৩৩তম সপ্তাহ নিয়ে আপনার যা জানা প্রয়োজন
গর্ভাবস্থায় মাত্রাতিরিক্ত চা-কফি সেবন করলে তা নানাবিধ জটিলতার কারণ হতে পারে, যেমন গর্ভপাত, শিশুর ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে কমে যাওয়া, ইত্যাদি। তাই এসময় যথাসম্ভব ক্যাফেইন এড়িয়ে চলা উচিৎ। দিনে ১-২ কাপের চেয়ে বেশি চা/কফি সেবন করা যাবে না। কোক জাতীয় কোমল পানীয়তেও ক্যাফেইন থাকে। তাই গর্ভাবস্থায় দিনে ১ ক্যানের বেশি কোক পান করা উচিৎ নয়।
এ সময় বুক জ্বালাপোড়া করা একটি কমন সমস্যা। নানাবিধ হরমোনের পরিবর্তন অথবা ক্রমশ বাড়তে থাকা গর্ভের চাপে এই সমস্যা বাড়তে পারে৷ পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস ও সেই সাথে দৈনন্দিন জীবনে কিছু সাধারণ নিয়ম মেনে চললে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব৷ তবে খুব বেশি অসুস্থ বোধ করলে আপনার ডাক্তারের সাথে আলোচনা করুন।
এছাড়া এসময়ের অন্যান্য সম্ভাব্য লক্ষণ গুলো হল –
- গর্ভাশয়ের পেশীগুলোর সংকোচনের ফলে হঠাৎ হঠাৎ পেটে টান পড়ার মত অনুভূতি হওয়া (ব্রাক্সটন-হিক্স কন্ট্রাকশন),
- ঘুমের সমস্যা হওয়া,
- স্ট্রেচ মার্কস (পেটের আকার বাড়াতে থাকায় চামড়ায় যে টান পড়ে তার কারণে ফাটা দাগের মত চিহ্ন দেখা দেওয়া),
- দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া বা রক্ত পড়া,
- পেটে ব্যথা,
- পাইলসের সমস্যা দেখা দেওয়া বা হঠাৎ এই সমস্যা বেড়ে যাওয়া,
- কিছু ক্ষেত্রে নাক থেকে হালকা রক্ত পড়া,
- পেট ফাঁপা ও কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া,
- বদহজম,
- চাপ দিলে স্তনে ব্যথা অনুভব করা,
- পায়ে ব্যথা,
- অল্পতেই গরম লাগা কিংবা সামান্য গরম আবহাওয়াতেই অস্বস্তি বোধ করা বা হাঁসফাঁস করা,
- মাথা ঘুরানো বা মাথা ব্যথা,
- হাত-পায়ে পানি আসা বা ফুলে যাওয়া,
- প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া বা ইনফেকশন,
- যোনিপথে অর্থাৎ মাসিকের রাস্তায় ইনফেকশন, এবং
- মুখের বা শরীরের অন্যান্য অংশের চামড়ায় ছোপ ছোপ দাগ পড়া।
যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে
প্রসবের যাবতীয় প্রস্তুতি এখন থেকেই নিতে শুরু করুন। কোন হাসপাতাল বা ক্লিনিকে যাবেন তার ঠিকানা, প্রয়োজনীয় নম্বর সমূহ, ও প্রসবকালীন প্রয়োজনীয় সব কিছু যেমন, পাতলা সুতী কাপড়ে তৈরী ঢিলেঢালা পোষাক, স্বাস্থ্যকর শুকনা খাবার, শিশুকে পরানোর জামা, তার ডায়পার ইত্যাদি এখন থেকেই গুছিয়ে রাখতে পারেন। তাহলে পরবর্তীতে ঝামেলায় পড়তে হবেনা।
গর্ভের শিশু কীভাবে বড় হচ্ছে
৩৩তম সপ্তাহে আপনার শিশু লম্বায় প্রায় ৪৩.৭ সেন্টিমিটার দীর্ঘ হয় এবং এসময় তার ওজন হয় প্রায় ১.৯ কেজি, যা আকারে প্রায় একটি আনারসের সমান।
ইতিমধ্যেই তার মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্র পুরোপুরি সুগঠিত হয়ে যায়। শুধুমাত্র মাথার খুলির হাড় ছাড়া শরীরের অন্যান্য হাড়গুলো ধীরে ধীরে শক্ত হতে থাকে। খুলির হাড়গুলো নরম থাকায় প্রসবের সময় তার মাথা সহজে বেরিয়ে আসতে পারে৷ জন্মের বেশ কয়েক মাস পরে গিয়ে এটি ধীরে ধীরে শক্ত হতে থাকে৷