গর্ভধারণের ১৫তম সপ্তাহ

এ সপ্তাহের হাইলাইটস

রেটিনয়েডযুক্ত প্রসাধনী এড়িয়ে চলুন

গর্ভাবস্থায় ত্বকে রেটিনয়েড ব্যবহার করলে তাতে গর্ভের শিশুর ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।[১][২] তাই আপনার ত্বকের যত্নে যেসব প্রসাধনী (যেমন: ক্রিম, জেল ও সিরাম) ব্যবহার করেন, সেগুলোতে রেটিনয়েড জাতীয় উপাদান আছে কি না খেয়াল করুন। থাকলে আজ থেকেই সেটা ব্যবহার বন্ধ করে বিকল্প প্রসাধনী বেছে নিন।

ব্যায়াম করা চালিয়ে যান

নিয়মিত ব্যায়াম করা চালিয়ে যান। পরিবারের অন্য কোনো সদস্য অথবা বন্ধুদের সাথে একত্রে ব্যায়াম করতে পারেন। এতে সবাই বিষয়টা উপভোগ করতে পারবেন, স্বাস্থ্যেরও উপকার হবে। সপ্তাহে অন্তত আড়াই ঘন্টা মাঝারি তীব্রতার ব্যায়াম করার চেষ্টা করবেন।

চেকআপ করিয়ে ফেলুন

এ মাসের গর্ভকালীন চেকআপ করিয়েছেন কি? না করিয়ে থাকলে সেটার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে চেকআপ করিয়ে আসুন। কোনো প্রশ্ন মাথায় আসলে সেটা লিখে নিয়ে যান। এতে চেকআপের দিন তাড়াহুড়ায় থাকলেও প্রশ্ন ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।

আয়রন-ফলিক এসিড ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যান

গর্ভের শিশুর ব্রেইন, স্নায়ুতন্ত্র, হাড় ও অন্যান্য অঙ্গ যাতে স্বাভাবিকভাবে গড়ে ওঠে, সেজন্য আগের সপ্তাহগুলোর মতো এ সপ্তাহেও প্রতিদিন আয়রন-ফলিক এসিড ট্যাবলেট ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যান।[৩][৪]

১৫ সপ্তাহে বাচ্চার বৃদ্ধি

Week-15
বেদানা
আপনার বাচ্চা এখন প্রায়
একটি একটি বেদানা
এর সমান
দৈর্ঘ্য
১০.১ সেমি
ওজন
৭০ গ্রাম

আপনার গর্ভের শিশু এ সপ্তাহে প্রায় ১০.১ সেন্টিমিটার লম্বা গিয়েছে—প্রায় একটি বেদানার সমান। এই সপ্তাহে তার ওজন প্রায় ৭০ গ্রাম হয়ে গিয়েছে।

ত্বকে লোমের আবরণ তৈরি হচ্ছে

ছোট্ট শিশুর শরীরে ইতোমধ্যেই এক ধরনের নরম তুলতুলে লোমের আবরণ তৈরি হতে শুরু করেছে।[৫][৬] একে ডাক্তারি ভাষায় ‘ল্যানুগো’ বলে।[৭] জন্মের আগে আগে এই নরম মসৃণ লোম পড়ে যায়।[৮] পরবর্তীতে নতুন লোম গজায়, যা আগের চেয়ে খানিকটা কম নরম  হয়।[৯]

শিশুর চোখের পাপড়ি তৈরি হচ্ছে

ছোট্ট সোনামণির চোখের পাপড়ি ও ভ্রু তৈরি হতে শুরু করেছে।[১০][১১] দিনে দিনে শিশুর চোখ আরও বিকশিত হচ্ছে।[১২]

শিশুর দাঁত তৈরি হচ্ছে

অবাক করা বিষয় হলো, গর্ভাবস্থাতেই আপনার শিশুর স্থায়ী দাঁত অর্থাৎ দুধ দাঁত পড়ে যাওয়ার পর যে নতুন দাঁত ওঠে—সেগুলোও তৈরি হতে থাকে।[১৩] তবে এই দাঁত মাড়ির ভেতরে থেকে যায়। পরবর্তীতে নির্দিষ্ট সময়ে এই দাঁত বাইরে বেরিয়ে আসে।

