২৬তম সপ্তাহ নিয়ে আপনার যা জানা প্রয়োজন
দুই পায়ের মাঝখানে যেই পেশীবহুল পর্দার মত অংশটি মূত্রথলী, জরায়ু (পুরুষের প্রোস্টেট) ও বৃহদান্ত্রকে (Large Intestine) সঠিক স্থানে ধরে রাখতে সাহায্য করে, তাকে পেলভিক ফ্লোর বলা হয়। গর্ভাবস্থায় বাড়তি চাপের কারণে এই পেলভিক ফ্লোর কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ে, ফলে অনেকসময়ই হাঁচি-কাশি দেয়ার সাথে সাথে কিছুটা প্রস্রাব বেড়িয়ে আসতে পারে। এমন পরিস্থিতি এড়াতে আপনি নিয়মিত হালকা কিছু ব্যায়াম করতে পারেন।
বিগত কয়েক সপ্তাহ আপনি বেশ হালকা অনুভব করলেও সামনের সপ্তাহগুলোতে আপনার গর্ভের আকার খুব দ্রুত বাড়বে। ফলে ক্লান্তি, ভারসাম্যহীনতা, পায়ে ব্যথা – এসব সমস্যাও কিছুটা বাড়তে পারে।
২৬তম সপ্তাহের কমন লক্ষণগুলো হচ্ছে:
- বেশি ক্লান্ত অনুভব করা,
- স্ট্রেচ মার্কস (পেটের আকার বাড়াতে থাকায় চামড়ায় যে টান পড়ে তার কারণে ফাটা দাগের মত চিহ্ন দেখা দেওয়া),
- ঘুমের সমস্যা হওয়া,
- দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া বা রক্ত পড়া,
- পেটে ব্যথা,
- কিছু ক্ষেত্রে নাক থেকে হালকা রক্ত পড়া,
- পেট ফাঁপা ও কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া,
- বদহজম ও বুক জ্বালাপোড়া করা,
- চাপ দিলে স্তনে ব্যথা অনুভব করা,
- পায়ে ব্যথা,
- অল্পতেই গরম লাগা কিংবা সামান্য গরম আবহাওয়াতেই অস্বস্তি বোধ করা বা হাঁসফাঁস করা,
- মাথা ঘুরানো বা মাথা ব্যথা,
- হাত-পায়ে পানি আসা বা ফুলে যাওয়া,
- প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া বা ইনফেকশন,
- যোনিপথে অর্থাৎ মাসিকের রাস্তায় ইনফেকশন,
- মুখের বা শরীরের অন্যান্য অংশের চামড়ায় ছোপ ছোপ দাগ পড়া,
- অনেকের ক্ষেত্রে মাথার চুল আগের চেয়ে ঘন, কালো হয়ে ওঠা।
যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে
- গর্ভাবস্থায় অনেকের উচ্চ রক্তচাপ অর্থাৎ হাই ব্লাড প্রেশারের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আপনার প্রেশারের সমস্যা দেখা দিচ্ছে কিনা তা খেয়াল রাখুন। নিয়মিত ডাক্তারের কাছে বা বাসায় ব্লাড প্রেশার পরিমাপ করে দেখতে পারেন।
- গর্ভাবস্থার এই সময়টাতে অনেকেরই খুব বেশি গরম লাগে বা অল্প গরমেই অস্বস্তি হয়। বিশেষত রাতের বেলায় এমনটা বেশি হয়। এ সমস্যা এড়াতে যতটা সম্ভব ঢিলেঢালা ও আরামদায়ক সুতির পোশাক পরার চেষ্টা করুন।
গর্ভের শিশু কীভাবে বড় হচ্ছে
এই সপ্তাহে আপনার শিশু লম্বায় প্রায় ৩৫.৬ সেন্টিমিটার বা ১৪ ইঞ্চি হয়; এসময় তার ওজন হয় প্রায় ৭৬০ গ্রাম বা প্রায় পৌনে এক কেজি।
শিশুটি এ সপ্তাহে প্রথমবারের মত চোখ খোলে। ধীরে ধীরে নিয়মিত চোখের পাতা ফেলতে ও খুলতে, অর্থাৎ মিটমিট (blinking) করতে শুরু করে। শিশুটির চোখের মণির রং তার জন্মের পরে বেশ কিছু সময় (সাধারণত ৩ বছর) পার হওয়া পর্যন্ত বদলাতে থাকে। এই সময়ের পরে শিশুর চোখের মণি একটি নির্দিষ্ট রং-এ এসে স্থির হয়।