খাবার
- কাঁচা অথবা ভালোভাবে সিদ্ধ না হওয়া মাছ, মাংস, ডিম ও দুধ
- কাঁচা অথবা অর্ধসিদ্ধ সামুদ্রিক মাছ দিয়ে তৈরি খাবার। যেমন: সুশি
- ভালোভাবে সিদ্ধ না হওয়া ফ্রোজেন বা প্রক্রিয়াজাত মাংস। যেমন: সসেজ, সালামি ও পেপারনি
- অতিরিক্ত ক্যাফেইন জাতীয় পানীয়। যেমন: চা-কফি, এনার্জি ড্রিংক ও ক্যাফেইনযুক্ত কোমল পানীয়
- মদ বা অ্যালকোহল জাতীয় পানীয়
- আপনার অ্যালার্জি হয় এমন কোনো খাবার। যেমন: চিনাবাদাম
- হারবাল বা ভেষজ ঔষধ
গর্ভকালীন সময়ে বেশি কলিজা খাওয়া এড়িয়ে চলবেন। কেননা কলিজাতে অনেক ভিটামিন এ থাকে, আর অতিরিক্ত ভিটামিন এ গর্ভের শিশুর জন্য ক্ষতিকর। তবে মাঝে-মধ্যে (যেমন: সপ্তাহে একবার অথবা তার চেয়েও কম) ৫০–৭০ গ্রাম রান্না করা কলিজা খাওয়া যেতে পারে। এই পরিমাণে কলিজা খাওয়া গর্ভের শিশুর জন্য তেমন ঝুঁকির কারণ নয়। কলিজা গর্ভাবস্থার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ফলিক এসিড ও আয়রনের ভালো উৎস।
গর্ভাবস্থায় কী খাবেন?
গর্ভকালীন সময়ে আপনাকে প্রতিদিন ছয় ধরনের খাবার অবশ্যই খেতে হবে।[৬] এই ছয় ধরনের খাবার হলো—
- শর্করা জাতীয় খাবার। যেমন: ভাত ও রুটি
- গাঢ় সবুজ ও রঙিন শাক
- রঙিন ফল ও সবজি
- ডিম
- দুধ জাতীয় খাবার
- মাছ, মাংস ও ডাল
এসবের পাশাপাশি প্রতিদিন যেকোনো ধরনের টক জাতীয় ফল খাবেন।[৭] যেমন: আমলকি, আমড়া, জাম, জলপাই, লেবু, জাম্বুরা, কমলা ও মাল্টা। এগুলোতে ভিটামিন সি থাকে। ভিটামিন সি আপনার ও গর্ভের শিশুর ত্বক, রক্তনালী ও হাড় সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে। এ ছাড়া শরীরকে আয়রন শোষণেও সহায়তা করবে।
শর্করা জাতীয় খাবার
আমাদের শরীরের শক্তির প্রধান উৎস হলো শর্করা জাতীয় খাদ্য। এ ছাড়াও শর্করা জাতীয় খাবারে ভিটামিন ও আঁশও পাওয়া যায়। গর্ভকালীন সময়ে মায়ের শরীরের অতিরিক্ত ক্যালরির চাহিদা মেটাতে খাবার তালিকায় শর্করা থাকা অপরিহার্য। কিছু শর্করা জাতীয় খাবার হলো—
- ভাত
- রুটি
- আলু
- সিরিয়াল বা কর্ন ফ্লেকস
- নুডলস ও পাস্তা
- ভুট্টা
- ওটস
তবে প্রক্রিয়াজাত শর্করা (যেমন: সাদা চাল ও আটা) খাওয়ার চেয়ে গোটা শস্য দানা (যেমন: লাল চাল ও লাল আটা) ও খোসাসহ আলু খাওয়া ভালো। এতে করে খাবারের পুষ্টিমান ও আঁশের পরিমাণ অটুট থাকে। আঁশ গর্ভকালীন কোষ্ঠকাঠিন্যসহ বিভিন্ন জটিলতা প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে। শর্করাজাতীয় খাবারের চাহিদার অন্তত অর্ধেক এসব গোটা শস্য দানা দিয়ে পূরণ করার চেষ্টা করবেন।
ফল ও শাকসবজি
গর্ভাবস্থায় দিনে কমপক্ষে পাঁচ পরিবেশন রঙিন ফল ও নানান ধরনের শাকসবজি খেতে হবে। কেননা এসব ফল ও শাকসবজি গর্ভকালীন সময়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন ও খনিজ লবণের চাহিদা মেটায়।
রঙিন ফল ও সবজিতে ক্যারোটিন থাকে। যা গর্ভাবস্থায় শিশুর সুস্থ ও স্বাভাবিক বেড়ে ওঠায় সাহায্য করে। এ ছাড়া ফল ও শাকসবজি আঁশজাতীয় খাবারের প্রধান উৎস।[৮] এগুলো খাবার হজমে সাহায্য করার পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতেও সাহায্য করে৷
