২৭তম সপ্তাহ নিয়ে আপনার যা জানা প্রয়োজন
এ সময়ে আপনি আগের চেয়ে বেশি ক্লান্ত অনুভব করতে পারেন। ঘন ঘন মাথা ঘুরানোর সমস্যাও দেখা দিতে পারে, বিশেষ করে শোয়া বা বসা অবস্থা থেকে হঠাৎ উঠে দাঁড়ানোর সময় মাথা ঘুরাতে পারে। তাই শোয়া বা বসা থেকে ধীরে ধীরে ওঠার চেষ্টা করুন।
এ সময়ে অনেকের ঘুমের মধ্যে নাক ডাকার সমস্যা দেখা দেয়। এ নিয়ে লজ্জিত বা চিন্তিত হওয়ার কোন কারণ নেই, গর্ভবতী অবস্থায় নাক ডাকা খুবই কমন ও স্বাভাবিক সমস্যা।
এসব ছাড়াও এ সপ্তাহে আপনার আর যেসব লক্ষণ থাকতে পারে সেগুলো হল:
- স্ট্রেচ মার্কস (পেটের আকার বাড়াতে থাকায় চামড়ায় যে টান পড়ে তার কারণে ফাটা দাগের মত চিহ্ন দেখা দেওয়া),
- দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া বা রক্ত পড়া,
- পেটে ব্যথা,
- কোমরে ব্যথা,
- ঘুমের সমস্যা হওয়া,
- কিছু ক্ষেত্রে নাক থেকে হালকা রক্ত পড়া,
- পেট ফাঁপা ও কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া,
- বদহজম ও বুক জ্বালাপোড়া করা,
- চাপ দিলে স্তনে ব্যথা অনুভব করা,
- পায়ে ব্যথা,
- অল্পতেই গরম লাগা কিংবা সামান্য গরম আবহাওয়াতেই অস্বস্তি বোধ করা বা হাঁসফাঁস করা,
- মাথা ঘুরানো বা মাথা ব্যথা,
- হাত-পায়ে পানি আসা বা ফুলে যাওয়া,
- প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া বা ইনফেকশন,
- যোনিপথে অর্থাৎ মাসিকের রাস্তায় ইনফেকশন,
- মুখের বা শরীরের অন্যান্য অংশের চামড়ায় ছোপ ছোপ দাগ পড়া।
যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে
- গর্ভাবস্থায় ঘুমানোর সময় একপাশ হয়ে শোয়ার চেষ্টা করুন। এসময় চিৎ হয়ে শোওয়ার কারণে অনেকের পিঠে বা কোমরে ব্যথা, বদহজম বা কোষ্ঠকাঠিন্য জাতীয় সমস্যা দেখা দিতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, এসময় একপাশ হয়ে শোওয়া গর্ভের শিশুর সুস্থতার জন্যও সহায়ক।
- গর্ভাবস্থায় ভ্রমণ করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করুন। সামনের সপ্তাহগুলোতে প্রয়োজন ছাড়া খুব দূরের ভ্রমণ বা কষ্টকর জার্নি করা থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করুন।
গর্ভের শিশু কীভাবে বড় হচ্ছে
এই সময়ে আপনার শিশু লম্বায় প্রায় ৩৬.৬ সেন্টিমিটার বা প্রায় সাড়ে ১৪ ইঞ্চি হয়, ওজন প্রায় ৮৭৫ গ্রাম৷
শিশুটির হার্টবিট বা হৃৎস্পন্দনের হার আগের চেয়ে কিছুটা কমে আসে (মিনিটে প্রায় ১৪০ বার হৃৎস্পন্দন হয়), তবে এখনও তা মায়ের হার্টবিটের চেয়ে বেশি থাকে।
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এসময় থেকে শিশুটি তার নিজের ফুসফুসের সাহায্যে সফলভাবে শ্বাস নিতে পারে। এছাড়াও তার শরীরের চামড়া এতদিন কিছুটা কুঁচকানো থাকলেও ধীরে ধীরে চামড়ার ভাঁজে মেদ জমে এখন তা অনেকটা মসৃণ হয়ে আসে। এ সময় থেকে সে ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখতেও শুরু করে।