সিজারের পর স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরতে সাধারণত প্রায় ১.৫ মাস সময় লাগতে পারে। তবে এই সময়টা সবার জন্য এক হয় না। সুস্থতা নিশ্চিত করে দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে প্রসূতি মায়েদের চেকআপে থাকা গুরুত্বপূর্ণ।
কোন লক্ষণগুলো স্বাভাবিক?
স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাওয়ার আগে আপনার শরীরে কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে। যেমন—
- হালকা পেট কামড়ানো। বিশেষ করে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময়ে এমন হয়।
- যোনিপথ দিয়ে রক্ত অথবা স্রাব যাওয়া। প্রায় ১–১.৫ মাস এমন রক্ত অথবা স্রাব যেতে পারে। এ ছাড়া কিছুটা চাকা চাকা রক্ত যেতে পারে, সাথে পেট কামড়াতে পারে।
- অপারেশনের জায়গায় ব্যথা হওয়া অথবা অবশ লাগা। কখনো কখনো একই সাথে ব্যথা হতে ও অবশ লাগতে পারে।
এসব নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। তবে তীব্র পেট ব্যথা, ভারী রক্তপাত কিংবা লক্ষণ নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তা হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
সিজারের পর সেরে ওঠতে করণীয়
সিজার একটি বড় অপারেশন। এই অপারেশনের পর সেরে ওঠা ও নিজের স্বাস্থ্য ফিরে পাওয়া একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে। নবজাতকের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি নিজের যত্ন নেওয়াটাকে অনেক মা-ই অবহেলা করেন। ফলে শারীরিক ফিটনেস ফিরে পেতে বেশি সময়ের প্রয়োজন হয়।
সিজারের পর কাটা স্থান শুকানো থেকে শুরু করে আগের মতো সবল হয়ে ওঠার প্রক্রিয়াকে দ্রুততর করার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ নিয়ে এখানে আলোচনা করা হয়েছে—
অপারেশনে কাটা স্থানের যত্ন
কীভাবে অপারেশনে কাটা স্থানটির যত্ন নিতে হবে তা হাসপাতাল থেকে ছুটি নেওয়ার সময় আপনাকে বলে দেওয়া হবে। এসময়ে যেসব উপদেশ দেওয়া হতে পারে—
- অপারেশনের জায়গাটি সাবান ও পানি দিয়ে প্রতিদিন একবার আলতো করে পরিষ্কার করুন। বেশি জোরে জোরে ঘষা-মাজা করবেন না। পরিষ্কার করা শেষে জায়গাটা শুকনো তোয়ালে বা গামছা দিয়ে ভালোমতো শুকিয়ে নিন।
- ঢিলেঢালা ও আরামদায়ক কাপড় পরুন। সিনথেটিক কাপড়ের পরিবর্তে সুতি কাপড়ের অন্তর্বাস বেছে নিন।
- শরীরের সাথে মিশে যায় না—এমন সুতা দিয়ে পেট সেলাই করলে তা সাধারণত অপারেশনের ৫–৭ দিন পর খুলে ফেলা হয়। আপনাকে এমন পরামর্শ দেওয়া হলে সময়মতো স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে সেলাই কাটিয়ে আসবেন।
সিজারের পর ইনফেকশনের লক্ষণ
অপারেশনের জায়গায় ইনফেকশনের লক্ষণ দেখা দেয় কি না সেই বিষয়ে সতর্ক থাকুন। ইনফেকশনের লক্ষণের মধ্যে রয়েছে, অপারেশনের জায়গাটি—
- অনেক লাল হয়ে যাওয়া
- ফুলে যাওয়া
- ব্যথা হওয়া
- সেখান থেকে পুঁজ বা দুর্গন্ধযুক্ত তরল বের হওয়া
এসবের পাশাপাশি জ্বর আসা। এমন কোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন। সঠিক চিকিৎসার অভাবে ইনফেকশন রক্তে ছড়িয়ে গিয়ে মারাত্মক রূপ নিতে পারে।
সিজারের কাটা দ্রুত শুকানোর জন্য কিছু টিপস
কাটা স্থানটি শুকনা রাখুন: কাটা জায়গাটি শুকনা রাখার ফলে সেখানে জীবাণু দিয়ে ইনফেকশন অথবা প্রদাহ হওয়ার আশংকা কমে যায়। এর ফলে কাটা স্থানটি দ্রুত শুকিয়ে যেতে পারে।
পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিন: অন্য যেকোনো বড় অপারেশনের মতো সিজার অপারেশনের পর পুরোপুরি সেরে ওঠার জন্য বিশ্রাম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আপনার কাটা স্থানটি দ্রুত শুকানোর জন্য সামগ্রিক ভাবে আপনার সেরে ওঠাটা জরুরি।
নবজাতকের দেখা-শোনা করার ফাঁকে বিশ্রাম নেওয়াটা কঠিন হতে পারে। তাই যখনই সুযোগ পাবেন, তখনই একটু বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করবেন। এসময়ে পরিবারের বাকি সদস্যদের সহযোগিতা নিন। নবজাতকের দেখভালের পাশাপাশি নিজের সুস্বাস্থ্যে ফিরে আসাকে গুরুত্ব দিন।
শরীর সচল রাখুন: শরীর সক্রিয় থাকলে শরীরের রক্ত প্রবাহ ভালো হয়। কাটা স্থানে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি পেলে তা তাড়াতাড়ি শুকাবে। তাই নিজেকে কিছুটা সক্রিয় রাখার চেষ্টা করুন।
ঘরেই টুকটাক কাজকর্ম করতে পারেন। হালকা কাজকর্মে ব্যস্ত থাকুন। প্রতিদিন একটুখানি হেঁটে আসুন। এতে করে রক্ত জমাট বেঁধে প্রাণঘাতী জটিলতা হওয়ার আশংকা কমবে। তবে কমপক্ষে ৬ সপ্তাহ ভারী কাজ করা থেকে বিরত থাকবেন। শরীর সচল রাখা গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু শরীরের ওপর অতিরিক্ত ধকল নিয়ে নিজেকে ক্লান্ত করে ফেলবেন না। প্রয়োজনে বাড়ির অন্য সদস্যদের সাহায্য নিন।
সিজারের পর পরই হালকা হাঁটাচলা, সাঁতার ও পেশিকে মজবুত করার বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম করা যেতে পারে। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে আপনার জন্য সঠিক মাত্রার ও ধরনের ব্যায়ামগুলো জেনে নিন
পুষ্টিকর খাবার খান: শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে সুষম ও পুষ্টিকর খাবারের বিকল্প নেই। সিজারের পর বেশি বেশি আঁশযুক্ত খাবার, শাক-সবজি ও ফলমূল খাওয়ার চেষ্টা করুন। সেই সাথে পরিমাণমতো ডিম-দুধ, মাছ ও মুরগির মাংস খান। খাবারের পাশাপাশি গর্ভাবস্থায় যে আয়রন-ফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়া হতো, তা ডেলিভারি-পরবর্তী ৩ মাস সেবন চালিয়ে যান। মাল্টিভিটামিন সেবন করতে চাইলে কোন কম্বিনেশন আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো হবে সেটা ডাক্তারের কাছ থেকে জেনে নিন।
কোষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে বেশি করে পানি পান করুন: অপারেশনের পর নানান কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্য হলে পেটে চাপ পড়ার কারণে কাটা স্থান শুকাতে বেশি সময় লাগতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে বেশি বেশি পান পান করুন। প্রচুর আঁশযুক্ত খাবার, ফল ও শাকসবজি খান।
ব্যথা
অপারেশনের জায়গায় কয়েকদিন বেশ ব্যথা থাকবে। কারও কারও ক্ষেত্রে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত ব্যথা থাকতে পারে।
এক্ষেত্রে ব্যথানাশক হিসেবে প্যারাসিটামল অথবা আইবুপ্রোফেন বেছে নিতে পারেন। এগুলো ‘ওভার দা কাউন্টার’ ঔষধ। ওভার দা কাউন্টার ঔষধগুলো ফার্মেসি থেকে কিনে সাথে থাকা নির্দেশিকা অনুযায়ী সেবন করা নিরাপদ। তবে আপনার আগে থেকে কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে কিংবা এই বিষয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিন।
শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ালেও প্যারাসিটামল ও আইবুপ্রোফেন সেবন করা যায়। তবে সাধারণত অ্যাসপিরিন ও কোডেইন জাতীয় ঔষধ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়।
যোনিপথে রক্তক্ষরণ
অপারেশনের পর যোনিপথ দিয়ে কিছুটা রক্ত যেতে পারে। এজন্য ম্যাটারনিটি প্যাড বা স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করতে পারেন। ভারী রক্তপাত হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। এসময়ে ইনফেকশন এড়াতে কয়েক সপ্তাহ যোনিপথে ট্যাম্পনের মতো কিছু ব্যবহার করা এবং সহবাস করা থেকে বিরত থাকুন।[১]
স্বাভাবিক কাজকর্মে ফিরে যাওয়া
সাধারণত বাড়ি ফেরার পর পরই আপনি আপনার সন্তানকে কোলে নিয়ে হাঁটতে চলতে পারবেন। তবে কিছু কাজ করতে প্রায় দেড় মাসের মতো সময় লাগতে পারে। যেমন—
- সহবাস করা
- নবজাতকের চেয়ে ওজনে ভারী কিছু বহন করা
- ভারী ব্যায়াম করা
- গাড়ি চালানো
আপনি যখন এসব কাজ করতে নিজেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে ফিট মনে করবেন, কেবল তখনই ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনের সব কাজে ফিরে আসবেন। এই বিষয়ে যেকোনো প্রশ্ন থাকলে প্রসূতি বা পোস্টনেটাল চেকআপের সময়ে ডাক্তারকে তা জানান।
তবে অপারেশনের পর সেরে ওঠার সময়টায় একেবারে শুয়ে-বসে থাকবেন না। নিজেকে কিছুটা সক্রিয় রাখার চেষ্টা করুন। হালকা কাজকর্মে ব্যস্ত থাকুন। প্রতিদিন একটুখানি হেঁটে আসুন। এতে করে রক্ত জমাট বেঁধে প্রাণঘাতী জটিলতা হওয়ার আশংকা কমবে। তবে কমপক্ষে ৬ সপ্তাহ ভারী কাজ করা থেকে বিরত থাকবেন। শরীর সচল রাখা গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু শরীরের ওপর অতিরিক্ত ধকল নিয়ে নিজেকে ক্লান্ত করে ফেলবেন না। প্রয়োজনে বাড়ির অন্য সদস্যদের সাহায্য নিন।
সিজার অপারেশনের দাগ
অপারেশনের জায়গাটা ধীরে ধীরে সেরে গিয়ে তলপেটে একটা দাগ তৈরি করবে। সাধারণত তলপেটের একেবারে নিচের অংশের মাঝ বরাবর ১০–২০ সে.মি. লম্বা একটি আড়াআড়ি দাগ পড়ে।
প্রথম প্রথম দাগটি লাল রঙের হয়ে থাকে। এসময়ে দাগটি বেশ স্পষ্টভাবে বোঝা যেতে পারে। সময়ের সাথে সাথে দাগটি ম্লান হয়ে যাবে। অনেকসময় আপনার যৌনাঙ্গের আশেপাশের চুল দিয়ে দাগটি ঢাকা পড়ে যেতে পারে। গায়ের রঙ গাঢ় হলে ত্বকে বাদামী অথবা সাদা দাগের মতো থেকে যেতে পারে।
যখন জরুরি ভিত্তিতে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে
সিজারের পর যে লক্ষণগুলো দেখা দেওয়ার সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে—
- জ্বর
- শরীর কাঁপুনি
- অপারেশনের জায়গায় ইনফেকশন। যেমন: জায়গাটা অনেক লাল হয়ে যাওয়া, ফুলে যাওয়া, ব্যথা হওয়া, সেখান থেকে পুঁজ বা দুর্গন্ধযুক্ত তরল বের হওয়া
- যোনিপথে ভারী রক্তক্ষরণ
- তীব্র পেট ব্যথা
- পায়ে ব্যথা হওয়া অথবা ফুলে যাওয়া
- শ্বাসকষ্ট অথবা কাশি
- প্রস্রাব ছুটে যাওয়া
- প্রস্রাবের সময় ব্যথা বা জ্বালাপোড়া হওয়া
সিজারের পর ওপরের যেকোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। এগুলো ইনফেকশন অথবা রক্ত জমাট বাঁধার লক্ষণ হতে পারে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এসব জটিলতার চিকিৎসা করা উচিত। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না করালে এসব জটিলতা থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
সিজারের পর কী কী খাওয়া যাবে না?