১৫ সপ্তাহে মায়ের শরীর

গর্ভধারণের ১৫তম সপ্তাহ

আপনার ত্বকে এখন বেশ কিছু পরিবর্তন লক্ষ করতে পারেন। গর্ভাবস্থার স্বাভাবিক পরিবর্তনের কারণে এমনটা দেখা দিতে পারে।

ত্বকে দাগ পড়া

আপনার ত্বকে গাঢ় বর্ণের ছোপের মতো দাগ লক্ষ করতে পারেন। গালে, কপালে, নাকে, থুতনিতে, বা চোয়ালের দিকে গাঢ় ছোপ ছোপ হতে পারে।[১৪] তাছাড়াও ঘাড়ে, স্তনের বোঁটায়, উরুর ভেতরের দিকে, যৌনাঙ্গের আশেপাশে গাঢ় দাগ দেখা দিতে পারে। গর্ভাবস্থায় অনেকের ক্ষেত্রেই এমনটা দেখা দেয়।[১৫] এগুলো নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। প্রসবের পর এসব দাগ সাধারণত নিজে থেকেই ধীরে ধীরে হালকা হয়ে যায়।[১৬]

চুলকানি

গর্ভাবস্থায় আপনার শরীরে চুলকানি হতে পারে।[১৭] কিছু সহজ টিপস মেনে চুলকানি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন। যেমন, জামা-কাপড়ের সাথে ত্বকের ঘষা লাগলে চুলকানি বেড়ে যেতে পারে। এজন্য সুতি কাপড়ের ঢিলেঢালা ও আরামদায়ক পোশাক বেছে নিন। সুতি কাপড়ের ভেতর দিয়ে বাতাস চলাচল করতে পারে। তাই আপনার বেশি আরাম লাগতে পারে।

তবে আপনার যদি হাত ও পায়ের তালু চুলকায় এবং রাতে চুলকানি বেড়ে যায়, তাহলে সেটা গর্ভাবস্থার বিশেষ লিভারের রোগের লক্ষণ হতে পারে।[১৮] তাই দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

রেটিনয়েডযুক্ত প্রসাধনী এড়িয়ে চলা

গর্ভাবস্থায় রেটিনয়েড সমৃদ্ধ ক্রিম, জেল, বা অন্য কোনো প্রসাধনী এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়।[১৯][২০] কারণ ত্বকে রেটিনয়েড ব্যবহার করলে তাতে গর্ভের শিশুর ক্ষতি হওয়ার একটা সম্ভাবনা থাকে।[২১][২২] আপনার ত্বকের যত্নে যেসব প্রসাধনী ব্যবহার করেন, সেগুলোতে রেটিনয়েড জাতীয় উপাদান আছে কি না খেয়াল করুন এবং থাকলে বিকল্প প্রসাধনী বেছে নিন।

তিলে পরিবর্তন হওয়া

গর্ভাবস্থায় ত্বকে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন হয়। এর মধ্যে অনেকগুলোই গর্ভাবস্থার জন্য স্বাভাবিক। তবে কিছু পরিবর্তনের বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।[২৩] যেমন, আপনার যদি আগে থেকে কোনো তিল থাকে এবং সেটার আকারে বড় হতে থাকে, আকৃতিতে পরিবর্তন আসে কিংবা রঙ বদলাতে থাকে, তাহলে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।[২৪] এটা ত্বকের ক্যান্সারের মত গুরুতর রোগের লক্ষণ হতে পারে।

শরীরচর্চা বাড়িয়ে দেওয়া

এই মাসে আপনি হয়তো আগের চেয়ে বেশি চনমনে অনুভব করছেন। এই শক্তিকে কাজে লাগান। ব্যায়ামের পরিমাণ যতখানি সম্ভব বাড়িয়ে দিন। ব্যায়াম আপনাকে ও গর্ভের শিশুকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে। আপনার গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাবে এবং সিজারের সম্ভাবনাও কমাবে।[২৫][২৬]

