গর্ভধারণের ১৫তম সপ্তাহ

১৫তম সপ্তাহ নিয়ে আপনার যা জানা প্রয়োজন

গর্ভাবস্থায় সাদাস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে, এটি সাধারণত দুশ্চিন্তার কারণ নয়। তবে যদি এই সাদাস্রাব ধরনে বা পরিমাণে অস্বাভাবিক বা গন্ধযুক্ত হয়, আর সাথে চুলকানি থাকে, অথবা প্রস্রাব করার সময় ব্যথা হয়, তাহলে আপনাকে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। এগুলো ইনফেকশনের লক্ষণ হতে পারে। এ ব্যাপারে আরও জানতে আমাদের আর্টিকেলটি পড়তে পারেন।  

এসময় গর্ভের আকার বেড়ে যাওয়ার কারণে মাংসপেশিতে টান পড়ে, ফলে অনেকে পিঠ ও কোমরে ব্যথা অনুভব করে। 

এই সপ্তাহের কমন লক্ষণগুলো হল: 

  • দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া বা রক্ত পড়া,
  • পেটের আকার বাড়ার সাথে সাথে এর চারপাশে পেশিতে টান বা ব্যথা অনুভব করা,
  • মাথাব্যথা,
  • কিছু ক্ষেত্রে নাক থেকে হালকা রক্ত পড়া, 
  • পেট ফাঁপা ও কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া,
  • বদহজম ও বুক জ্বালাপোড়া করা,
  • চাপ দিলে স্তনে ব্যথা অনুভব করা,
  • পায়ে ব্যথা,
  • অল্পতেই গরম লাগা কিংবা সামান্য গরম আবহাওয়াতেই অস্বস্তি বোধ করা বা হাঁসফাঁস করা,
  • মাথা ঘুরানো,
  • হাত-পায়ে পানি আসা বা ফুলে যাওয়া,
  • প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া বা ইনফেকশন,
  • যোনিপথে অর্থাৎ মাসিকের রাস্তায় ইনফেকশন, 
  • মুখের বা শরীরের অন্যান্য অংশের চামড়ায় ছোপ ছোপ দাগ পড়া,
  • অনেকের ক্ষেত্রে মাথার চুল আগের চেয়ে ঘন, কালো হয়ে ওঠা।

এছাড়াও বিগত সপ্তাহগুলোর কিছু লক্ষণ এই সপ্তাহেও থেকে যেতে পারে, যেমন মর্নিং সিকনেস, মুড সুইং, ইত্যাদি।

যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে: 

গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশনের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই এসময় যথাসম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে চলতে হবে।

গর্ভের শিশুর সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার পেছনে সব ধরনের ভিটামিন ও মিনারেল এর ভূমিকা রয়েছে। যেমন:

  • ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন-ডি শিশুর হাড় ও দাঁত মজবুত করে। 
  • আয়রন বা লৌহ-জাতীয় খাবার শিশুর শরীরে রক্তকোষ তৈরিতে এবং রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে সাহায্য করে৷ 
  • জিংক শিশুর অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলোর সঠিক বিকাশে ভূমিকা রাখে। 

তাই গর্ভাবস্থায় সবসময় সুষম খাদ্য খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে, যাতে মা ও শিশুর শরীরের সকল চাহিদা সঠিকভাবে পূরণ হয়।

গর্ভের শিশু কীভাবে বড় হচ্ছে

১৫তম সপ্তাহে আপনার শিশুটি লম্বায় প্রায় ১০.১ সেন্টিমিটার বা ৪ ইঞ্চি হয়ে থাকে, যা একটি মাঝারি থেকে বড় সাইজের আপেলের সমান। এসময় শিশুর ওজন হয় প্রায় ৭০ গ্রাম। 

এ সপ্তাহে শিশুটির পুরো শরীর জুড়ে এক ধরনের পাতলা লোমের আবরণ তৈরি হয়। 

শিশুটির চোখ এই সপ্তাহেও বন্ধ থাকবে, তবে শিশু এ সময়ে ধীরে ধীরে বাইরের উজ্জ্বল আলোর উপস্থিতি বুঝতে শুরু করে৷  

এই সপ্তাহ থেকে শিশুটি কানেও শুনতে আরম্ভ করবে। সে এখন থেকে মায়ের গলার স্বর ও হার্টবিট তথা হৃৎস্পন্দন শুনতে পাবে। মায়ের পেটের গুড়গুড় আওয়াজ, এমনকি বাইরের কোন উচ্চ শব্দ বা জোরে বাজতে থাকা গানও তার কান পর্যন্ত পৌঁছাবে।