দেহের পানিশূন্যতায় খাবার স্যালাইন হতে পারে জীবন রক্ষাকারী। মূলত ডায়রিয়া থেকে সৃষ্ট পানিস্বল্পতার চিকিৎসায় খাবার স্যালাইন সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। তবে ডায়রিয়া ছাড়াও অন্যান্য কারণে শরীরে তৈরি হওয়া লবণ ও পানির ঘাটতি পূরণ করতে খাবার স্যালাইনের ব্যবহার বহুল প্রচলিত।
যে সব কারণে খাবার স্যালাইন পান করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়—
- ডায়রিয়া হলে
- বমি হলে
- ডায়াবেটিস চিকিৎসায়
- সূর্যের তাপে অনেকক্ষণ সময় কাটানো হলে
- ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রমের পর অতিরিক্ত ঘাময়ালে
- শরীরের তাপমাত্রা ৩৮°সেলসিয়াস বা ১০০.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট এর চেয়ে বেড়ে গেলে
- শরীর থেকে পানি বের করে দেয় এমন ওষুধ (যেমন, ডাইইউরেটিক্স) সেবন করলে
ঘরে প্যাকেটজাত খাবার স্যালাইন না থাকলে, খুব সহজেই ঘরে সবসময় থাকে এমন কিছু উপকরণ দিয়ে খাবার স্যালাইন বানিয়ে নেওয়া যায়। নিচে কীভাবে ঘরোয়া পদ্ধতিতে খুব দ্রুত খাবার স্যালাইন বানানো যায় তা তুলে ধরা হলো।
কীভাবে খাবার স্যালাইন বানাবেন?
ঘরে বসেই খাবার স্যালাইন খুব সহজ তিনটি ধাপে বানানো সম্ভব।
- একটি পরিষ্কার পাত্রে এক লিটার বিশুদ্ধ খাবার পানি নিন।
খাবার পানি অবশ্যই স্বাভাবিক তাপমাত্রার হতে হবে। পানি ফুটিয়ে বিশুদ্ধ করা হলে তা ঠান্ডা করে নিন।
- পাত্রের পানিতে আধা চা-চামচ পরিমাণ লবণ মিশান।
চামচ দিয়ে মিশ্রণটি ভালো করে নাড়ুন যাতে লবন ভালোভাবে পানির সাথে মিশে যায়।
- লবনের মিশ্রনে ৬ চা-চামচ চিনি মিশান।
চিনি নেওয়ার সময় চামচের উপর দিকটা সমান করে নিতে হবে। যাতে প্রতি চামচে পরিমাপ ঠিক থাকে।
ঘরে তৈরি স্যালাইন ৬ ঘণ্টার ভিতরে পান করতে হবে। এই সময়ের পরে স্যালাইন রয়ে গেলে তা ফেলে দিয়ে আবার বানাতে হবে।
দোকান থেকে প্যাকেটজাত খাবার স্যালাইন কিনে তৈরি করার সময় প্যাকেটের গায়ে লেখা নির্দেশনা অনুযায়ী তৈরি করতে হবে এবং বানানো স্যালাইন রয়ে গেলে ১২ ঘণ্টার পর সেটি ফেলে দিতে হবে।
খাবার স্যালাইনের অজানা তথ্য
বাংলাদেশী চিকিৎসক ও চিকিৎসা বিজ্ঞানী, ডা. রফিকুল ইসলাম ডায়রিয়া নিরাময়ের জন্য খাবার স্যালাইন (ওরস্যালাইন) আবিষ্কার করেন। তাঁর আবিষ্কৃত খাবার স্যালাইনকে “চিকিৎসা বিজ্ঞানে বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার” বলে উল্লেখ করেছিল ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল ‘দ্য ল্যান্সেট’।