গর্ভের শিশুর অ্যানোমালি স্ক্যান

অ্যানোমালি স্ক্যানের সময়ে শিশুর মুখমণ্ডল, হাত-পা, পেট ও নাড়িভুঁড়ি, হাড়, হার্ট, কিডনি, ব্রেইন ও স্নায়ুতন্ত্র খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখা হয়।

গর্ভাবস্থার ১৮–২২তম সপ্তাহের মধ্যে একটি আলট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষা করতে হয়, যার নাম অ্যানোমালি স্ক্যান। এর সাহায্যে শিশুর জন্মগত ত্রুটি থাকলে তা খুঁজে বের করা যেতে পারে। ফলে অনেক ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যায়, শিশুর জন্ম-পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে আগেভাগে পরিকল্পনা করে রাখা যায়। এর পাশাপাশি শিশুর স্বাভাবিক বেড়ে ওঠা এবং শিশু ছেলে না কি মেয়ে—এই সংক্রান্ত তথ্যও জানা সম্ভব হয়।

অ্যানোমালি স্ক্যান কী?

গর্ভাবস্থায় সাধারণত তিনবার আলট্রাসনোগ্রাফি করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। এর মধ্যে গর্ভকালীন ১৮–২২তম সপ্তাহে, অর্থাৎ দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে দ্বিতীয় আলট্রাসনোগ্রাফি স্ক্যান করানো হয়।

দ্বিতীয় স্ক্যানে শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশ কেমন হচ্ছে, জন্মগত ত্রুটি আছে কি না—এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়া যায়। জন্মগত ত্রুটি দেখা যায় বলে দ্বিতীয় আলট্রাসনোগ্রাফিকে ইংরেজি নাম অনুসারে ‘অ্যানোমালি স্ক্যান’ বলা হয়। গর্ভাবস্থায় অন্তত একবার আলট্রাসনোগ্রাফি করালেও দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের এই স্ক্যানটি করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।[১]

পড়ুন: গর্ভাবস্থায় আলট্রাসনোগ্রাম

অ্যানোমালি স্ক্যান কীভাবে করা হয়?

সাধারণত স্ক্যানের ১ ঘন্টা আগে আধা লিটার পানি অথবা তরল খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। পরীক্ষার আগে যথেষ্ট প্রস্রাবের চাপ থাকলে তা স্ক্যানের সময়ে গর্ভের শিশুর তথ্যগুলো ভালোমতো নির্ণয় করতে সাহায্য করে।

পরীক্ষার শুরুতে আপনাকে পরীক্ষা করার বেডে শোয়ানো হবে। তারপর আপনার বুক থেকে তলপেট পর্যন্ত থাকা কাপড় সরিয়ে তলপেটের ওপর আলট্রাসাউন্ড জেল লাগানো হবে। এরপর ‘আলট্রাসনোগ্রাফি প্রোব’ আপনার পেটের চারিদিকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে গর্ভের শিশু ও পেটের ভেতরের বিভিন্ন অঙ্গের ছবি দেখা হবে।

ছবিগুলো সাথে সাথেই পাশে রাখা কম্পিউটার স্ক্রিনে দেখা যাবে এবং পরে প্রিন্ট করে কিংবা ভিডিও ফাইল হিসেবে আপনাকে দেওয়া হবে। স্ক্রিন ভালোমতো দেখার সুবিধার্থে ডাক্তার রুমের আলো কমিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারেন।

স্ক্যানের সময়ে সাধারণত কোনো ব্যথা লাগে না। তবে ডাক্তার কখনো কখনো ভালোমতো দেখার জন্য পেটে সামান্য চাপ দিতে পারেন। এতে ব্যথা না হলেও কিছুটা অস্বস্তি হতে পারে। স্ক্যানের প্রক্রিয়াতে প্রায় ৩০ মিনিট সময় লাগে।

অ্যানোমালি স্ক্যানে কী কী দেখা হয়?

