৩০তম সপ্তাহ নিয়ে আপনার যা জানা প্রয়োজন
গর্ভাবস্থার ২৯তম থেকে ৩২তম সপ্তাহে রাতে ঘুমানোর সময় পায়ে ব্যথা অনুভব করা একটি কমন সমস্যা। রাতে ঘুমানোর ক্ষেত্রে এসময় অনেকে অস্বস্তি বোধ করতে পারেন। এটি কাটিয়ে উঠতে একপাশে কাত হয়ে এবং পেটের নিচে বালিশ বা আরামদায়ক কিছু রেখে ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
গর্ভাবস্থায় অনেকের ক্ষেত্রে শরীরের বিভিন্ন জায়গায়, বিশেষ করে পেটের চারপাশের চামড়ায় চুলকানি হতে পারে। চুলকানি এড়াতে এসব জায়গায় ময়েশ্চারাইজার অর্থাৎ লোশন বা তেল মালিশ করতে পারেন। তবে খুব বেশি বা অস্বাভাবিক ধরনের চুলকানি লিভারের সমস্যা বা অন্য কোন গুরুতর সমস্যার লক্ষণ হতে পারে (যেমন ইন্ট্রাহেপাটিক কোলেস্টেসিস অফ প্রেগ্ন্যান্সি/অবস্টেট্রিক কোলেস্টেসিস)। তাই চুলকানি থাকলে প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
এই সপ্তাহের অন্যান্য লক্ষণগুলো হল:
- অনেক বেশি ক্লান্ত অনুভব করা,
- স্ট্রেচ মার্কস (পেটের আকার বাড়াতে থাকায় চামড়ায় যে টান পড়ে তার কারণে ফাটা দাগের মত চিহ্ন দেখা দেওয়া),
- দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া বা রক্ত পড়া,
- পেটে ব্যথা,
- কোমরে ব্যথা,
- ঘুমের সমস্যা হওয়া,
- কিছু ক্ষেত্রে নাক থেকে হালকা রক্ত পড়া,
- পেট ফাঁপা ও কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া,
- বদহজম,
- চাপ দিলে স্তনে ব্যথা অনুভব করা,
- পায়ে ব্যথা,
- অল্পতেই গরম লাগা কিংবা সামান্য গরম আবহাওয়াতেই অস্বস্তি বোধ করা বা হাঁসফাঁস করা,
- মাথা ঘুরানো বা মাথা ব্যথা,
- হাত-পায়ে পানি আসা বা ফুলে যাওয়া,
- প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া বা ইনফেকশন,
- যোনিপথে অর্থাৎ মাসিকের রাস্তায় ইনফেকশন,
- মুখের বা শরীরের অন্যান্য অংশের চামড়ায় ছোপ ছোপ দাগ পড়া।
যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে
হালকা ব্যায়াম বা শরীরচর্চা করা চালিয়ে যান। গর্ভাবস্থায় নিরাপদ ব্যায়ামের ধরন সম্পর্কে জানতে প্রয়োজনে একজন প্রশিক্ষকের সাহায্য নিন ।
কোন লক্ষণগুলো দেখা দেওয়ার পর প্রসববেদনা শুরু হয় জেনে নিন
যদিও হিসাব অনুযায়ী স্বাভাবিকভাবে প্রসব তথা ডেলিভারীর সময় হতে এখনো বেশ কিছুদিন বাকি আছে, তবুও এ ব্যাপারে আগে থেকেই জেনে রাখা ভালো। প্রসববেদনা ও প্রসবের প্রস্তুতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আপনার ডাক্তার বা নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের স্বাস্থ্যকর্মীর সাথে বিস্তারিত আলোচনা করে নিন। কোথায় কিভাবে ডেলিভারী হবে এ ব্যপারে পরিবারের সদস্যদের জানিয়ে রাখুন।
গর্ভের শিশু কীভাবে বড় হচ্ছে
এ সপ্তাহে আপনার শিশু লম্বায় প্রায় ৩৯.৯ সেন্টিমিটার বা প্রায় পৌনে ১৬ ইঞ্চি হয়, যা আকারে একটি বড়সড় বাঁধাকপির সমান। ওজন হয় প্রায় ১.৩ কেজি।
এখন থেকে শিশুটি তার আঙ্গুল চুষতে পারে, যা তাকে জন্মের পর মায়ের বুকের দুধ পান করার জন্য প্রস্তুত করে। তার দৃষ্টিশক্তি আরো উন্নত হতে থাকে। সে এখন বাইরের উজ্জ্বল আলোর উপস্থিতি টের পেলে কখনও কখনও প্রতিক্রিয়া তথা রিঅ্যাকশনও দিতে পারে।
তার ত্বক এতদিন ‘ভার্নিক্স’ নামের যে চিটচিটে আঠালো তরল এবং ‘লানুগো’ নামের যেসব ছোট ছোট পশম দিয়ে আবৃত ছিল, সেগুলো এসময়ে এসে কমতে শুরু করে।