শাকসবজি ও ফল কাঁচা কিংবা রান্না, টাটকা অথবা ফ্রোজেন—যেকোনো উপায়েই খাওয়া যেতে পারে। তবে খাওয়ার আগে অবশ্যই পরিষ্কার পানি দিয়ে সেগুলো ভালোভাবে কচলে ধুয়ে নেবেন।
আপনি গর্ভাবস্থায় প্রায় সব ধরনের শাকসবজি ও ফল খেতে পারবেন। যেমন—
শাকসবজি | ফল |
---|---|
গাজর | আম |
মিষ্টি আলু | কলা |
মিষ্টি কুমড়া | কমলা |
পালং শাক | মাল্টা |
টমেটো | জাম্বুরা |
মটরশুঁটি | বাঙ্গি |
ক্যাপসিকাম | পেয়ারা |
প্রতিবেলার খাবারে ফল ও শাকসবজির পরিমাণ বাড়ানোর একটি উপায়
আপনার খাবারের প্লেটে প্রথমেই ভাত অথবা রুটি নিবেন না। এর পরিবর্তে প্রথমে শাকসবজি আর ফল দিয়ে প্লেটের অর্ধেকটা ভরে ফেলুন। এরপর যেই অর্ধেক জায়গা ফাঁকা থাকবে, সেটিকে মনে মনে দুইভাগ করুন। এবারে ফাঁকা জায়গাতে একভাগে ভাত অথবা রুটির মতো শর্করা নিন। অন্যভাগে একটি প্রোটিন জাতীয় খাবার নিয়ে নিন। এটি হতে পারে মাছ, ডাল, মাংস অথবা ডিম।
এবারে খাওয়া শুরু করুন। চাইলে ফলটি সরিয়ে রেখে অন্য খাবারগুলো খাওয়া শেষ করার পর খেতে পারেন।
প্রোটিন জাতীয় খাবার
আপনার শিশুর শারীরিক গঠন ও বৃদ্ধির জন্য আপনাকে অবশ্যই গর্ভকালীন সময়ে প্রয়োজনীয় পরিমাণে প্রোটিন জাতীয় খাবার খেতে হবে। এমন কিছু প্রোটিন জাতীয় খাবার হলো—
- মাছ
- মাংস
- ডিম
- দুধ
- ডাল
- মটর, শিম ও মটরশুঁটি
- বাদাম
তবে মাছ, মাংস, ডিম ও দুধ খাওয়ার সময়ে এসব খাবার ঠিকমতো সিদ্ধ হয়েছে কি না সেই বিষয়ে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন। কেননা কম সিদ্ধ হলে অনেক সময়েই খাবারের সাথে জীবাণু শরীরে প্রবেশ করতে পারে। যা পরবর্তীতে আপনার ও আপনার শিশুর শরীরে ইনফেকশন থেকে শুরু করে গর্ভপাত পর্যন্ত ঘটাতে পারে।
মাংস
মাংস খাওয়ার ক্ষেত্রে চর্বি ছাড়া মাংস ও চামড়া ছাড়া হাঁস-মুরগীর মাংস খাবেন। নিয়মিত কলিজা খাওয়া এড়িয়ে চলবেন। তরকারি রান্নার সময়ে অতিরিক্ত তেল ব্যবহার না করার চেষ্টা করবেন।
যেকোনো ধরনের মাংস রান্না করার সময় তা ভালোভাবে সিদ্ধ হয়েছে কি না সেই বিষয়ে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন। অর্ধসিদ্ধ অথবা কম সিদ্ধ মাংস খাবেন না। মাংস ঠিকমতো সিদ্ধ হয়েছে কি না তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য মাংসের রং লক্ষ করতে পারেন। মাংসের রং লাল অথবা গোলাপি রয়ে গেলে তা ঠিকমতো সিদ্ধ হয়নি। এই ধরনের মাংস খাবেন না।
মাছ
আপনি গর্ভকালীন সময়ে সপ্তাহে অন্তত ২৮০ গ্রাম মাছ খাওয়ার চেষ্টা করবেন। সপ্তাহে ছয় টুকরা বড় মাছ অথবা এক থেকে দেড় বাটি ছোটো মাছের তরকারি থেকে আপনার মোটামুটি এই পরিমাণ মাছ খাওয়া হয়ে যাবে।
এই পরিমাণ মাছের মধ্যে অর্ধেক খাবেন তৈলাক্ত মাছ। কারণ তৈলাক্ত মাছে থাকে গুরুত্বপূর্ণ ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড। এটি গর্ভের শিশুর সময়ের আগেই জন্ম হয়ে যাওয়ার ঘটনা প্রতিরোধ করে।[৯] এতে শিশুমৃত্যুসহ নানান গুরুতর জটিলতার সম্ভাবনা কমিয়ে আনা সম্ভব হতে পারে। গর্ভাবস্থায় খেতে পারেন এমন কিছু তৈলাক্ত মাছ হলো—
- ইলিশ মাছ
- বাটা মাছ
- পুঁটি মাছ
- কাজলি বা বাঁশপাতা মাছ
- চাপিলা মাছ
- মহাশোল মাছ
