হার্টের নিজস্ব রক্ত সরবরাহ হঠাৎ কোনো কারণে বাধাগ্রস্ত হলে হার্ট অ্যাটাক হয়। রক্ত সরবরাহ বন্ধ থাকলে হার্টের পেশিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এক পর্যায়ে আক্রান্ত পেশিগুলো অকেজো হতে শুরু করে। সময়মতো চিকিৎসা না নিলে হার্টের পেশীর অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
হার্টের একটি বড় অংশ এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে রোগীর মৃত্যু হতে পারে। এই ঘটনাকে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বলা হয়।
হার্ট অ্যাটাকের কারণ
হার্ট অ্যাটাকের প্রধান কারণ হলো রক্তনালী সংক্রান্ত হৃদরোগ বা করোনারি হার্ট ডিজিজ। এছাড়া রক্তে অক্সিজেনের অভাব অথবা মাদকের অপব্যবহারের কারণে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।
করোনারি হার্ট ডিজিজ
হার্টে রক্ত সরবরাহকারী প্রধান রক্তনালীগুলোকে করোনারি আর্টারি বা ধমনী বলা হয়। করোনারি হার্ট ডিজিজে এসব করোনারি ধমনীর ভেতরে কোলেস্টেরল জমা হয়ে রক্তের স্বাভাবিক প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে। জমাট বাঁধা এসব কোলেস্টেরলকে প্ল্যাক বলা হয়।
হার্ট অ্যাটাকের ঠিক আগে এমন একটি কোলেস্টেরল প্ল্যাক ফেটে যায়। ফলে সেখানে রক্ত জমাট বাঁধে। এই জমাট বাঁধা রক্ত হার্টের রক্ত সরবরাহে বাধা সৃষ্টি করে হার্ট অ্যাটাক ঘটাতে পারে।
কিছু বিষয়ের কারণে করোনারি হার্ট ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। যেমন—
- ধূমপান করা
- উচ্চ রক্তচাপ
- রক্তে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল থাকা
- খাদ্যে অস্বাস্থ্যকর চর্বিবহুল খাবার রাখা
- নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রমের অভাব
- অতিরিক্ত ওজনের অধিকারী হওয়া
- ডায়াবেটিস
এছাড়া আপনার বাবা অথবা ভাই ৫৫ বছর বয়সের আগে কিংবা আপনার মা অথবা বোন ৬৫ বছর বয়সের আগে হার্ট অ্যাটাক অথবা স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে থাকলে, আপনারও করোনারি হার্ট ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যাবে।
হার্ট অ্যাটাকের অন্যান্য কারণ
করোনারি হার্ট ডিজিজ ছাড়া অন্যান্য কারণেও হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। তবে এসব কারণে সচরাচর হার্ট অ্যাটাক হয় না। হার্ট অ্যাটাকের অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে মাদক বা নেশাজাতীয় দ্রব্যের অপব্যবহার ও রক্তে অক্সিজেনের অভাব।
১. মাদকের অপব্যবহার: কোকেইন, অ্যামফেটামিন ও মেথঅ্যামফেটামিন (ইয়াবা, ক্রিস্টাল মেথ) এর মতো উত্তেজক মাদক ব্যবহারের কারণে করোনারি ধমনীগুলো সংকুচিত হতে পারে। ফলে হার্টের রক্ত সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।
তরুণদের আকস্মিক মৃত্যুর পেছনে অন্যতম কারণ হলো কোকেইনের নেশার কারণে হার্ট অ্যাটাক হয়ে মৃত্যুবরণ করা।
২. রক্তে অক্সিজেনের অভাব: কার্বন মনোক্সাইড বিষক্রিয়া হলে অথবা ফুসফুসের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা কমে গেলে রক্তে অক্সিজেনের অভাব হতে পারে।
গ্যাস, তেল, কয়লা অথবা কাঠ পোড়ালে সেখানে কার্বন মনোক্সাইড তৈরি হয়। এই গ্যাসের কোনো গন্ধ নেই। তাই শ্বাসনালীতে চলে গেলেও সেটি অনুভব করা যায় না। এই কার্বন মনোক্সাইড রক্তের হিমোগ্লোবিনের সাথে যুক্ত হয়ে অক্সিজেন পরিবহনে বাধা দেয়।
বিভিন্ন কারণে ফুসফুসের স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা কমে যেতে পারে। এর ফলে রক্তে অক্সিজেনের স্বল্পতা দেখা দিতে পারে।
রক্তে অক্সিজেনের অভাব হলে হার্টে অক্সিজেনবিহীন রক্ত সঞ্চালিত হয়। ফলে হার্টের পেশীগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং হার্ট অ্যাটাক ঘটে।
হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধের উপায়
হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ করার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো জীবনধারায় স্বাস্থ্যকর পরিবর্তন আনা। ইতোমধ্যে হার্ট অ্যাটাক হয়েছে এমন ব্যক্তিও সুস্থ জীবনধারা মেনে চলার মাধ্যমে পুনরায় হার্ট অ্যাটাক হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারবেন।
হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধের প্রধান উপায় তিনটি। উপায়গুলো হার্ট অ্যাটাকের পাশাপাশি ব্রেইন স্ট্রোক প্রতিরোধেও কার্যকর ভূমিকা রাখে। এগুলো হলো—
- ধূমপান থেকে বিরত থাকা
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা
- স্বাস্থ্যকর ও সুষম ডায়েট মেনে চলা
ধূমপান ত্যাগ
হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ার অন্যতম প্রধান কারণ হলো ধূমপান করা। ধূমপান ধমনীকে শক্ত ও সরু করে রক্ত প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে এবং রক্তচাপ বাড়ায়। এভাবে এটি হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দেয়।
কেউ ধূমপান ছাড়তে চাইলে ডাক্তার উপযুক্ত নিরাময় কেন্দ্রের সন্ধান দিতে পারবেন। এছাড়া ধূমপান ছাড়তে গেলে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এগুলো মোকাবেলা করার জন্য ডাক্তার কিছু ঔষধ সেবনের পরামর্শ দিতে পারেন।
বিনা ঔষধে ধূমপান ছাড়ার কার্যকর কৌশল জানতে নিচের ভিডিওটি দেখুন—
স্বাস্থ্যকর ও সুষম খাদ্যাভ্যাস
ডায়েটে চর্বিবহুল খাবার থাকা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। অস্বাস্থ্যকর খাবারের অভ্যাসের কারণে ধমনীগুলো ক্রমশ শক্ত ও সরু হতে থাকে। ফলে রক্তের স্বাভাবিক প্রবাহ আরও বাধাগ্রস্ত হয় এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে।
উচ্চ মাত্রায় চর্বিবহুল খাবার খাওয়া চালিয়ে গেলে ধমনীর ভেতরে আরও কোলেস্টেরল প্ল্যাক জমতে থাকে। এর কারণ হলো, চর্বিবহুল খাবারে অস্বাস্থ্যকর কোলেস্টেরল থাকে।
কোলেস্টেরল প্রধানত দুই ধরনের—
- এলডিএল কোলেস্টেরল: এই ধরনের কোলেস্টেরল মূলত প্রচুর চর্বি এবং সামান্য পরিমাণে প্রোটিন নিয়ে গঠিত। এই ধরনের কোলেস্টেরল ধমনীতে জমে ব্লক সৃষ্টি করতে পারে। তাই ‘এলডিএল’কে প্রায়ই খারাপ কোলেস্টেরল বলা হয়ে থাকে।
- এইচডিএল কোলেস্টেরল: এই ধরনের কোলেস্টেরল মূলত প্রচুর প্রোটিন এবং সামান্য পরিমাণে চর্বি নিয়ে গঠিত। এই ধরনের কোলেস্টেরল ধমনীতে জমে থাকা চর্বির পরিমাণ কমিয়ে আনতে পারে। তাই এটি ভালো কোলেস্টেরল হিসেবে পরিচিত।
যা খাবেন না
ফ্যাট বা চর্বিকেও দুটি প্রকারে ভাগ করা হয়—১) স্যাচুরেটেড বা সম্পৃক্ত ফ্যাট এবং ২) আনস্যাচুরেটেড বা অসম্পৃক্ত ফ্যাট। যেসব খাবারে উচ্চ মাত্রায় স্যাচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে সেগুলো এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ এগুলো রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়।
উচ্চ মাত্রায় স্যাচুরেটেড চর্বিযুক্ত খাবারগুলো হলো—
- ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার
- চর্বি ও চর্বিযুক্ত মাংস
- ডালডা, ঘি ও মাখন
- সসেজ
- চিজ
- ক্রিম বা ননী
- কেক ও বিস্কুট
- পেস্ট্রি ও পিৎজা
- নারিকেল তেল ও পাম তেল দিয়ে তৈরি খাবার (যেমন: কনডেন্সড মিল্ক, চকলেট ও আইসক্রিম)
যা খাবেন
বেশি বেশি ফলমূল, শাকসবজি, রুটি-পাউরুটি (বিশেষ করে লাল আটার রুটি ও হোলগ্রেইন পাউরুটি) ও মাছ খাওয়ার চেষ্টা করুন। মাংস খাওয়া কমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করুন।
ডালডা, মাখন, ঘি ও চিজের পরিবর্তে অলিভ অয়েলের মতো উদ্ভিজ্জ তেল খাওয়ার অভ্যাস করুন।
তৈলাক্ত অথবা সামুদ্রিক মাছসহ যেকোনো মাছ খেতে পারেন। তবে পুনরায় হার্ট অ্যাটাক হওয়া প্রতিরোধ করার জন্য বিশেষভাবে এই ধরনের মাছ খাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।
ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড সাপ্লিমেন্ট অথবা ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার পুনরায় হার্ট অ্যাটাক হওয়া প্রতিরোধে সহায়তা করে এমন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো সাপ্লিমেন্ট জাতীয় ঔষধ সেবন করা উচিত নয়। কিছু সাপ্লিমেন্ট (যেমন: বেটা-ক্যারোটিন) শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
ব্যায়াম করা
দৈনন্দিন জীবনের অংশ হিসেবে আরও সচল হওয়া এবং নিয়মিত ব্যায়াম করার ফলে হার্ট ও রক্তনালীগুলো সুস্থ থাকে। এভাবে রক্তচাপ কমে আসে। নিয়মিত ব্যায়াম শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতেও সাহায্য করে। ফলে রক্তচাপ কমানো আরও সহজ হয়।
