গ্যাস্ট্রিক আলসার বা পাকস্থলীর আলসারের সবচেয়ে কমন লক্ষণ হলো—পেটের মাঝ বরাবর জ্বালাপোড়া করা কিংবা সার্বক্ষণিক এক ধরণের ভোঁতা (Dull Pain) ব্যথা হতে থাকা। তবে আলসার হলেই সবার ক্ষেত্রে ব্যথা হয় না। কারও কারও ক্ষেত্রে আলসার থেকে সৃষ্ট কোনো জটিলতা। যেমন: ক্ষতস্থান থেকে রক্তপাত দেখা দিলে কেবলমাত্র তখনই আলসারের উপস্থিতি টের পাওয়া যায়।
গ্যাস্ট্রিক আলসারের লক্ষণ
গ্যাস্ট্রিক আলসারের আলসারের সর্বাধিক পরিচিত লক্ষণগুলো এখানে তুলে ধরা হলো—
- গ্যাস্ট্রিক আলসারের ব্যথা পেটের মাঝখান হতে ঘাড় পর্যন্ত উঠতে পারে
- আবার নিচের দিকে নাভি পর্যন্ত যেতে পারে
- পিঠেও এই ব্যথা হতে পারে
এই ব্যথা সাধারণত কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হয়। ব্যথাটি সাধারণত খাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরে শুরু হয়। অনেক সময় রাতে ঘুমের মধ্যে ব্যথা শুরু হয়ে ঘুম ভেঙে যেতে পারে। ডিওডেনাল আলসার, অর্থাৎ, পাকস্থলীর পর থেকে শুরু হওয়া অন্ত্রের প্রথম অংশে আলসার হলে ব্যথা সাধারণত খালি পেটে শুরু হয়।
এন্টাসিডের মতো বদহজমের ঔষধ খেলে সাময়িকভাবে ব্যথা কমতে পারে। তবে আলসারের চিকিৎসা না করা পর্যন্ত ব্যথাটি বারবার ফিরে আসবে।
আলসারের অন্যান্য লক্ষণ
পাকস্থলীর আলসারের অন্যান্য লক্ষণের মধ্যে রয়েছে—
- বদহজম
- বুকে জ্বালাপোড়া
- খাবারে অরুচি
- বমি বমি ভাব
- ওজন কমে যাওয়া
কারও কারও ক্ষেত্রে চর্বিজাতীয় খাবার খাওয়ার পর পেট ফাঁপা বা ঢেঁকুর তোলার মত সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
যদি এই লক্ষণগুলো জানার পরও গ্যাস্ট্রিক আলসারের হয়েছে কি না সেই ব্যাপারে আপনি নিশ্চিত না হতে পারেন, তবে পেট ব্যথার অন্যান্য কারণ ও চিকিৎসা সম্পর্কে জেনে নিন।
কখন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে?
আপনার যদি পাকস্থলীর আলসারের কোনো লক্ষণ আছে বলে মনে হয় তবে ডাক্তার দেখিয়ে নিশ্চিত হয়ে নিন। এছাড়া নিচের যেকোনো লক্ষণ দেখা দিলে জরুরি ভিত্তিতে ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন—
১. রক্তবমি হলে। বমির সাথে উজ্জ্বল লাল রঙের রক্ত যেতে পারে। অথবা খয়েরী রঙের চাকাচাকা বা দানাদার রক্ত মিশ্রিত থাকতে পারে, যা দেখতে অনেকটা কফির দানার মতো।
২. কালো, আঠালো, আলকাতরার মতো পায়খানা হলে।
৩. পেটে হঠাৎ করে তীব্র ও তীক্ষ্ণ ব্যথা হলে, যা সময়ের সাথে ক্রমশ বাড়তে থাকে।
এসব লক্ষণ শরীরের অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ (Internal Bleeding) এর মতো কোনো মারাত্মক জটিলতার কারণে দেখা দিতে পারে। তাই দেরি না করে দ্রুত হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা শুরু করা প্রয়োজন।