অ্যানোমালি স্ক্যানের সময়ে শিশুর মুখমণ্ডল, হাত-পা, পেট ও নাড়িভুঁড়ি, হাড়, হার্ট, কিডনি, ব্রেইন ও স্নায়ুতন্ত্র খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখা হয়। এই স্ক্যানে জন্মগত ত্রুটি বা ‘অ্যানোমালি’ বের করার পাশাপাশি অনেকগুলো তথ্য পাওয়া যায়। যেমন—

  • গর্ভের শিশুর আকার ও ওজন
  • গর্ভফুলের অবস্থান
  • শিশুর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সঠিকভাবে গড়ে উঠছে কি না
  • শিশুর বৃদ্ধি স্বাভাবিক হারে চলছে কি না
  • শিশু ছেলে না কি মেয়ে। এই তথ্য জানতে চাইলে স্ক্যানের শুরুতে ডাক্তারকে জানিয়ে রাখবেন। সেই সাথে মনে রাখবেন, শিশুর অবস্থানসহ বিভিন্ন কারণে শিশুর লিঙ্গ নিশ্চিত করা সম্ভব না-ও হতে পারে

জন্মগত ত্রুটিগুলো নিয়ে আর্টিকেলের পরের অংশে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

এই পরীক্ষাটি কতটুকু নির্ভরযোগ্য?

অ্যানোমালি স্ক্যানের সাহায্যে গর্ভের শিশুর অনেকগুলো শারীরিক ত্রুটি নির্ণয় করা যায়। তবে সব ত্রুটি সবসময় ধরা পড়ে না। যেমন, গর্ভের শিশুর যদি ‘ওপেন স্পাইনা বিফিডা’ নামক মেরুদণ্ডের বিশেষ ত্রুটি থাকে, তাহলে সেটা প্রায় ৯০% ক্ষেত্রেই নির্ণয় করা যায়। অন্যদিকে হার্টের প্রায় ৫০% জন্মগত ত্রুটি এই স্ক্যানের মাধ্যমে ধরা পড়ে না।

কিছু ক্ষেত্রে আলট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে পরিষ্কার ছবি পাওয়া এবং সব ধরনের তথ্য খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখা কঠিন হয়। যেমন—

  • গর্ভের শিশু সুবিধাজনক অবস্থানে না থাকলে
  • গর্ভের ভেতরে শিশুকে ঘিরে থাকা অ্যামনিওটিক তরলের পরিমাণ বেশি হলে
  • গর্ভবতী অতিরিক্ত ওজনের অধিকারী হলে[২] অথবা পেটে চর্বির পরিমাণ বেশি হলে
  • পেটে কোনো ধরনের অপারেশনের কাটা দাগ থাকলে। যেমন: পূর্বে সিজার হয়ে থাকলে

আবার পরিষ্কার ছবি পেলেও এর মাধ্যমে সব ধরণের ত্রুটি নির্ণয় করা সম্ভব নয়। যেমন—

  • যেসব ত্রুটি শিশুর শারীরিক গঠনে পরিবর্তন আনে না সেগুলো এই পরীক্ষায় ধরা পড়ে না
  • গর্ভাবস্থার শেষের দিকে, অর্থাৎ ২২ সপ্তাহের পরে যেসব ত্রুটি দেখা দেয় সেগুলোও এর মাধ্যমে নির্ণয় সম্ভব নয়

তাই শিশুর শারীরিক ত্রুটি থাকলেও আলট্রাসনোগ্রাফির সময়ে কখনো কখনো সেটি ধরা না পড়ার সম্ভাবনা থাকে। এসব ক্ষেত্রে শিশুর জন্মের পরে ত্রুটি ধরা পড়তে পারে।

জন্মগত ত্রুটি ধরা পড়লে করণীয় কী?