সিজারের পর আপনি সাধারণত স্বাভাবিক সব খাবারই খেতে পারবেন। এসময়ে খাবার নিয়ে কোনো বিশেষ নিষেধাজ্ঞা নেই। তবে দ্রুত সেরে ওঠার জন্য একটা সুষম ও পুষ্টিকর খাবার তালিকা মেনে চলার ব্যাপারে প্রাধান্য দেওয়া উচিত।
কিছু খাবার কাটা বা ক্ষত সারাতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এর মধ্যে রয়েছে লেবু, আমলকী ও পেয়ারার মতো ভিটামিন সি যুক্ত খাবার এবং ডিম, মাছ ও ডালের মতো প্রোটিনযুক্ত খাবার।
অন্যদিকে কোষ্ঠকাঠিন্য ও সর্দি-কাশির প্রভাবে কাটা ঘা বা ক্ষত শুকাতে বেশি সময় লাগে। এই সংক্রান্ত ঝামেলা এড়াতে নিয়মিত প্রচুর পানি এবং পর্যাপ্ত আঁশযুক্ত খাবার (যেমন: শাকসবজি, ফলমূল এবং লাল চালের ভাত) খেতে হবে। যেসব খাবারে এলার্জি হয় সেগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।
কিছু খাবার হজম হতে বেশি সময় লাগে কিংবা খাওয়ার পরে পেট ফাঁপার আশংকা থাকে। এতে পেটে অস্বস্তি হতে পারে। সিজারের পর সাময়িকভাবে এগুলো এড়িয়ে চলা যায়। এমন খাবারের মধ্যে রয়েছে—
- ভাজা-পোড়া
- কার্বনেটেড ড্রিংক বা কোমল পানীয়
- চা-কফি জাতীয় খাবার
- অ্যালকোহল
- যেসব খাবারে আপনার পেট ফাঁপার প্রবণতা রয়েছে। অনেকের বাঁধাকপি, ফুলকপি, ব্রকলি, ডাল, পেঁয়াজ ও ঢেঁড়সের মতো খাবারে এমন প্রতিক্রিয়া হতে পারে
মনে রাখতে হবে যে, যেকোনো এক ধরনের খাবার তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দিলে সেই ধরনের খাবার থেকে আসা পুষ্টির অভাব দেখা দিতে পারে। এই বিষয়ে প্রয়োজনে একজন রেজিস্টার্ড ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ নিন।
সিজারের পর বেল্ট ব্যবহার
সিজারের পরে কোমরে ম্যাটারনিটি বেল্ট পরলে তা আদৌ দ্রুত সেরে উঠতে কিংবা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে কি না, সেই বিষয়ে খুব বেশি গবেষণা নেই।[২] যেসব গবেষণা রয়েছে, সেগুলোতে উঠে আসা প্রমাণও অনেকটা বিপরীতমুখী।[৩][৪]
তাই সিজারের পর বেল্ট পরতেই হবে—এমন কোনো কথা নেই। আপনি চাইলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ম্যাটারনিটি বেল্ট ব্যবহার করতে পারেন। সেক্ষেত্রে নরম, মোটা কাপড়ের বেল্ট ব্যবহার করা যেতে পারে, যা আপনার পেট ও তলপেট ঘিরে রেখে সাপোর্ট দিবে।
এই ধরনের বেল্ট ফার্মেসিতে কিনতে পাওয়া যায়। কেনার সময়ে ভালোমতো ফিট হয় কি না সেটা দেখে নেওয়া উচিত। কতক্ষণ ও কীভাবে বেল্ট পরতে হবে, সেটা ডাক্তারের কাছ থেকে জেনে নিন। অস্বস্তি হলে বেল্ট ব্যবহার না করাই শ্রেয়।