তবে সপ্তাহে ২৮০ গ্রামের বেশি তৈলাক্ত মাছ খাবেন না। কেননা সাধারণত এসব তৈলাক্ত মাছে পানি থেকে আসা দূষিত পদার্থ (যেমন: মার্কারি বা পারদ) তুলনামুলকভাবে একটু বেশি থাকে। তাই এগুলো অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে মাছের সাথে সাথে কিছু দূষিত পদার্থও শরীরে প্রবেশ করতে পারে।[১০] এতে গর্ভের ভেতরে শিশুর বেড়ে ওঠায় প্রভাব পড়তে পারে।
গর্ভকালীন সময়ে কড মাছের তেল বা কড লিভার অয়েল খাবেন না। কেননা এতে অনেক ভিটামিন এ থাকে। অতিরিক্ত ভিটামিন এ গর্ভের শিশুর জন্য ক্ষতিকর।
দুধ
গর্ভকালীন সময়ে আপনার খাবার তালিকায় দুধ অথবা দুধের তৈরি অন্যান্য খাবার (যেমন: পনির ও দই) থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন। কেননা দুধে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান থাকে। যা আপনার শিশুর দাঁত ও হাড় গঠনে সাহায্য করে।
তবে দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার খাওয়ার সময়ে কম চর্বিযুক্ত বা লো-ফ্যাট খাবার খেলে ভালো হয়। যেমন: ১% ফ্যাটযুক্ত দুধ, স্কিমড দুধ, লো-ফ্যাট ও লো-ক্যালরি দই। এ ছাড়া কম চর্বিযুক্ত শক্ত পনির খেতে পারেন। তবে গর্ভাবস্থায় কখনোই অপাস্তুরিত দুধ অথবা পনির খাবেন না।
পানি
একজন সুস্থ-স্বাভাবিক গর্ভবতী নারীর প্রতিদিন গড়ে ২–৩ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন। কাপ কিংবা গ্লাসের হিসাবে আপনাকে সারাদিনে মোট ৮–১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে। তবে এই বিষয়ে কখনো যদি ডাক্তার কোনো বিশেষ পরামর্শ দিয়ে থাকেন তাহলে সেটিই অনুসরণ করবেন।
ভিটামিন ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান
গর্ভকালীন সময়ে নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার মাধ্যমেই সব ধরনের পুষ্টি উপাদানের চাহিদা মেটানো সম্ভব নয়। এজন্য কিছু অতিরিক্ত পুষ্টি উপাদানের ট্যাবলেট খাওয়ারও প্রয়োজনীয়তা আছে। এমন কিছু পুষ্টি উপাদান হলো—
ফলিক এসিড
সন্তান নেওয়ার চেষ্টা শুরু করার পর থেকে সন্তান জন্ম দেওয়ার তিন মাস পার হওয়া পর্যন্ত আপনাকে দৈনিক ৪০০ মাইক্রোগ্রাম ফলিক এসিড ট্যাবলেট খেতে হবে।[১১] ফলিক এসিড শিশুর ব্রেইনের গঠনে সাহায্য করার পাশাপাশি নানান ধরনের জন্মগত ত্রুটি প্রতিরোধে সাহায্য করে।
পড়ুন: গর্ভাবস্থায় ফলিক এসিড
আয়রন
গর্ভাবস্থার শুরু থেকে প্রসব পরবর্তী তিন মাস পর্যন্ত ৬০ মিলিগ্রাম করে আয়রন ট্যাবলেট সেবন করা দরকার।[১২] আয়রন গর্ভবতী মায়ের রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে সাহায্য করে।[১৩][১৪] এ ছাড়াও এটি সঠিক সময়ের পূর্বেই শিশু জন্মদান এবং স্বাভাবিকের চেয়ে কম ওজনের শিশু জন্মদানের মতো জটিলতার সম্ভাবনা কমায়।[১৫]
ক্যালসিয়াম
গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাসের পর থেকে প্রতিদিন ২ বেলা করে ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট সেবন করবেন। ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট ভরাপেটে খাওয়া ভালো।
এ ছাড়াও বিভিন্ন প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শে ভিটামিন ডি ও ভিটামিন সি-সহ আরও অনেক পুষ্টি উপাদানের ঔষধ সেবনের দরকার হতে পারে।