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হয়তো গর্ভের শিশুর সবকিছু স্বাভাবিক থাকবে। তবে স্ক্যানের সময়ে যদি কোনো ত্রুটি ধরা পড়ে অথবা ডাক্তার সন্দেহ করেন যে শিশুর কোনো জন্মগত ত্রুটি আছে, তাহলে—

  • ডাক্তার রিপোর্ট নিয়ে আরেকজন সনোলজিস্ট বা আলট্রাসনোগ্রাফি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন
  • পুনরায় আলট্রাসনোগ্রাফি করার পরামর্শ দিতে পারেন
  • যে ধরনের ত্রুটি ধরা পড়েছে বা সন্দেহ করা হচ্ছে, তার ভিত্তিতে আরও কিছু পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিতে পারেন। যেমন: রক্ত পরীক্ষা, গর্ভের ভেতর থেকে কোষ অথবা পানি নিয়ে পরীক্ষা

পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে আপনার গাইনী ডাক্তারের সাথে কথা বলুন। তিনি পরবর্তী করণীয়ের ব্যাপারে পরামর্শ দিতে পারবেন, ফলে সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হবে।

যেসব জন্মগত ত্রুটি ধরা পড়ে

অ্যানোমালি স্ক্যানের মাধ্যমে অনেকগুলো জন্মগত ত্রুটি নির্ণয় করা যেতে পারে—

মাথা ও মুখমণ্ডলের জন্মগত ত্রুটি

  • অ্যানেনসেফালি: এটি একটি গুরুতর জটিলতা। এক্ষেত্রে গর্ভের শিশুর মাথার খুলি, ব্রেইন ও স্নায়ুতন্ত্র ঠিকমতো তৈরি হয় না। মাথার খুলি ও ব্রেইনের অনেকখানি অংশ একেবারেই তৈরি হয় না৷ অ্যানেনসেফালি হলে শিশুকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হয় না।[৩] শিশু গর্ভেই মারা যায়, জীবিত অবস্থায় জন্মালেও কয়েক ঘন্টা কিংবা কয়েকদিনের মধ্যেই মৃত্যুবরণ করে।
  • ঠোঁট কাটা ও তালু কাটা: ডাক্তারি ভাষায় ঠোঁট কাটাকে ক্লেফট লিপ এবং তালু কাটাকে ক্লেফট প্যালেট বলা হয়৷ গর্ভে শিশুর মুখের অংশগুলো আলাদাভাবে তৈরি হয়ে পরে জোড়া লাগে। জোড়া লাগার সময়ের জটিলতা হলে শিশু ঠোঁট কাটা ও তালু কাটা নিয়ে জন্মাতে পারে। স্ক্যানের সময়ে ঠোঁট কাটা দেখা গেলেও সবসময় তালু কাটা নির্ণয় করা সম্ভব না-ও হতে পারে।

হার্টের জন্মগত ত্রুটি

জন্মগত ত্রুটির মধ্যে সবচেয়ে কমন হলো হার্টের ত্রুটি বা কার্ডিয়াক অ্যানোমালি।[৪] অ্যানোমালি স্ক্যানের সময়ে হার্টের জন্মগত ত্রুটি আছে এমন প্রায় ৫০% শিশুর ক্ষেত্রে ত্রুটি নির্ণয় করা সম্ভব হয়।

হার্টে সাধারণত চারটি প্রকোষ্ঠ থাকে। প্রকোষ্ঠগুলো দেয়াল ও ভালভের মাধ্যমে আলাদা করা থাকে। এগুলো গড়ে ওঠার সময়ে কোনো ত্রুটি হলে তা স্ক্যানের সময়ে ধরা সম্ভব হতে পারে। এ ছাড়া এসময়ে শিশুর হার্ট রেট স্বাভাবিক আছে কি না তাও মেপে দেখা যায়।

হাড়, মেরুদণ্ড ও স্নায়ুর ত্রুটি

  • স্পাইনা বিফিডা: আমাদের ব্রেইন থেকে তারের মতো একগুচ্ছ নার্ভ বা স্নায়ু তৈরি হয়ে মেরুদণ্ড বরাবর কোমর পর্যন্ত যায়। এই গুচ্ছকে বলা হয় স্পাইনাল কর্ড, যাকে ঘিরে মেরুদণ্ডের হাড়গুলো তৈরি হয়।

