ঘ্রাণশক্তি চলে যাওয়ার একটা প্রধান কারণ হচ্ছে ভাইরাস দ্বারা ইনফেকশন। করোনা একটা ভাইরাস। করোনার বিস্তর প্রাদুর্ভাবের কারণে ধরে নিতে হবে আপনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
শুধু ঘ্রাণশক্তি হারালে হাসপাতালে যাওয়া জরুরি নয়। কীভাবে বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে পারেন এবং কী কী সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে তা নিয়ে এই লেখাটি।
করোনা রোগের কারণে যারা ঘ্রাণশক্তি হারিয়েছেন তাদের জন্য কোন চিকিৎসা কার্যকরী, সে ব্যাপারে এখনো আমরা নিশ্চিত নই। তবে করোনা আসার আগেও বেশ কিছু ভাইরাল ইনফেকশনের কারণে মানুষ ঘ্রাণ শক্তি হারিয়েছেন। আমি যেই চিকিৎসার কথা বলছি সেটা সেই রোগীদের ঘ্রাণশক্তি ভালো করাতে কাজ করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা রোগীদের ঘ্রাণশক্তি বাড়াতে এই চিকিৎসা দেয়া যেতে পারে।
চিকিৎসাটা কী?
নিয়ম করে দিনে অন্তত দুই বার চার প্রকারের জিনিসের ঘ্রাণ শুকবেন। অর্থাৎ ঘ্রাণ নিয়ে নিয়ে নিজেকে প্রশিক্ষণ দিবেন।
কীসের ঘ্রাণ নিবেন?
লেবু, লবঙ্গ, গোলাপ আর ইউক্যালিপটাস।
লেবু আর লবঙ্গ রান্নাঘরেই পাবেন। গোলাপ আর ইউক্যালিপটাস হয়তো রান্নাঘরে পাবেন না। গোলাপের বদলে গোলাপ জল ব্যবহার করতে পারেন যা রান্নাঘরেই থাকবে। দেশে ইউক্যালিপটাস পাওয়া একটু কঠিন। তবে ইউক্যালিপ্টাসের তেল পাওয়া যায় বিভিন্ন দোকানে। সেটা ব্যবহার করতে পারেন। আপনি চাইলে সাথে লবঙ্গের তেল ও নিয়ে নিতে পারেন।
কীভাবে ঘ্রান নিবেন?
এই চারটা জিনিসের প্রতিটার ঘ্রাণ নিতে হবে বিশ সেকেন্ড করে। অন্তত দিনে দুইবার করে করবেন। কমপক্ষে তিন মাস ধরে চালিয়ে যাবেন।
মোট কথা, চার প্রকারের ঘ্রাণ শুকতে হবে। প্রতিটা ঘ্রান বিশ সেকেন্ড ধরে। দিনে কমপক্ষে ২ বার, অন্তত তিন মাস।
সাধারণত রোগীদের এসব ঘ্রাণযুক্ত শিশি দিয়ে দেয়া হয়। তারা সকাল বিকাল এগুলো থেকে ঘ্রাণ নেন। আপনি বাসায় যেন এই কাজটা শুরু করতে পারেন, আমি এমন উপায়ের কথা বলছি। তবে আপনি যদি চিকিৎসকের পরামর্শ পেয়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই তার কথা শুনবেন। তার পন্থা মত চিকিৎসা চালাবেন।
২ সপ্তাহের মধ্যে অনেক করোনা রোগী ঘ্রাণ শক্তি ফিরে পান কোন ধরনের চিকিৎসা ছাড়া। যদি দুই সপ্তাহের মধ্যে ফিরে না আসে, তখন এই উপায়গুলো অবলম্বন করবেন।
যারা নাকে ঘ্রাণ পাচ্ছেন না, তাদের জন্য আর দুইটা সাবধানতার কথা
- আপনারা ভুল করে পচা খাবার খেয়ে ফেলতে পারেন। খাবার নষ্ট হয়ে গেছে এটা আমরা সাধারণত বুঝি পচা গন্ধ দিয়ে। যাদের ঘ্রাণ শক্তি নাই, তারা এটা বুঝবেন পচা খাবার খেয়ে ফেলার পরে। ততক্ষণে কিন্তু জীবাণু জায়গা মত পৌঁছে গেল। আমরা যেই সময়টা পার করছি, সেটা অসুস্থ হওয়ার জন্য বড় দুঃসময়। তাই এই ব্যাপারে খুব সাবধান। খাবারের মেয়াদ উত্তীর্ণ হবার তারিখ দেওয়া থাকলে সেটা দেখে নিবেন। বাসি খাবার পারতপক্ষে না খাওয়াই ভালো, যদি নিশ্চিত না হতে পারেন খাবারটা ভালো।
- আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে যে ঘ্রাণশক্তি না থাকলে, কোনভাবে আগুন লাগলে বা কিছু পুড়তে থাকলে, আপনি ধোয়ার গন্ধ নাও পেতে পারেন। তাই এই ব্যাপারে সাবধান থাকবেন। বাসায় পারলে আগুনের ধোঁওয়া সনাক্ত করতে পারে এমন একটি যন্ত্র (smoke detector) লাগিয়ে নিবেন।
মনে রাখবেন যে আপনার যা স্বাভাবিক ঘ্রাণশক্তি, তা বদলে যাওয়া অথবা হারিয়ে ফেলা করোনার একটা লক্ষণ। আর কোন লক্ষণ না থাকলেও আপনাকে সকল সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। বাসায় থাকতে হবে। তবে উদ্বিগ্ন হবেন না। আপনি সুস্থ আছেন, শুধু ঘ্রাণশক্তি হারিয়ে ফেলেছেন – সেটা খুব দুশ্চিন্তার কারণ নয়।