পড়ুন: গর্ভকালীন সময়ে ভিটামিন ও অন্যান্য পুষ্টি
গর্ভবতী মায়ের খাবার কীভাবে তৈরি করবেন?
খাবার থেকে নানান ধরনের জীবাণু মায়ের শরীরে প্রবেশ করতে পারে। যা মা ও শিশু দুইজনেরই স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। তাই গর্ভকালীন সময়ে খাবার প্রস্তুত করার সময়ে আপনাকে একটু সতর্ক থাকতে হবে। যাতে খাবার পরিষ্কার ও স্বাস্থ্যকর থাকে। এজন্য আপনি যা যা করতে পারেন—
- রান্না করার আগে এবং কাঁচা খাওয়ার আগে সব ধরনের ফল ও শাকসবজি ভালোমতো পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন। যাতে খাবারে কোনো ময়লা (যেমন: মাটির কণা) না লেগে থাকে।
- কাঁচা খাবার (যেমন: মাছ, মাংস, ডিম, শেলফিশ ও শাকসবজি) কাটা, ধোয়া অথবা রান্নার পর অবশ্যই প্লেট, থালাবাসন, রান্নার পাত্র ভালোমতো সাবান, ডিশওয়াশিং লিকুইড অথবা ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুয়ে নিবেন। সবশেষে নিজের হাতদুটোও ভালোমতো সাবান ও পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন।
- কাঁচা মাছ ও মাংস কাটার জন্য আলাদা ছুরি, বটি ও কাটার বোর্ড ব্যবহার করবেন।
- কাঁচা খাবার ও রান্না করা খাবার ফ্রিজের পৃথক তাকে আলাদা করে এবং ঢাকনা বন্ধ করা বাটিতে অথবা প্যাকেটে (যেমন: জিপলক ব্যাগে) সঠিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করবেন।
- বাইরে থেকে আনা খাবার অথবা রান্না করা খাবার ফ্রিজ থেকে বের করার পর ঠিকমতো গরম না করে খাবেন না।
- ফ্রিজে বেশিদিন সংরক্ষণ করা খাবার খাবেন না। টাটকা খাবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
সাধারণ জিজ্ঞাসা
গর্ভাবস্থায় কিটো ডায়েট করা নিরাপদ কি না সেই বিষয়ে তেমন তথ্য-প্রমাণ নেই। গর্ভবতী নারীদের ওপরে কিটো ডায়েট নিয়ে এখনো তেমন কোনো গবেষণা করা হয়নি। ইঁদুরের ওপরে করা কিছু গবেষণার ফলাফল থেকে ধারণা করা হয় যে, গর্ভকালীন সময়ে কিটো ডায়েট করলে গর্ভের শিশুর গঠন ও বিকাশ ত্রুটিপূর্ণ হতে পারে।[১৮] পাশাপাশি কিটো ডায়েটের ফলে শরীরে বিভিন্ন হরমোনের পরিমাণের তারতম্য ঘটে, যা মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। তবে এই বিষয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন।[১৯]
এ ছাড়াও কিটো ডায়েট করলে সাধারণত খাবার তালিকায় খুবই স্বল্প পরিমাণে শর্করা জাতীয় খাবার এবং সীমিত পরিমাণে প্রোটিন জাতীয় খাবার থাকে। এতে করে মায়ের খাবার তালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণের সুষম খাবারের ঘাটতি তৈরি হতে পারে।[২০] ফলে গর্ভকালীন সময়ে শিশুর স্বাভাবিক গঠন ও বিকাশ বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
এসব তথ্য ও গবেষণার ভিত্তিতে আমাদের পরামর্শ থাকবে গর্ভাবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনোভাবেই কিটো ডায়েট না করা। একান্তই কিটো ডায়েট অনুসরণ করতে হলে ডাক্তার ও অভিজ্ঞ ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ নিয়ে নিবেন।
ব্লাড সুগার বেশি হলে প্রথমে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শে চিকিৎসা নিতে হবে এবং খাবার তালিকা মেনে চলতে হবে।
