সময়মতো অ্যাপেন্ডিসাইটিস এর চিকিৎসা না করালে অ্যাপেন্ডিক্স ফেটে গিয়ে বিভিন্ন মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে। এমনকি ইনফেকশন হয়ে রোগী মৃত্যুবরণ করতে পারে।
পেটের ব্যথা যদি হঠাৎ করেই অনেক বেড়ে গিয়ে পুরো পেটে ছড়িয়ে পড়ে তাহলে সাথে সাথে হাসপাতালে যেতে হবে। কারণ এটি অ্যাপেন্ডিক্স ফেটে যাওয়ার লক্ষণ হতে পারে।
পেরিটোনাইটিস
অ্যাপেন্ডিক্স ফেটে গেলে নাড়িভুঁড়ির ভেতরের জীবাণুগুলো বাইরে বেরিয়ে আসে। এসব জীবাণু ছড়িয়ে গিয়ে পেটের ভেতরের আবরণের ইনফেকশন ঘটাতে পারে। পেটের আবরণের এই ইনফেকশনকে পেরিটোনাইটিস বলা হয়৷
পেরিটোনাইটিস হলে নাড়িভুঁড়ি, লিভার, কিডনি সহ পেটের ভেতরে থাকা অন্যান্য অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সময়মতো চিকিৎসা না করালে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
পেরিটোনাইটিসের লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে—
- পেটে একটানা তীব্র ব্যথা হতে থাকা
- বমি বমি ভাব অথবা বমি হওয়া
- জ্বর আসা
- হার্টবিট বেড়ে যাওয়া
- শ্বাসকষ্টের পাশাপাশি
- ঘনঘন বা দ্রুত শ্বাসপ্রশ্বাস
- পেট ফুলে যাওয়া
সাথে সাথে চিকিৎসা শুরু না করলে পেরিটোনাইটিস থেকে দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা দেখা দিতে পারে। এমনকি রোগীর মৃত্যু হতে পারে।
পেরিটোনাইটিস এর চিকিৎসার অংশ হিসেবে সাধারণত রোগীর শিরার মাধ্যমে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয় এবং অপারেশনের মাধ্যমে অ্যাপেন্ডিক্স কেটে ফেলে দেওয়া হয়।
ফোঁড়া বা অ্যাবসেস
কখনো কখনো অ্যাপেন্ডিক্স ফেটে গিয়ে এর চারপাশে পুঁজ জমে ফোঁড়ার মত হতে পারে৷ শরীর যখন অ্যাপেন্ডিসাইটিস ইনফেকশনের বিরুদ্ধে লড়াই করার চেষ্টা করে তখন এভাবে পুঁজ জমা হয়ে পেটের ভেতরে অ্যাবসেস বা ফোঁড়া সৃষ্টি হয়। এই ফোঁড়াতে ব্যথা হয়। কিছু বিরল ক্ষেত্রে অ্যাপেন্ডিসাইটিস এর অপারেশন-পরবর্তী জটিলতা হিসেবেও এই ফোঁড়া দেখা দিতে পারে।
এ ধরণের ফোঁড়া হলে কখনো কখনো অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা সম্পন্ন করা যায়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ফোঁড়া থেকে পুঁজ বের করে দিতে হয়। পুঁজ বের করতে আলট্রাসাউন্ড অথবা সিটি স্ক্যানের সাহায্য নেওয়া হতে পারে।
যদি অ্যাপেন্ডিসাইটিস এর অপারেশনের সময়ে ফোঁড়াটি ধরা পড়ে তাহলে জায়গাটি বিশেষ উপায়ে পরিষ্কার করে ফেলা হয়। এরপর রোগীকে এক কোর্স অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করতে দেওয়া হয়৷