গর্ভধারণের ৩৯তম সপ্তাহ নিয়ে যা জানা প্রয়োজন
গর্ভাবস্থার শেষের দিকে সপ্তাহগুলোতে গর্ভাশয়ের পেশীগুলোর সংকোচনের ফলে হঠাৎ হঠাৎ পেটে টান পড়ার মত অনুভূতি হতে পারে। এটি ২০-৩০ সেকেন্ড স্থায়ী হয় এবং এতে সাধারণত কোন ব্যথা অনুভব হয় না। ধারণা করা হয়, এই সংকোচনের মাধ্যমে আপনার গর্ভাশয় প্রসবের জন্য প্রস্তুত হয় (ব্রাক্সটন-হিক্স কন্ট্রাকসন)। কিন্তু যদি এর সাথে ব্যথা অনুভূত হয় বা একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর এমনটা হতে থাকে তবে তা নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই প্রসববেদনা শুরু হওয়ার লক্ষণ হতে পারে। তাই এমনটা হলে দেরি না করে ডাক্তার বা নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের স্বাস্থ্যকর্মী বা একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ধাত্রীর শরণাপন্ন হন।
এছাড়া এসপ্তাহে গর্ভবতী মায়েদের যে লক্ষণ গুলো থাকতে পারে সেগুলো হল:
- ঘুমের সমস্যা হওয়া,
- স্ট্রেচ মার্কস (পেটের আকার বাড়াতে থাকায় চামড়ায় যে টান পড়ে তার কারণে ফাটা দাগের মত চিহ্ন দেখা দেওয়া),
- দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া বা রক্ত পড়া,
- পেটে ব্যথা,
- পাইলসের সমস্যা দেখা দেওয়া বা হঠাৎ এই সমস্যা বেড়ে যাওয়া,
- কিছু ক্ষেত্রে নাক থেকে হালকা রক্ত পড়া,
- পেট ফাঁপা ও কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া,
- বদহজম,
- চাপ দিলে স্তনে ব্যথা অনুভব করা,
- পায়ে ব্যথা,
- অল্পতেই গরম লাগা কিংবা সামান্য গরম আবহাওয়াতেই অস্বস্তি বোধ করা বা হাঁসফাঁস করা,
- মাথা ঘুরানো বা মাথা ব্যথা,
- হাত-পায়ে পানি আসা বা ফুলে যাওয়া,
- প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া বা ইনফেকশন,
- যোনিপথে অর্থাৎ মাসিকের রাস্তায় ইনফেকশন, এবং
- মুখের বা শরীরের অন্যান্য অংশের চামড়ায় ছোপ ছোপ দাগ পড়া।
যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে
শেষ সময়টাতে যতটা সম্ভব টেনশন মুক্ত থাকার চেষ্টা করুন। পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিন৷ অনাগত সন্তান কে স্বাগত জানানোর জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুতি নিন।
কোন লক্ষণগুলো দেখা দেওয়ার পর প্রসববেদনা শুরু হয় জেনে নিন
প্রসববেদনা ও প্রসবের প্রস্তুতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আপনার ডাক্তার বা নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের স্বাস্থ্যকর্মীর সাথে বিস্তারিত আলোচনা করে নিন। কোথায় কিভাবে ডেলিভারী হবে এ ব্যপারে পরিবারের সদস্যদের জানিয়ে রাখুন। প্রসবকালীন প্রয়োজনীয় সব কিছু যেমন, পাতলা সুতী কাপড়ে তৈরী ঢিলেঢালা পোষাক, স্বাস্থ্যকর শুকনা খাবার, শিশুকে পরানোর জামা, তার ডায়পার ইত্যাদি গুছিয়ে রাখুন।
গর্ভের শিশু কীভাবে বড় হচ্ছে
৩৯ তম সপ্তাহে শিশুটি লম্বায় প্রায় ৫০.৭ সেন্টিমিটার দীর্ঘ হয় এবং এসময় তার ওজন হয় প্রায় ৩.৩ কেজি।
আগে শিশুটির ত্বক বেশ স্বচ্ছ ও পাতলা থাকলেও শেষের দিকের সপ্তাহগুলোতে এসে ত্বকের বাইরের স্তরটি বেশ দৃঢ় ও সুগঠিত হয়ে ওঠে। এটি ভেতরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ গুলোকে সুরক্ষিত রাখতে ও শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে। ‘ভার্নিক্স’ নামক চিটচিটে তরল শিশুর ত্বক আবৃত করে প্রসবের সময় তাকে সহজে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করে৷ তবে কখনো কখনো প্রসবের আগেই ‘ভার্নিক্স’ নামক পিচ্ছিল স্তরটি লোপ পেতে শুরু করে৷