গর্ভধারণের ১৪তম সপ্তাহ

১৪তম সপ্তাহ নিয়ে আপনার যা জানা প্রয়োজন

এসময় ধীরে ধীরে আপনার ওজন বাড়তে শুরু করে। গর্ভাবস্থায় আপনার ওজন কতটা বেড়েছে তা নির্ভর করে গর্ভধারণের আগে আপনার ওজন কত ছিল তার ওপর। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পুরো গর্ভাবস্থায় ১০ থেকে ১২.৫ কেজির মত ওজন বাড়ে, তবে আপনার ওজন খুব বেশি বেড়ে গেলে বা একেবারেই না বাড়লে এটি আপনার ও আপনার শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।  এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আপনার ডাক্তারের সাথে আলোচনা করে নিন।

এই সপ্তাহের কমন লক্ষণগুলো হল: 

  • দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া বা রক্ত পড়া,
  • পেটের আকার বাড়ার সাথে সাথে এর চারপাশে পেশিতে টান বা ব্যথা অনুভব করা,
  • মাথাব্যথা,
  • কিছু ক্ষেত্রে নাক থেকে হালকা রক্ত পড়া, 
  • পেট ফাঁপা ও কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া,
  • বদহজম ও বুক জ্বালাপোড়া করা,
  • চাপ দিলে স্তনে ব্যথা অনুভব করা,
  • পায়ে ব্যথা,
  • অল্পতেই গরম লাগা কিংবা সামান্য গরম আবহাওয়াতেই অস্বস্তি বোধ করা বা হাঁসফাঁস করা,
  • মাথা ঘুরানো,
  • হাত-পায়ে পানি আসা বা ফুলে যাওয়া,
  • প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া বা ইনফেকশন,
  • যোনিপথে অর্থাৎ মাসিকের রাস্তায় ইনফেকশন, 
  • মুখের বা শরীরের অন্যান্য অংশের চামড়ায় ছোপ ছোপ দাগ পড়া,
  • অনেকের ক্ষেত্রে মাথার চুল আগের চেয়ে ঘন, কালো হয়ে ওঠা।

এছাড়াও বিগত সপ্তাহগুলোর কিছু লক্ষণ এই সপ্তাহেও থেকে যেতে পারে, যেমন মর্নিং সিকনেস, মুড সুইং, ইত্যাদি। এছাড়া কখনও কখনও স্তনের বোঁটা থেকে হলুদ হলুদ তরল বের হতে পারে। এটি হল ‘কলোস্ট্রাম’ বা শালদুধ (মায়ের বুকের প্রথম দুধ)। এমনটা হলে ভয় পাওয়ার কারণ নেই, বুঝতে হবে আপনার শরীর গর্ভের শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর জন্য ধীরে ধীরে তৈরি হচ্ছে৷  তবে এই নিঃসরণ অস্বাভাবিক মনে হলে (যেমন এর সাথে রক্ত গেলে, স্তনে অসহ্য ব্যথা হলে, ত্বক লাল হয়ে গেলে, ইত্যাদি) ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে পারেন।

যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে:

গর্ভবতী অবস্থায় ধূমপানের ফলে গর্ভের শিশুর মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। তাই অবশ্যই এসময় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ধূমপান এড়িয়ে চলা উচিত৷ 

গর্ভের শিশু কীভাবে বড় হচ্ছে

১৪তম সপ্তাহে শিশুটি মাথা থেকে শুরু করে লম্বায় মোট ৮.৫ সেন্টিমিটার বা সাড়ে ৩ ইঞ্চির মতো লম্বা হয়ে থাকে। 

এ সময় শিশুটি অল্প অল্প করে অ্যামনিওটিক তরল গিলতে শুরু করে, যা শিশুর পাকস্থলীতে (পেটের ভেতরে) গিয়ে জমা হয়। পাকস্থলী থেকে এই তরল কিডনিতে যায়। এবার শুরু হয় কিডনির কাজ – কিডনি এই তরলকে মূত্র বা প্রস্রাবে পরিণত করার মাধ্যমে সচল হয়। পান করা অ্যামনিওটিক তরল এভাবে প্রস্রাব হিসেবে শরীর থেকে আবার বেড়িয়ে আসে। এভাবেই শিশুটি প্রথমবারের মত প্রস্রাব করে।

[আপনার শিশু ভ্রূণ অবস্থায় আপনার জরায়ুর ভেতরে অ্যামনিওটিক থলি নামের একটি বিশেষ থলির ভেতরে অ্যামনিওটিক তরল দিয়ে ঘেরা থাকে। এ সম্পর্কে আরও জানতে আমাদের গর্ভাবস্থার ৪র্থ সপ্তাহ নিয়ে লেখা আর্টিকেলটি পড়ুন।