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গর্ভবতী নারীদের সপ্তাহে অন্তত আড়াই ঘন্টা মাঝারি তীব্রতার অ্যারোবিক ব্যায়াম করার সুপারিশ করে। এমন ব্যায়ামের মধ্যে রয়েছে দ্রুত হাঁটা ও সাইকেল চালানো। এজন্য দিনে অন্তত ৩০ মিনিট করে সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন এই ধরনের ব্যায়াম করবেন।[২৭] তবে ব্যায়ামের অভ্যাস না থাকলে অল্প অল্প করে শুরু করবেন।

অন্যান্য লক্ষণ

আপনার এ সপ্তাহে আগের সপ্তাহগুলোর মতো আরও যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো—

এ ছাড়া গর্ভাবস্থার প্রথমদিকের কিছু লক্ষণ থেকে যেতে পারে। যেমন—

যোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া। এমন হলে অবশ্যই দ্রুত ডাক্তার দেখাবেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটা কোনো মারাত্মক কারণে হয় না। তবে কখনো কখনো এটা গর্ভপাতের একটা লক্ষণ হতে পারে

এ সপ্তাহে বাবার করণীয়

চুলকানি কমাতে ছোট্ট সাহায্য করুন

এসময়ে আপনার সঙ্গীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে চুলকানির সমস্যা হতে পারে।[২৮] সেক্ষেত্রে আপনি তাকে একটি ছোট্ট সাহায্য করতে পারেন। আপনি কয়েক টুকরো বরফ তোয়ালে কিংবা গামছা দিয়ে পেঁচিয়ে শিশুর মাকে এগিয়ে দিতে পারেন। চুলকানির স্থানে ঠাণ্ডা কিছু ধরে লাগলে তিনি কিছুটা আরাম পেতে পারেন।[২৯]

শিশুর মাকে বাহ্যিক পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নিতে সাহায্য করুন

এসময়ে আপনার সঙ্গীর ত্বকে কিছু দাগ পড়তে পারে, মুখে মেছতার মতো বাদামি রঙের ছোপ ছোপ দাগ দেখা যেতে পারে। গর্ভাবস্থায় এসব সাময়িক পরিবর্তন আসা স্বাভাবিক। শিশুর মা আয়নায় নিজের চেহারায় এসব পরিবর্তন দেখে বিচলিত হয়ে পড়তে পারেন।

তিনি যখন আপনার সাথে তার মনের অবস্থা ভাগাভাগি করে নিবেন, তখন তাকে বোঝানোর চেষ্টা করুন যে এসব পরিবর্তন খুব স্বাভাবিক। সহানুভূতি দিয়ে তাকে এসবের সাথে মানিয়ে নিতে সাহায্য করুন।

একসাথে ব্যায়াম করুন
যারা গর্ভাবস্থায় ব্যায়াম করেন, তাদের সিজারের প্রয়োজন কম হয় এবং নরমাল ডেলিভারির সম্ভাবনা বেড়ে যায়।[৩০] এ ছাড়া সময়ের আগে সন্তান প্রসব হওয়া ও শিশুর ওজন কম হওয়ার সম্ভাবনা কমে আসে।[৩১] নিয়মিত ব্যায়াম শিশুর মায়ের মন-মেজাজ ফুরফুরে রাখতে, ভালো ঘুম হতে ও সবমিলিয়ে সুস্থ থাকতে সাহায্য করবে।

গর্ভাবস্থায় সপ্তাহে অন্তত ২.৫ ঘন্টা মাঝারি তীব্রতার অ্যারোবিক ব্যায়াম করা প্রয়োজন।[৩২] তাই সঙ্গীকে নিয়মিত ব্যায়াম করতে উৎসাহ দিন। সম্ভব হলে দুজনে একসাথে ব্যায়াম করুন। একসাথে দ্রুত হাঁটতে বের হতে পারেন। এতে একত্রে কিছু ভালো সময় কাটানো হবে। আপনার সঙ্গীও হয়তো তখন ব্যায়াম করতে বেশি আগ্রহী হবে।

