১৬তম সপ্তাহ নিয়ে আপনার যা জানা প্রয়োজন
সাধারণত গর্ভবতী অবস্থার প্রথম ৩ মাসের চেয়ে এই সময়ে মায়েরা অনেকটাই ভালো অনুভব করে থাকেন। তারপরও এসময় কিছু কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা থেকেই যায়, বিশেষ করে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা গর্ভাবস্থার যে কোন সময়ই দেখা দিতে পারে৷ তাই নিয়মিত প্রচুর পরিমাণে পানি ও আঁশসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। সেই সাথে হালকা ব্যায়ামের অভ্যাস রাখার চেষ্টা করুন৷
এই সপ্তাহের কমন লক্ষণগুলো হল:
- দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া বা রক্ত পড়া,
- পেটের আকার বাড়ার সাথে সাথে এর চারপাশে পেশিতে টান বা ব্যথা অনুভব করা,
- মাথাব্যথা,
- কিছু ক্ষেত্রে নাক থেকে হালকা রক্ত পড়া,
- পেট ফাঁপা ও কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া,
- বদহজম ও বুক জ্বালাপোড়া করা,
- চাপ দিলে স্তনে ব্যথা অনুভব করা,
- পায়ে ব্যথা,
- অল্পতেই গরম লাগা কিংবা সামান্য গরম আবহাওয়াতেই অস্বস্তি বোধ করা বা হাঁসফাঁস করা,
- মাথা ঘুরানো,
- হাত-পায়ে পানি আসা বা ফুলে যাওয়া,
- প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া বা ইনফেকশন,
- যোনিপথে অর্থাৎ মাসিকের রাস্তায় ইনফেকশন,
- মুখের বা শরীরের অন্যান্য অংশের চামড়ায় ছোপ ছোপ দাগ পড়া,
- অনেকের ক্ষেত্রে মাথার চুল আগের চেয়ে ঘন, কালো হয়ে ওঠা।
এছাড়াও বিগত সপ্তাহগুলোর কিছু লক্ষণ এই সপ্তাহেও থেকে যেতে পারে, যেমন মর্নিং সিকনেস, মুড সুইং, ইত্যাদি।
যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে:
গর্ভাবস্থায় একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা খুব জরুরি। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আপনার ডাক্তার, নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের স্বাস্থ্যকর্মী বা একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ মেনে চলুন।
গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশনের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। এসময় আপনার শরীরে হেপাটাইটিস বি, এইডস, সিফিলিস বা অন্য কোন ইনফেকশন আছে কি না তা জানতে ডাক্তার আপনাকে কিছু রক্ত পরীক্ষার পরামর্শ দিতে পারেন। সেই সাথে আপনার প্রস্রাবও পরীক্ষা করতে হতে পারে।
গর্ভের শিশু কীভাবে বড় হচ্ছে
১৬তম সপ্তাহে শিশুটি প্রায় ১১.৬ সেন্টিমিটার বা সাড়ে চার ইঞ্চি থেকে সামান্য বেশি লম্বা হয়,যা মোটামুটি মাঝারি থেকে বড় আকৃতির একটি পেয়ারার সমান। এ সময় তার ওজন হয় প্রায় ১০০ গ্রাম।
এই সপ্তাহ থেকেই শিশুটি মুখের পেশিগুলো নাড়াতে শুরু করে। এভাবে তার প্রথম চেহারার অভিব্যক্তি (facial expression) অর্থাৎ মুখের মাংসপেশীগুলোর সাহায্যে অনুভূতি প্রকাশের শুরু হয়। তবে শিশুটি এখনই এই অভিব্যক্তি নিজে নিজে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।
সেই সাথে শিশুটির স্নায়ুতন্ত্র (Nervous system – যা মূলত বোধ-বুদ্ধির সাথে জড়িত) বিকশিত হতে থাকে। এ পর্যায়ে শিশু তার হাত-পায়ের পেশিগুলোও বাঁকাতে পারে। শিশুটি তার হাত মুষ্টিবদ্ধ অর্থাৎ মুঠো করতে পারে এবং এক হাত দিয়ে অন্য হাতকে ধরতে পারে।
আর্টিকেলটি লেখা ও সম্পাদনায় কাজ করেছেন: সামিয়া আফরিন এবং ডা. ইমা ইসলাম।