গর্ভধারণের ১৯তম সপ্তাহ

১৯তম সপ্তাহ নিয়ে আপনার যা জানা প্রয়োজন

আপনি যদি প্রথমবারের মত গর্ভবতী হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি হয়তো এ সপ্তাহ থেকে গর্ভের শিশুর নড়াচড়া বুঝতে পারবেন।

প্রথম প্রথম এই নড়াচড়া এতটাই হালকাভাবে অনুভূত হবে, অনেকের মনে হয় যেন পেটের ভেতর বুদ্বুদ তৈরী হচ্ছে বা খুব ছোট কিছু নাড়াচাড়া করছে। তবে সামনের সপ্তাহ গুলোতে ধীরে ধীরে শিশুটির অস্তিত্ব একদম স্পষ্ট হতে থাকবে, তার ছোট ছোট পায়ের লাথি আপনি টের পেতে শুরু করবেন। গর্ভের শিশুর নড়াচড়া সম্পর্কে আরো জানতে আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ুন।

গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন কারণে ঘুমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেক গর্ভবতী মহিলা এসময় স্বাভাবিক ভঙ্গিতে শুয়ে আরাম পান না। আপনার ক্ষেত্রে এমনটা হলে আপনি এক পাশ হয়ে অর্থাৎ কাত হয়ে শুয়ে বা বালিশে পেটের ভার দিয়ে নিজের সুবিধামত একটি আরামদায়ক ভঙ্গিতে ঘুমানোর চেষ্টা করতে পারেন। ঘুমানোর আগে হালকা যোগব্যায়াম বা মেডিটেশনও ঘুমে সাহায্য করতে পারে। 

ঘুমের সমস্যা ছাড়াও এ সময়ে আরও যেসব লক্ষণ থাকতে পারে সেগুলো হলো:

  • স্ট্রেচ মার্কস (পেটের আকার বাড়াতে থাকায় চামড়ায় যে টান পড়ে তার কারণে ফাটা দাগের মত চিহ্ন দেখা দেওয়া),
  • বেশি ক্লান্ত লাগা ও ঘুমের সমস্যা হওয়া,
  • দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া বা রক্ত পড়া,
  • মাথা ব্যথা,
  • পেটে ব্যথা,
  • কিছু ক্ষেত্রে নাক থেকে হালকা রক্ত পড়া, 
  • পেট ফাঁপা ও কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া,
  • বদহজম ও বুক জ্বালাপোড়া করা,
  • চাপ দিলে স্তনে ব্যথা অনুভব করা,
  • পায়ে ব্যথা,
  • অল্পতেই গরম লাগা কিংবা সামান্য গরম আবহাওয়াতেই অস্বস্তি বোধ করা বা হাঁসফাঁস করা,
  • মাথা ঘুরানো,
  • হাত-পায়ে পানি আসা বা ফুলে যাওয়া,
  • প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া বা ইনফেকশন,
  • যোনিপথে অর্থাৎ মাসিক/পিরিয়ডের রাস্তায় ইনফেকশন, 
  • মুখের বা শরীরের অন্যান্য অংশের চামড়ায় ছোপ ছোপ দাগ পড়া,
  • অনেকের ক্ষেত্রে মাথার চুল আগের চেয়ে ঘন, কালো হয়ে ওঠা।

যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে: 

  • গর্ভের শিশুর নড়াচড়া বুঝতে শুরু করার পর থেকে তার নড়াচড়ার ধরন সম্পর্কে খেয়াল রাখুন। শিশুরা সাধারণত জন্মানোর আগ পর্যন্ত পেটের ভেতর একটি নির্দিষ্ট ধাঁচে বা প্যাটার্নে নিয়মিত নড়াচড়া করে থাকে। যদি আপনার মনে হয় যে শিশু স্বাভাবিকের চেয়ে কম নড়াচড়া করছে তবে দেরি না করে দ্রুত ডাক্তার দেখিয়ে নেয়া উচিত। 
  • প্রি-এক্লাম্পসিয়া গর্ভাবস্থার একটি মারাত্মক সমস্যার নাম। এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানুন ও গর্ভাবস্থার বিপদচিহ্নগুলো নিয়ে সচেতন থাকুন। 
  • গর্ভবতী অবস্থায় শরীরে আয়রনের বাড়তি চাহিদা মেটানোর জন্য বেশি বেশি আয়রনযুক্ত খাবার, যেমন মাছ, মাংস, ডাল ও সবুজ শাকসবজি খাওয়ার চেষ্টা করুন। সাথে খেতে হবে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি-যুক্ত খাবার, যেমন – টক ফল।

গর্ভের শিশু কীভাবে বড় হচ্ছে

১৯তম সপ্তাহে আপনার শিশু লম্বায় প্রায় ১৫.৩ সেন্টিমিটার বা ৬ ইঞ্চি দীর্ঘ হয়। এ সময় শিশুটির ওজন হয় প্রায় ২৪০ গ্রাম। 

এ সপ্তাহে শিশুটির পূর্ণাঙ্গ/প্রাপ্তবয়সের দাঁতগুলো তৈরি হতে থাকে। এগুলো আগে তৈরি হওয়া দুধদাঁতের পেছনের সারিতে থাকে। তবে এখনো সবগুলো দাঁতই চামড়া দিয়ে ঢাকা থাকে। জন্মের পর ৬ মাস বয়সে শিশুর প্রথম দুধ দাঁত দেখা যায়। আর এরো কয়েক বছর পরে দুধ দাঁত গুলো পড়ে গিয়ে পূর্ণাঙ্গ দাঁতগুলো ধীরে ধীরে প্রকাশিত হয়।