নতুন করে ব্যায়াম শুরু করলে একটু চ্যালেঞ্জিং মনে হতে পারে। সেক্ষেত্রে ধীরে ধীরে সহনশীলতা বাড়াতে চেষ্টা করুন।

গর্ভকালীন চেকআপের সময়সূচী জেনে রাখুন

আপনি কি গর্ভকালীন চেকআপের সময়সূচী জানেন? সময়সূচী জানা থাকলে চেকআপের জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়া, টাকাপয়সা গুছিয়ে রাখা, যাতায়াতের ব্যবস্থা করা, ও প্রয়োজনে কর্মক্ষেত্র থেকে কয়েক ঘন্টার জন্য ছুটি নেওয়া—এসব আগে থেকেই পরিকল্পনা করে রাখতে পারবেন।

সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে গর্ভাবস্থার ২৮তম সপ্তাহ পর্যন্ত শিশুর মাকে মাসে একবার করে চেকআপে যেতে হবে। এরপর ৩৬তম সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতি ২ সপ্তাহে একবার, তারপর প্রসবের আগ পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে একবার চেকআপে যেতে হবে।

(৩২)

  1. Browne, Hannah, et al. “Retinoids and Pregnancy: An Update.” The Obstetrician & Gynaecologist, vol. 16, no. 1, Jan. 2014, pp. 7–11.
  2. European Medicines Agency. “Updated Measures for Pregnancy Prevention during Retinoid Use.” EMA, 17 Sept. 2018, https://www.ema.europa.eu/en/news/updated-measures-pregnancy-prevention-during-retinoid-use. Accessed 16 June 2023.
  3. World Health Organization. Guideline: Daily Iron and Folic Acid Supplementation in Pregnant Women. WHO, 2012, pp. 3–5.
  4. World Health Organization. WHO Recommendations on Antenatal Care for a Positive Pregnancy Experience. WHO, 2016.
  5. Muller, M., et al. “Embryology of the Hair Follicle.” Early Human Development, vol. 26, no. 3, Oct. 1991, pp. 159–66.
  6. Moore, Keith L., et al. “Integumentary System.” The Developing Human: Clinically Oriented Embryology, Saunders, 2019.
  7. Schoenwolf, Gary C., et al.“Development of the Skin and Its Derivatives.” Larsen’s Human Embryology, Elsevier Health Sciences, 2021.
  8. Sadler, T. W. “Integumentary System.” Langman’s Medical Embryology, Lippincott Williams & Wilkins, 2022, pp. 370-76.
  9. Carlson, Bruce M. “Integumentary, Skeletal, and Muscular Systems.” Human Embryology and Developmental Biology, Elsevier, 2019.
  10. Schoenwolf, Gary C., et al.“Development of the Skin and Its Derivatives.” Larsen’s Human Embryology, Elsevier Health Sciences, 2021.
  11. Dawber, Rodney P. R. “The Embryology and Development of Human Scalp Hair.” Clinics in Dermatology, vol. 6, no. 4, Oct. 1988, pp. 1–6.
  12. Moore, Keith L., et al. “Development of Eyes and Ears.” The Developing Human: Clinically Oriented Embryology, Saunders, 2019.
  13. Sadler, T. W. “Head and Neck.” Langman’s Medical Embryology, Lippincott Williams & Wilkins, 2022.
  14. Geraghty, Laurel Naversen, and Miriam Keltz Pomeranz. “Physiologic Changes and Dermatoses of Pregnancy.” International Journal of Dermatology, vol. 50, no. 7, June 2011, pp. 771–82.
  15. Jeon, C., et al. “Dermatologic Conditions in Patients of Color Who Are Pregnant.” International Journal of Women’s Dermatology, vol. 3, no. 1, Mar. 2017, pp. 30–36.
  16. Pomeranz, Miriam Keltz. “Maternal Adaptations to Pregnancy: Skin and Related Structures.” UpToDate, May 2023, https://www.uptodate.com/contents/maternal-adaptations-to-pregnancy-skin-and-related-structures. Accessed 16 June 2023.
