গর্ভধারণের ২৮তম সপ্তাহ

২৮তম সপ্তাহ নিয়ে আপনার যা জানা প্রয়োজন

মায়ের রক্তের গ্রুপ নেগেটিভ (Rh Negative) ও বাবার রক্তের গ্রুপ যদিপজিটিভ (Rh Positive) হয়ে থাকে তাহলে গর্ভের শিশুর সুরক্ষার জন্য এসময় মায়ের শরীরে একটি টীকা (Anti-D) দেওয়া হতে পারে। তাই এই সময়ে আপনার এবং আপনার গর্ভের শিশুর রক্ত পরীক্ষা করে নেয়া হবে। 

এসময় বুক জ্বালাপোড়া করা একটি কমন সমস্যা। এটি অস্বস্তিকর হলেও আসলে তেমন ক্ষতিকর নয়।

হাতে-পায়ে বা মুখে পানি আসাও এসময়ের একটি কমন ঘটনা, তবে এটি ‘প্রি-এক্লাম্পসিয়া’ নামের একটি জটিল সমস্যার লক্ষণও হতে পারে। এই রোগে আপনার রক্তচাপ বা ব্লাড প্রেশার হঠাৎ করেই অনেক বেড়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন গুরুতর সমস্যা তৈরি হতে পারে। এ ব্যাপারে সচেতন থাকুন এবং প্রয়োজনে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।

২৮তম সপ্তাহ থেকে আপনার তৃতীয় ত্রৈমাসিক বা থার্ড ট্রাইমেস্টার শুরু হয়। এ সপ্তাহেও আগের সপ্তাহগুলোর মত কিছু লক্ষণ থাকে, যেমন: 

  • অনেক বেশি ক্লান্ত অনুভব করা,
  • স্ট্রেচ মার্কস (পেটের আকার বাড়াতে থাকায় চামড়ায় যে টান পড়ে তার কারণে ফাটা দাগের মত চিহ্ন দেখা দেওয়া),
  • দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া বা রক্ত পড়া,
  • পেটে ব্যথা,
  • কোমরে ব্যথা,
  • ঘুমের সমস্যা হওয়া,
  • কিছু ক্ষেত্রে নাক থেকে হালকা রক্ত পড়া, 
  • পেট ফাঁপা ও কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া,
  • বদহজম,
  • চাপ দিলে স্তনে ব্যথা অনুভব করা,
  • পায়ে ব্যথা,
  • অল্পতেই গরম লাগা কিংবা সামান্য গরম আবহাওয়াতেই অস্বস্তি বোধ করা বা হাঁসফাঁস করা,
  • মাথা ঘুরানো বা মাথা ব্যথা,
  • হাত-পায়ে পানি আসা বা ফুলে যাওয়া,
  • প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া বা ইনফেকশন,
  • যোনিপথে অর্থাৎ মাসিকের রাস্তায় ইনফেকশন, 
  • মুখের বা শরীরের অন্যান্য অংশের চামড়ায় ছোপ ছোপ দাগ পড়া।

যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে

  • এ সপ্তাহে আপনাকে ২৮তম সপ্তাহের অ্যান্টিনেটাল চেকআপ‘ অর্থাৎ গর্ভকালীন সেবা গ্রহনের জন্য ডাক্তার বা নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের স্বাস্থ্যকর্মীর সাথে দেখা করতে হবে। এ ব্যাপারে আপনার ডাক্তারের সাথে বা হাসপাতালে কথা বলে আগে থেকেই নিশ্চিত হয়ে নিন।
  • গর্ভবতী অবস্থায় নিয়মিত হালকা ব্যায়াম বা শরীরচর্চা করলে তা মা ও শিশু দুজনের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।

গর্ভের শিশু কীভাবে বড় হচ্ছে

এ সপ্তাহে আপনার শিশু লম্বায় প্রায় ৩৭.৬ সেন্টিমিটার বা ১৪.৮ ইঞ্চি হয়, যা আকারে প্রায় একটি বড়সড় আনারসের সমান।। এ সময় শিশুর ওজন হয় প্রায় ১ কেজি।

ইতিমধ্যে শিশুর শারীরিক কাঠামো প্রায় পুরোপুরি তৈরি হয়ে যায়, এখন কেবল তা পরিণত হতে থাকে। এখন স্টেথোস্কোপের সাহায্যে তার হৃৎস্পন্দন যায়, এমনকি মায়ের পেটে কান পাতলেও মাঝেমাঝে এই হার্টবিট শোনা যাবে। শিশুর চামড়ার নিচে মেদ জমতে থাকে, সেই সাথে তার ওজনও বাড়তে থাকে। 

এ সময়ে তার মুখমন্ডলের বৈশিষ্ট্যগুলো পরিষ্কারভাবে ফুটে উঠতে শুরু করে এবং চোখে ছোট ছোট পাঁপড়ি গজাতে শুরু করে।