গর্ভধারণের প্রথম সপ্তাহ

গর্ভধারণের চতুর্থ সপ্তাহ

এ সপ্তাহের হাইলাইটস

গর্ভধারণ করতে আরও কিছুদিন বাকি

এ সপ্তাহে গর্ভধারণের আগে আপনার শেষবারের মতো মাসিক হবে। গর্ভে আপনার ছোট্টমণির জীবন শুরু হতে আরও কিছুদিন বাকি।[১] তবে এরমধ্যেই আপনার শরীর সব ধরনের প্রস্তুতি শুরু করে দিচ্ছে। কাগজে-কলমে আপনি এ সপ্তাহ থেকেই গর্ভধারণের যাত্রা শুরু করছেন!

থ্যালাসেমিয়া স্ক্রিনিং পরীক্ষা করান

থ্যালাসেমিয়া হলে মারাত্মক রক্তশূন্যতা হতে পারে। রোগটা বাবা-মায়ের কাছ থেকে সন্তানের কাছে যেতে পারে। ফলে বংশপরম্পরায় আপনাদের ছোট্টমণি আক্রান্ত হতে পারে। একটা সহজ রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমেই আপনারা থ্যালাসেমিয়ার বাহক কি না সেটা জানতে পারবেন।

আয়রন-ফলিক এসিড ট্যাবলেট খান

শিশুর মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্র সুস্থভাবে বিকশিত হওয়ার জন্য প্রতিদিন আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়া প্রয়োজন।[২] দেরি না করে এ সপ্তাহ থেকেই আয়রন-ফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়া শুরু করে দিন।

১ সপ্তাহে বাচ্চার বৃদ্ধি

গর্ভে আপনার ছোট্টমণির জীবন শুরু হতে আরও কিছুদিন বাকি। তবে এরমধ্যেই আপনার শরীর সব ধরনের প্রস্তুতি শুরু করে দিচ্ছে।

আগামী ৩ সপ্তাহ ধরে আপনার শরীর গর্ভধারণের জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিবে। এসময়ে আপনার পেটের ভেতরে ডিম্বাণু বের হয়ে সঙ্গীর শুক্রাণুর সাথে মিলিত হবে। সেখান থেকে আপনাদের সোনামণির ছোট্ট ভ্রূণ তৈরি হবে। আর আপনার জরায়ু ছোট্টমণির বাসা বানানোর জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে ফেলবে।

অবশেষে শিশুর ভ্রূণ আপনার জরায়ুতে নিজের জন্য জায়গা করে নিবে। সেখানেই ছোট্টমণি ৯ মাস ধরে একটু একটু করে বড় হবে।

১ সপ্তাহে মায়ের শরীর

এ সপ্তাহে গর্ভধারণের আগে আপনার শেষবারের মতো মাসিক হবে। আপনি এখনো গর্ভধারণ করেননি, কয়েকটা সপ্তাহ বাকি আছে।[৩] তবে কাগজে-কলমে কিন্তু আপনি এ সপ্তাহ থেকেই গর্ভধারণের যাত্রা শুরু করছেন!

শুনতে আশ্চর্য লাগছে? ডাক্তারি হিসেবে গর্ভধারণের আগে আপনার সর্বশেষ মাসিকটা যেদিন শুরু হয়েছে, সেই দিনটাকেই আপনার সম্পূর্ণ গর্ভাবস্থার প্রথম দিন হিসেবে ধরা হয়। তার মানে ছোট্টমণির জন্মের আগে ৯ মাস বা ৪০ সপ্তাহ অপেক্ষা করার পালা এখন থেকেই শুরু হচ্ছে।

আপনাকে স্বাগতম!

গর্ভধারণের চূড়ান্ত প্রস্তুতি

আগামী ৩ সপ্তাহ আপনার শরীর গর্ভধারণের জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিবে। এসময়ে আপনার শরীরে ডিম্বাণু বের হয়ে সঙ্গীর শুক্রাণুর সাথে মিলে যাবে। তারা মিলেমিশে আপনার সোনামণির ছোট্ট ভ্রূণ তৈরি করবে। তারপর ভ্রূণটা আপনার জরায়ুতে নিজের জায়গা করে নিবে। সেখানেই ৯ মাস ধরে বড় হয়ে অবশেষে আপনার ছোট্টমণি পৃথিবীতে আসবে।

আয়রন-ফলিক এসিড ট্যাবলেট খান

শিশুর মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্র সুস্থভাবে বিকশিত হওয়ার জন্য প্রতিদিন আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়া প্রয়োজন।[৪] গর্ভধারণের আগে থেকেই নিয়মিত আয়রন-ফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়া উচিত। এ ব্যাপারে যদি আগে থেকে না জেনে থাকেন, তাহলে দেরি না করে এ সপ্তাহ থেকেই আয়রন-ফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়া শুরু করে দিন।

PMS-এর কারণে অস্বস্তি

এসময়ে আপনি কিছু অস্বস্তিকর লক্ষণের মুখোমুখি হতে পারেন। তাহলে কী গর্ভধারণের লক্ষণ দেখা দেওয়া শুরু হয়ে গেল? না, আসলে মাসিকের কারণেই আপনার এসব অস্বস্তিকর লক্ষণ হচ্ছে। আগে যখন আপনার মাসিক হয়েছে, তখনো হয়তো এমন লক্ষণ দেখা দিয়েছে।

এগুলোকে একত্রে PMS বলে, যার মধ্যে রয়েছে পেট ফাঁপা লাগা, পেট কামড়ানো, স্তনে ব্যথা বা চাপ দিলে ব্যথা লাগা, মুড সুইং, মেজাজ খিটখিটে লাগা, ত্বকে গোটা বা দাগ পড়া ও সহবাসের ইচ্ছা কমে যাওয়া।