পড়ুন: ডায়াবেটিক নারীর সুস্থ গর্ভধারণ
এই সময়ে সাদা ভাতের পরিবর্তে অন্যান্য স্টার্চ জাতীয় শর্করা সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। যেমন: লাল চালের ভাত, লাল আটার রুটি ও ওটস। পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে আস্ত ফল ও শাকসবজি খেতে হবে। অতিরিক্ত চিনি বা শর্করা জাতীয় খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলতে হবে।[২১]
পড়ুন: গর্ভকালীন ডায়াবেটিস
না, ডিম খেলে বাচ্চার মাথা বড় হয় না। ডিম খেলে বাচ্চার মাথা বড় হয়—এই কথার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বরং ডিমে প্রোটিনসহ মা ও গর্ভের শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় অনেক ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে। তাই গর্ভকালীন সময়ে প্রতিদিন একটি করে ডিম খাওয়ার চেষ্টা করবেন। খাওয়ার আগে সেটি পুরোপুরি সিদ্ধ হয়েছে কি না সেটি যাচাই করে নিবেন।
গর্ভকালীন সময়ে ভালোমতো সিদ্ধ করা খাসি অথবা ছাগলের মাংস নিরাপদে খেতে পারবেন। তবে গরু, খাসি ও ছাগলের মাংসে তুলনামূলকভাবে বেশি চর্বি থাকে। অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার খেলে মায়ের ওজন বাড়ার পাশাপাশি হার্টের রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই গরুর অথবা খাসির মাংস অনেক বেশি না খেয়ে পরিমিত পরিমাণে খাবেন। বেশিরভাগ সময়ে মাছ, ডিম, ডাল ও মুরগির মাংস বেছে নেওয়ার চেষ্টা করবেন। আর গরু-খাসি খাওয়ার সময়ে চর্বি ছাড়া মাংসের টুকরা খাবেন।
গর্ভাবস্থায় কাঁচা অথবা আধাকাঁচা পেঁপে না খাওয়াই ভালো। কাঁচা পেঁপেতে উচ্চমাত্রায় ল্যাটেক্স থাকে। ইঁদুরের ওপর করা গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, ল্যাটেক্স জরায়ুর শক্তিশালী সংকোচন করে থাকে।[২২] তাই বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে, কাঁচা পেঁপে খেলে সেটি গর্ভের শিশুর জন্য নিরাপদ না-ও হতে পারে। তবে এই বিষয়ে এখনও আরও অনেক গবেষণা করা প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, পাকা পেঁপে খেতে কোনো সমস্যা নেই। পাকা পেঁপে ভিটামিন সি-সহ বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদানের একটি ভালো উৎস।
গর্ভাবস্থায় আনারস খাওয়া যাবে। আনারসে প্রচুর পানি থাকে। সেই সাথে থাকে অনেকখানি ভিটামিন বি৬ ও ভিটামিন সি। ভিটামিন বি৬ ব্রেইন ও স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে সাহায্য করে,[২৩] আর ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধে এবং হাড় ও মাংস শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। তবে একেবারে অনেক বেশি আনারস না খাওয়াই ভালো, নাহলে বুক জ্বালাপোড়া হতে পারে।
অনেকে হয়তো শুনে থাকবেন যে আনারস খেলে গর্ভপাত হয়। এই ধারণার পক্ষে কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া আনারস দ্রুত প্রসব প্রক্রিয়া শুরু করতে সাহায্য করে—এমন ধারণার পক্ষেও তেমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।[২৪]