  17. Kenyon, A. P., et al. “Pruritus in Pregnancy: A Study of Anatomical Distribution and Prevalence in Relation to the Development of Obstetric Cholestasis.” Obstetric Medicine, vol. 3, no. 1, Mar. 2010, pp. 25–29.
  18. Girling, Joanna, et al. “Intrahepatic Cholestasis of Pregnancy.” BJOG: An International Journal of Obstetrics & Gynaecology, vol. 129, no. 13, Aug. 2022.
  19. Browne, Hannah, et al. “Retinoids and Pregnancy: An Update.” The Obstetrician & Gynaecologist, vol. 16, no. 1, Jan. 2014, pp. 7–11.
  20. Bozzo, Pina, et al. “Safety of Skin Care Products during Pregnancy.” Canadian Family Physician, vol. 57, no. 6, June 2011.
  21. Browne, Hannah, et al. “Retinoids and Pregnancy: An Update.” The Obstetrician & Gynaecologist, vol. 16, no. 1, Jan. 2014, pp. 7–11.
  22. European Medicines Agency. “Updated Measures for Pregnancy Prevention during Retinoid Use.” EMA, 17 Sept. 2018, https://www.ema.europa.eu/en/news/updated-measures-pregnancy-prevention-during-retinoid-use. Accessed 16 June 2023.
  23. Bieber, Amy Kalowitz, et al. “Pigmentation and Pregnancy.” Obstetrics & Gynecology, vol. 129, no. 1, Jan. 2017, pp. 168–73.
  24. Bieber, Amy Kalowitz, et al. “Nevi and Pregnancy.” Journal of the American Academy of Dermatology, vol. 75, no. 4, Oct. 2016, pp. 661–66.
  25. Domenjoz, Iris, et al. “Effect of Physical Activity during Pregnancy on Mode of Delivery.” American Journal of Obstetrics and Gynecology, vol. 211, no. 4, Oct. 2014, p. 401.e1-401.e11.
  26. “ACOG Committee Opinion No. 804: Physical Activity and Exercise During Pregnancy and the Postpartum Period.” ACOG, Apr. 2020, https://www.acog.org/clinical/clinical-guidance/committee-opinion/articles/2020/04/physical-activity-and-exercise-during-pregnancy-and-the-postpartum-period. Accessed 27 Nov. 2022.
  27. World Health Organization. “Physical Activity.” WHO, 5 Oct. 2022, https://www.who.int/news-room/fact-sheets/detail/physical-activity. Accessed 16 June 2023.
  28. Kenyon, A. P., et al. “Pruritus in Pregnancy: A Study of Anatomical Distribution and Prevalence in Relation to the Development of Obstetric Cholestasis.” Obstetric Medicine, vol. 3, no. 1, Mar. 2010, pp. 25–29.
  29. “Scenario: Management of itch in pregnancy without rash” NICE, https://cks.nice.org.uk/topics/itch-in-pregnancy/management/itch-without-rash. Accessed 16 June 2023.
  30. “ACOG Committee Opinion No. 804: Physical Activity and Exercise During Pregnancy and the Postpartum Period.” ACOG, Apr. 2020, https://www.acog.org/clinical/clinical-guidance/committee-opinion/articles/2020/04/physical-activity-and-exercise-during-pregnancy-and-the-postpartum-period.
  31. Berghella, Vincenzo, and Gabriele Saccone. “Exercise in Pregnancy!” American Journal of Obstetrics and Gynecology, vol. 216, no. 4, Apr. 2017, pp. 335–37.
  32. World Health Organization. “Physical Activity.” WHO, 5 Oct. 2022, https://www.who.int/news-room/fact-sheets/detail/physical-activity. Accessed 16 June 2023.