থ্যালাসেমিয়া স্ক্রিনিং পরীক্ষা

আপনি হয়তো থ্যালাসেমিয়া রোগের নাম শুনেছেন। এই রোগে আক্রান্ত হলে মারাত্মক রক্তশূন্যতা হতে পারে। রোগটা বাবা-মায়ের কাছ থেকে সন্তানের কাছে যেতে পারে। বাবা-মা যদি আপাতদৃষ্টিতে সুস্থ হন, তাহলেও তারা নীরবে থ্যালাসেমিয়া বহন করতে পারেন। ফলে বংশপরম্পরায় তাদের সন্তান আক্রান্ত হতে পারে।

একটা সহজ রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমেই আপনারা থ্যালাসেমিয়ার বাহক কি না সেটা জানতে পারবেন। যেহেতু মা ও বাবা দুজনের কাছ থেকেই রোগটা আসে, তাই আপনার ও শিশুর বাবার—দুজনেরই থ্যালাসেমিয়া স্ক্রিনিং পরীক্ষা করানো প্রয়োজন।

পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে দ্রুত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করবেন। তিনি আপনাদের উপযুক্ত পরামর্শ দিতে পারবেন।

এ সপ্তাহে বাবার করণীয়

আপনি হয়তো জানেন না যে আপনি কিছুদিনের মধ্যে বাবা হতে চলেছেন। তাই গর্ভধারণের চেষ্টা করছেন এমন সপ্তাহগুলোতে যা করণীয়, সেই বিষয়গুলো আমরা এখানে তুলে ধরছি।

থ্যালাসেমিয়া স্ক্রিনিং পরীক্ষা করান

আপনি হয়তো থ্যালাসেমিয়া রোগের নাম শুনেছেন। এই রোগে আক্রান্ত হলে মারাত্মক রক্তশূন্যতা হতে পারে। রোগটা বাবা-মায়ের কাছ থেকে সন্তানের কাছে যেতে পারে। আপনারা আপাতদৃষ্টিতে সুস্থ হলেও নীরবে থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক হতে পারেন। ফলে বংশপরম্পরায় আপনাদের শিশু এই গুরুতর রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

যেহেতু মা ও বাবা দুজনের কাছ থেকেই রোগটা আসে, তাই শিশুর মায়ের পাশাপাশি আপনারও থ্যালাসেমিয়া স্ক্রিনিং পরীক্ষা করানো গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে আপনাদের পরিবারের কারও থ্যালাসেমিয়া বা রক্তশূন্যতার ইতিহাস থাকলে এটা বিশেষভাবে জরুরি। তাই আত্মীয়দের মধ্যে কারও থ্যালাসেমিয়া আছে কি না খোঁজ নিন।

একটা সহজ রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমেই আপনারা থ্যালাসেমিয়ার বাহক কি না সেটা জানতে পারবেন। পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে দ্রুত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করবেন। তিনি রিপোর্ট অনুযায়ী আপনাদের উপযুক্ত পরামর্শ ও চিকিৎসা দিতে পারবেন।

অ্যালোপ্যাথিক, হারবাল ও কবিরাজি ওষুধের কথা ডাক্তারকে জানান

আপনার সঙ্গী যদি নিয়মিত কোনো ওষুধ সেবন করেন, তাহলে চেকআপের সময়ে সেটা অবশ্যই ডাক্তারকে জানাবেন। নিয়মিত খাওয়ার ওষুধ, ভিটামিন, এমনকি হারবাল বা কবিরাজি ওষুধ খেলে সেটা ডাক্তারকে খোলাখুলিভাবে জানানো জরুরি। কেননা অনেক ওষুধই গর্ভাবস্থায় সেবনের জন্য নিরাপদ নয়।

এমন কিছু ওষুধ আছে, যেগুলো খাওয়া চলাকালে গর্ভধারণ করলে গর্ভের শিশুর মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার, এমনকি গর্ভপাত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এগুলো পুরোপুরি বাদ দিতে হতে পারে। কিছু ওষুধের বিকল্প ওষুধ সেবন করতে হতে পারে। আবার কিছু ওষুধের ডোজ বাড়াতে কিংবা কমাতে হতে পারে।

ডাক্তারকে জানালে তিনি গর্ভের শিশু ও শিশুর মায়ের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ অপশনটা জানাতে পারবেন। তবে একটা কথা মাথায় রাখবেন, ডাক্তারের সাথে কথা বলার আগে হুট করে ওষুধ খাওয়া বন্ধ করা যাবে না। এতে শিশুর মায়ের গুরুতর কোনো ক্ষতি হতে পারে।

তাই আপনার সঙ্গী যেকোনো ধরনের ওষুধ, এমনকি ভিটামিন ও হারবাল ওষুধ খেলে সেটা নিয়ে ডাক্তারের সাথে খোলাখুলি কথা বলে পরবর্তী করণীয় ঠিক করবেন।

ধূমপান ছেড়ে দিন

গর্ভবতী মা ধূমপানের আশেপাশে থাকলে গর্ভের শিশুর ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। শিশু প্রিম্যাচিউর হওয়া বা সময়ের আগে প্রসব হওয়া, ওজন কম হওয়া, জন্মগত ত্রুটি হওয়াসহ নানান জটিলতার সম্ভাবনা বাড়ে।[৫][৬][৭] তাই আপনি ধূমপান করলে সেটা ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করুন। বাসায় অন্য কেউ ধূমপান করলে, তার সাথে এই ব্যাপারে আলাপ করুন।