স্পাইনা বিফিডা এমন একটি জটিলতা, যাতে মেরুদণ্ড ও স্পাইনাল কর্ড ঠিকমতো তৈরি হয় না।[৫] ফলে অনেকসময় মেরুদণ্ড ঠিকমতো বন্ধ হয় না। এতে নার্ভের গুচ্ছ থলির মতো বাইরে বেরিয়ে আসতে পারে, যা থেকে ভবিষ্যতে পঙ্গুত্বসহ নার্ভের বিভিন্ন ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।

এই জটিলতার ঝুঁকি কমাতে গর্ভধারণের আগে থেকে ফলিক এসিড সেবন করতে সুপারিশ করা হয়। সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা করার সময় থেকেই ফলিক এসিড খাওয়া শুরু করা দরকার, যা সন্তান জন্মদানের পর তিন মাস পর্যন্ত চালিয়ে যেতে হবে।[৬][৭] তবে গর্ভধারণের প্রথম সপ্তাহগুলোতে গর্ভের শিশুর ব্রেইন ও স্নায়ুতন্ত্রের অন্যান্য অংশ দ্রুত গড়ে উঠতে থাকে, তাই গর্ভধারণের ১২তম সপ্তাহ পর্যন্ত নিয়মিত ফলিক এসিড খাওয়া বিশেষভাবে জরুরি।[৮]

  • কঙ্কালের মারাত্মক ত্রুটি: একে ডাক্তারি ভাষায় ‘Severe or Lethal Skeletal Dysplasia’ বলা হয়। এই বিরল জটিলতায় গর্ভের শিশুর হাড়ের বৃদ্ধি তীব্রভাবে বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে দৈহিক কাঠামো ঠিকমতো গড়ে ওঠে না। পাঁজরের হাড় ঠিকমতো বেড়ে না ওঠার ফলে গর্ভের শিশুর ফুসফুসের বিকাশও বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে। গুরুতর ক্ষেত্রগুলোতে শিশুকে বাঁচানো সম্ভব হয় না।

পেটের বিভিন্ন অঙ্গের জন্মগত ত্রুটি

  • কিডনির ত্রুটি: গর্ভের শিশুর ‘Bilateral Renal Agenesis’ নামক বিরল ত্রুটি হতে পারে। এক্ষেত্রে দুটি কিডনির কোনোটিই তৈরি হয় না। এই জটিলতায় আক্রান্ত শিশুরা বেঁচে থাকতে পারে না।
  • পেটের দেয়ালের ত্রুটি: পেটের দেয়াল ঠিকমতো তৈরি না হলে শিশুর নাড়িভুঁড়ি পেটের দেয়ালের ফাঁকা অংশ বা ছিদ্র দিয়ে বেরিয়ে আসতে পারে। নাড়িভুঁড়ি সরাসরি বেরিয়ে আসলে ডাক্তারি ভাষায় তাকে বলে ‘Gastroschisis’। আর যদি থলের মতো নাড়ির ভেতরে ঢোকানো অবস্থায় বেরিয়ে আসে তাহলে ডাক্তারি ভাষায় একে ‘Exomphalos’ বা ‘Omphalocoele’ বলে। এসব গুরুতর জটিলতার চিকিৎসায় শিশুর জন্মের সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে দ্রুত অপারেশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
  • জন্মগত ডায়াফ্রামেটিক হার্নিয়া: আমাদের বুক ও পেটের মাঝ বরাবর পর্দার মতো একটা অংশ থাকে, যাকে ডাক্তারি ভাষায় ডায়াফ্রাম বলে। এটি হার্ট ও ফুসফুসের মতো বুকের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে পেটের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ থেকে আলাদা করে রাখে।