সাধারণত হাঁটা, সাঁতার কাটা ও সাইকেল চালানোর মতো কম শ্রমসাধ্য ব্যায়াম করার পরামর্শ দেওয়া হয়। ফুটবল অথবা হার্ড র্যাকেট খেলার মতো ভারী ব্যায়াম আপনার জন্য উপযুক্ত না-ও হতে পারে। ডাক্তারের সাথে কথা বলে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নিন।
ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে আমাদের ৯ সপ্তাহে দৌড়ানোর অভ্যাস তৈরি করার উপায় গাইডটি অনুসরণ করতে পারেন।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ
দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ রক্তচাপে ভুগলে তা রোগীর ধমনী ও হার্টের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করতে পারে। ফলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
স্বাস্থ্যকর খাবারের অভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম ও স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখার মাধ্যমে প্রায়ই উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে আনা সম্ভব হয়।
ওপরে যেই সুষম ও স্বাস্থ্যকর খাবারের অভ্যাসের কথা বলা হয়েছে সেটি উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। তবে এসব উপদেশ মেনে চলার পাশাপাশি খাবারে লবণের পরিমাণও কমিয়ে ফেলতে হবে।
লবণে থাকা সোডিয়াম রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। যত বেশি লবণ খাওয়া হবে রক্তচাপও তত বাড়তে থাকবে। তাই পরিমিত পরিমাণে লবণ খেতে হবে। সারা দিনে লবণ খাওয়ার পরিমাণ দেড় গ্রামের মধ্যে সীমিত রাখার চেষ্টা করতে হবে। সহজে হিসাব করার জন্য দৈনিক আধা চা চামচের চেয়ে একটু বেশি কিন্তু পৌনে এক চা চামচের চেয়ে কম লবণ খেতে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়।
প্রচুর ফাইবারযুক্ত খাবার (যেমন: প্রচুর ফলমূল ও শাকসবজি, হোলগ্রেইন/ঢেঁকিছাটা চাল বা লাল চাল, লাল আটা বা হোলগ্রেইন আটার রুটি, পাউরুটি ও পাস্তা) সমৃদ্ধ লো-ফ্যাট ডায়েট রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে বলে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। ফলমূল ও শাকসবজিতে ফাইবারের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ নানান ভিটামিন ও খনিজ লবণ থাকে। এগুলো শরীরকে সুস্থ রাখতে অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে।
দৈনিক কতটুকু ফল ও শাকসবজি খাবেন?
শরীর সুস্থ রাখতে এবং বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদী রোগ থেকে বাঁচতে দৈনিক কমপক্ষে পাঁচ পরিবেশন ফলমূল ও শাকসবজি খাওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে ৮০ গ্রাম তাজা ফলমূল অথবা শাকসবজিকে এক পরিবেশন ধরা হয়। হিসাবের সুবিধার্থে এক হাতের তালুতে যতটুকু তাজা ফলমূল অথবা শাকসবজি আঁটে সেটিকে এক পরিবেশন ধরা যেতে পারে।
পড়ুন: উচ্চ রক্তচাপ রোগীর খাবার তালিকা
ওজন নিয়ন্ত্রণ
ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় অতিরিক্ত হলে হার্টকে সারা শরীরে রক্ত সঞ্চালন করতে অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হয়। ফলে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে। বিএমআই ক্যালকুলেটর ব্যবহার করে শরীরের উচ্চতা অনুযায়ী সঠিক ওজন কত সেটি জানা যায়।
মনে রাখতে হবে, এক-দুই কেজি ওজন কমাতে পারলে সেটিও রক্তচাপ ও সামগ্রিক স্বাস্থ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে।
ওজন কমানোর কিছু সহজ উপায় জানতে এই ভিডিওটি দেখতে পারেন। ওজন কমানোর জন্য সকালের ৮টি কার্যকর অভ্যাস মেনে চলার চেষ্টা করতে পারেন।
পড়ুন: ওজন কত হওয়া উচিত
মদপান পরিহার
নিয়মিত অতিরিক্ত পরিমাণে মদপান করলে রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে এটি হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, যারা একবার হার্ট অ্যাটাক হওয়ার পরে মদপান করা কমিয়ে দেয় তাদের তুলনায় যারা টানা মদপান চালিয়ে যায় তাদের পুনরায় হার্ট অ্যাটাক অথবা ব্রেইন স্ট্রোকের মতো মারাত্মক সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করার সম্ভাবনা প্রায় দ্বিগুণ।
মদপান করা কমিয়ে আনা কঠিন মনে হলে অথবা কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিন। তিনি কাউন্সেলিং ও ঔষধ সেবন সম্পর্কে পরামর্শ দিতে পারবেন। এগুলো মদপানের পরিমাণ কমিয়ে আনতে সাহায্য করবে।