গর্ভের শিশুর ডায়াফ্রাম ঠিকমতো তৈরি না হলে অথবা এতে কোনো ছিদ্র থাকলে পেটের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ (যেমন: পাকস্থলী, নাড়িভুঁড়ি ও লিভার) এই ছিদ্রপথ দিয়ে বুকে উঠে আসতে পারে৷ এই ত্রুটির নাম ডায়াফ্রামেটিক হার্নিয়া। এর ফলে বুকের ভেতরে থাকা ফুসফুস ঠিকমতো গড়ে উঠতে পারে না। হার্ট ও ফুসফুসের কাজ বাধাপ্রাপ্ত হয়। এতে শিশুর জন্মের পরে শরীরে অক্সিজেন সরবরাহে বাধা তৈরি হতে পারে। ফলে নানান মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।

জেনেটিক ত্রুটি

অ্যানোমালি পরীক্ষার সময়ে কিছু বিরল জেনেটিক বা ক্রোমোজোমাল ত্রুটি নির্ণয় করা যায়। যেমন: ‘এডওয়ার্ড সিন্ড্রোম’ ও ‘পাটাউ সিন্ড্রোম’।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

অ্যানোমালি স্ক্যান করালে কি গর্ভের শিশুর কোনো ক্ষতি হয়?

আলট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষায় গর্ভবতী মা ও গর্ভের শিশুর কোনো ধরনের ক্ষতি হওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।[৯] গর্ভাবস্থায় এই পরীক্ষা করানো নিরাপদ।
এই পরীক্ষায় কোনো ধরনের ক্ষতিকর রেডিয়েশন ব্যবহার করা হয় না। উচ্চ মাত্রার শব্দতরঙ্গ ব্যবহার করে শরীরের ভেতরের অংশের ছবি তোলা হয়। তবে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া অতিরিক্ত আলট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষা করা থেকে বিরত থাকাই শ্রেয়।[১০]

অ্যানোমালি স্ক্যান থেকে কি গর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে বুঝা যাবে?

অ্যানোমালি স্ক্যান থেকে গর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে সেটা বোঝা সম্ভব হতে পারে। আপনি গর্ভের শিশু ছেলে না মেয়ে তা জানতে চাইলে অ্যানোমালি স্ক্যান করানোর ঠিক আগে আপনার আলট্রাসনোগ্রামের ডাক্তারকে জানান। কেননা আলট্রাসনোগ্রাম রিপোর্টে সবক্ষেত্রে শিশুর লিঙ্গ উল্লেখ করা থাকে না। 
কিছু রিপোর্টে ছেলে শিশুর ক্ষেত্রে শিশুর gender/sex এর জায়গায় male অথবা XY লেখা থাকে। আর মেয়ে শিশুর ক্ষেত্রে female অথবা XX লেখা থাকে। নিজে রিপোর্ট বুঝতে না পারলে পরবর্তী চেকআপের সময়ে ডাক্তারকে আলট্রাসনোগ্রামের ফলাফল বুঝিয়ে দিতে অনুরোধ করতে পারেন।
উল্লেখ্য, অনেকসময় শিশুর অবস্থানসহ বিভিন্ন কারণে আলট্রাসনোগ্রাফির সময়ে শিশুর লিঙ্গ বোঝা সম্ভব না-ও হতে পারে।

অ্যানোমালি স্ক্যান করাতে কেমন খরচ পড়ে?

আলট্রাসনোগ্রামের খরচ সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালভেদে কম-বেশি হয়। তবে সাধারণত সরকারি হাসপাতালগুলোতে ৫০০–৭০০ টাকার মধ্যে গর্ভাবস্থার আলট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষা করানো হয়। বেসরকারি হাসপাতাল এবং কোন ডাক্তারের কাছে পরীক্ষা করাচ্ছেন সেই অনুযায়ী খরচ কিছুটা বেশি। হাসপাতাল ও চেম্বারভেদে প্রায় ১০০০–৩০০০ টাকার মতো হতে পারে।